মনির খাঁন স্টাফ রিপোর্টার।
কুমিল্লার মুরাদনগরে হালিমা আক্তার নামে এক উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঝাড়–দার নিয়োগেও ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঝাড়–দার পদে এক প্রত্যাশীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য এ অংকের টাকা দাবি করেন ওই ভূমি কর্মকর্তা। ঝাড়–দার নিয়োগেও উৎকুচ দাবির বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ সমালোচনা চলছে। অভিযুক্ত হালিমা আক্তার সম্প্রতি বদলী হয়ে একই উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত রয়েছে। এ ছাড়া এ কর্মকর্তা দীর্ঘ বছর যাবত নিজ উপজেলায় চাকুরী করে ভূমি সেক্টরে বেশ কিছু দালাল নিয়ন্ত্রন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন যাবত ঝাড়–দার পদটি শূন্য ছিল। গত বছরের জুন মাসে এ পদে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামের দেলোয়ার হোসেন খাঁনের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগমকে। নুরুন্নাহার যোগদানের ১মাস পর কর্মকর্তা হালিমা আক্তার এপদে স্থায়ীভাবে চাকুরীর জন্য ৫০হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। আর এ টাকা এসিল্যান্ডকে দিতে হবে তিনি জানান। তা না হলে নুরুন্নাহার বেগম ঝাড়–দারের চাকুরি করতে পারবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।
এরই মাঝে নূরুন্নাহারের স্বামী অসুস্থ হয়ে পরলে সে স্বামীকে ১৫দিন হাসপাতালে চিকিৎসা করায়। এ সময় তার মেয়ে খালেদা আক্তার ভূমি অফিসের ঝাড়–দারের কাজটি করেন। কিন্তু ভূমি কর্মকর্তা হালিমা ঝাড়–দারের কাছে দাবিকৃত উৎকুচ না পেয়ে খালেদা আক্তারকে অফিস থেকে বের করে দেন। নুরুন্নাহার বেগমরে স্থলে এসিল্যান্ড অন্যজনকে চাকুরি দিতে বলেছে বলে অজুহাত দেন। পরে একই গ্রামের আলি হোসেনের মেয়ে মর্জিনা আক্তারকে সেই চাকুরি দেয়া হয়।
ভূক্তভোগী নুরুন্নাহার বেগম বলেন, গত বছরের জুন-জুলাই এ ২মাস আমি বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঝাড়–দারের দায়িত্ব পালন করি, আমার নামে যথারীতি অফিস থেকে বেতন আসলেও আমাকে কোন টাকা পয়সা দেয়া হয়নি, আমি ভূমি কর্মকর্তা হালিমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে পারিনি বলে দুই মাস কাজ করিয়ে আমাকে বিদায় করে দিয়েছে। তিনি বলেন,নায়েব হালিমা জাড়–দারের নামে এক বছরের বেতন উত্তোলন করে টাকা আত্মসাত করেছে। আমি এর বিচার দাবি করছি। এদিকে ঘটনার বছর পেরিয়ে গেলেও সম্প্রতি ভূক্তভোগী মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এ চাকুরির আশায়। এ ঘটনার তদন্ত করে দায়ি ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করছে এলাকার লোকজন।
অভিযুক্ত উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হালিমা আক্তার উৎকুচ দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, কে বা কাহারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তা আমার জানা নেই। ঝাড়–দার নিয়োগের বিষয়টি আমি এসিল্যান্ড স্যারকে অবগত করেছি, স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি নুরুন্নাহার বেগমকে নিয়োগ দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে উৎকুচের কোন বিষয় জড়িত ছিল না।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন বলেন, আমি সম্প্রতি এ উপজেলায় যোগদান করেছি, আমি আসার আগেই এ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। ভূক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তারিখ ১৬-০৯-২১ ইং