স্টাফ রিপোর্টার: ছিদ্দিকুর রহমান (রিজন)।।ঢাকা ট্যু বরগুনা নৌরুটের এমভি অভিজান ১০ লঞ্চে আগুন লাগার পর বরগুনার বেতাগী এখন শোকপুরি । বেতাগী উপজেলার একজন নিহত , নয়জন নিখোঁজ ও ২০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে । তবে নিখোঁজ যাত্রীরা জীবিত আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি । এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের উপ সহকারি পরিচালক মো . ফিরোজ কুতুবী।একই সাথে অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন যাত্রী । তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । নিহত একজন হলেন উপজেলার কাজিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ হোসেন ( ২৮ ) । এছাড়া নিখোঁজ ও আহতরা হলেন কাউনিয়া এলাকার সিকদার বাড়ীর রিনা বেগম ( ৩৮ ) , লিমা ( ১৪ ) মোকামিয়া এলাকার আব্দুল হাকিম ( ৫৮ ) তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ( ১৩ ) , আরিফুর রহমান ( ৩৫ ) , কুলসুম ( ৪ ) , সেলিম ( ৪৮ ) ও সোবাহান খলিফা ( ৪০ ) জাহানার আক্তার স্বামী মোঃসেলিম আকন । এছাড়ও আহত যাত্রীরা হলেন , আবদুল হাই নেছারী , হালিমা বেগম , সফিউল্লাহ , কুশল কর্মকার , জাহানারা বেগম , ফরহাদ খলিফা , মুকুল খলিফা , রুবেল , শাহিন মতিয়র রহমান , শাবনূর , শাহেবআলী , সালাম , ফেরদৌস , ও বুলবুল । বিষয়টি বেতাগী থানা পুলিশ নিশ্চিত করেছেন । এছাড়াও অনেকের নাম নিশ্চতভাবে জানা যায়নি । ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান -১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী । শুক্রবার বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ ব্যক্তিদের দেখার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী ।
এদিকে বরগুনা জেলা প্রশাসনে পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে , নিহতদের মরদেহ দাফনে প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে । জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন , যেহেতু লঞ্চটি বরগুনায় আসছিল , নিহত ও আহতদের অধিকাংশ এ জেলার বাসিন্দা হবেন।নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর আহতদেরকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা আমরা জেলা প্রশাসন থেকে দেব । প্রসঙ্গত , বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে প্রায় চারশ যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে লঞ্চটি ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায় । চাঁদপুর ও বরিশাল টার্মিনাল লঞ্চটি থামে এবং যাত্রী উঠা – নামা করে । ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছলে রাত ৩ টার দিকে এতে আগুন ধরে যায় । পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয় । লঞ্চ থেকে প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে । খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নৌকা নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তারা।ফায়ার সার্ভিসের ১৫ টি ইউনিটের চেষ্টায় ভোর ৫ টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে । স্থানীয় বাসিন্দা , কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করেন । ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায় , রাত ৩ টা ২৮ মিনিটে তাদের কাছে অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে । তাদের কর্মীরা ৩ টা ৫০ মিনিটে সেখানে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন । ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আলম নবীন জানিয়েছেন , এ দুর্ঘটনায় এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে । ৭১ জনকে আহত ও দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।