আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ল্যান্ডার (ধীরগতির অবতরণ ক্ষমতাসম্পন্ন) রোবটযান ‘ইনসাইট’ মঙ্গলগ্রহে সফলভাবে অবতরণ করেছে। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ১টা ৫৩ মিনিটে মঙ্গলের বুকে অবতরণ করে যানটি।
অক্ষত অবস্থায় মঙ্গলের ভূমি স্পর্শ করে সেখান থেকে পাঠানো প্রথম ছবি পৃথিবীতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই করতালি আর উল্লাসে ফেটে পড়ে নাসার জেট প্রোপালশান ল্যাবরেটরি। কেননা যানের নকশা থেকে শুরু করে মঙ্গলে টাচডাউন পর্যন্ত দীর্ঘ সাত বছরের কষ্ট আপাতদৃষ্টিতে সফল।
এবার আরেকটি জটিল অংশ বাকি। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ইনসাইটের সোলার অ্যারেগুলো (বিস্তৃত সোলার প্যানেল) সৌরশক্তিতে চার্জ হওয়ার জন্য ঢাকনা খুলে বেরিয়ে আসার কথা। এ জটিল কাজটি ঠিকঠাক সম্পন্ন হলো কি-না? তা জানার জন্য দুপুর পর্যন্ত নাসার বিজ্ঞানীদের রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করতে হবে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মঙ্গলের ভূমিকম্পের তথ্য থেকে গ্রহটির অভ্যন্তরীণ কাঠামো সম্পর্কে ধারণা পেতেই নাসার এবারের মিশন। অবতরণের পর সেখানকার মাটিতে সিসমোমিটার (কম্পন মাপক যন্ত্র) স্থাপনের পর থেকেই তথ্য পাঠাতে শুরু করেছে ইনসাইট ল্যান্ডার।
সিসমোমিটারে যুক্তরাজ্যের তৈরি একটি সেন্সরও রয়েছে। এটিই বিজ্ঞানীদের মঙ্গলের ভূমিকম্প ‘মার্সকোয়াক’ সম্বন্ধে তথ্য দেবে।
মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে ১৬ ফুট গভীর পর্যন্ত খুঁড়তে সক্ষম ইনসাইট ল্যান্ডার। পৃথিবীর সঙ্গে তুলনার পর মিলবে মঙ্গলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে থাকা পাথরের স্তর সংক্রান্ত তথ্যও।
৯৯ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত মনুষ্যবিহীন ল্যান্ডার ইনসাইট নাসার ইতিহাসে মঙ্গলে অষ্টম সফল অবতরণের ঘটনা। মঙ্গলের পৃষ্ঠ থেকে পাঠানো তথ্য অনুসারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ল্যান্ডারটি পুরোপুরি ভালো অবস্থায়ই অবতরণ করেছে এবং ঠিকঠাক কাজ করছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থা কমপক্ষে ৪৩ বার মঙ্গলগ্রহে রোভার, অরবিটার ও প্রোব পাঠানোর চেষ্টা চালিয়েছে, যার মধ্যে ব্যর্থ হয়েছে অর্ধেকেরও বেশি।
শুধু নাসাই লালগ্রহ জয় করা একমাত্র মহাকাশ সংস্থা। ২০১২ সালে সেখানে কিউরিসিটি রোভার পৌছানোর মধ্য দিয়ে এ যাত্রার শুরু।
মঙ্গলগ্রহে যাত্রার এই মিশনকে নাসা বলছে ২০৩০’র দশকে মনুষ্যবাহী এক্সপ্লোরার যান পাঠানোর প্রস্তুতি।