ঢাকা ১০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফুটপাত উদ্ধার করতে হবে: মেয়র রেজাউল আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা” লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক দিঘলিয়ায় মে দিবস পালিত। মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের র‌্যালি ও সমাবেশ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড তীব্রতাপ প্রভায়ে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ বগুড়া শাজাহানপুরে অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও “দেশ টিভির সাংবাদিককে লিগ্যাল নোটিশ”

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

অনুপ কুমার রায় রাজশাহী

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ (১ আগস্ট)। ১৯২১ সালের আজকের এই দিনে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নূরপুর মালঞ্চি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাত্র পাঁচ মাস বয়সে তাঁর বাবা হায়াত উল্লাহ সরকারের মৃত্যুর পর তিনি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়া শেষে মা মইফুন নেসার সাথে নানার বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামে চলে যান । এ দিনটি উপলক্ষে আজ রোববার বিকালে বাউসা গ্রামে পলান সরকার পাঠাগারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে পাঠক সমাবেশ ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।

পলান সরকারের বাবা-মা তাঁর নাম রেখেছিলেন হারেজ উদ্দিন সরকার। তবে জন্মের পর থেকেই মা “পলান” নামে ডাকতেন। পরে পলান সরকার নামেই পরিচিতি পান। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে পলান সরকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি টানেন। কর্মজীবনের শুরুতে পলান সরকার নানা ময়েন উদ্দিন সরকারের জমিদারির খাজনা আদায় করতেন এবং জমিদারি ব্যবস্থা বিলুপ্ত হলে ১৯৬২ সালে বাউসা ইউনিয়নে কর আদায়কারীর চাকরি পান। একসময় তিনি যাত্রাদলে ভাঁড়ের চরিত্রে অভিনয় করতেন এবং যাত্রার পাণ্ডলিপি হাতে লিখে কপি করতেন। অন্যদিকে মঞ্চের পেছন থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপ বলে দিতেন। এভাবেই তাঁর বই পড়ার নেশা জাগ্রত হয়।

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের অশিক্ষার অন্ধকারের উজ্জ্বল প্রদীপ হয়ে উঠা বইপ্রেমী পলান সরকার নিজের টাকায় বই কিনে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। এ জন্য ২০১১ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মান হিসেবে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে সরকারিভাবে তাঁর বাড়ির আঙিনায় একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করে। এছাড়াও ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে’ উপলক্ষে সারা বিশ্বের ৪০টি বিভিন্ন ভাষার দৈনিকে তাঁর উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার জীবনের ছায়া অবলম্বনে বিটিভির জন্য গোলাম সারোয়ার দোদুল নির্মাণ করেন ঈদের নাটক ‘অবদান’। বিনাম‚ল্যে বই বিতরণ করে সকলের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির করার জন্য ইউনিলিভার বাংলাদেশ পলান সরকারকে ‘সাদা মনের মানুষ’ খেতাবে ভূষিত করে।

অবশেষে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের বাড়িতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ২০১৯ সালে ১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান আলোকিত মানুষ পলান সরকার।

Tag :

ফুটপাত উদ্ধার করতে হবে: মেয়র রেজাউল

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

আপডেট টাইম ০৩:৩০:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

অনুপ কুমার রায় রাজশাহী

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ (১ আগস্ট)। ১৯২১ সালের আজকের এই দিনে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নূরপুর মালঞ্চি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাত্র পাঁচ মাস বয়সে তাঁর বাবা হায়াত উল্লাহ সরকারের মৃত্যুর পর তিনি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়া শেষে মা মইফুন নেসার সাথে নানার বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামে চলে যান । এ দিনটি উপলক্ষে আজ রোববার বিকালে বাউসা গ্রামে পলান সরকার পাঠাগারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে পাঠক সমাবেশ ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।

পলান সরকারের বাবা-মা তাঁর নাম রেখেছিলেন হারেজ উদ্দিন সরকার। তবে জন্মের পর থেকেই মা “পলান” নামে ডাকতেন। পরে পলান সরকার নামেই পরিচিতি পান। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে পলান সরকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি টানেন। কর্মজীবনের শুরুতে পলান সরকার নানা ময়েন উদ্দিন সরকারের জমিদারির খাজনা আদায় করতেন এবং জমিদারি ব্যবস্থা বিলুপ্ত হলে ১৯৬২ সালে বাউসা ইউনিয়নে কর আদায়কারীর চাকরি পান। একসময় তিনি যাত্রাদলে ভাঁড়ের চরিত্রে অভিনয় করতেন এবং যাত্রার পাণ্ডলিপি হাতে লিখে কপি করতেন। অন্যদিকে মঞ্চের পেছন থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপ বলে দিতেন। এভাবেই তাঁর বই পড়ার নেশা জাগ্রত হয়।

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের অশিক্ষার অন্ধকারের উজ্জ্বল প্রদীপ হয়ে উঠা বইপ্রেমী পলান সরকার নিজের টাকায় বই কিনে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। এ জন্য ২০১১ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মান হিসেবে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে সরকারিভাবে তাঁর বাড়ির আঙিনায় একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করে। এছাড়াও ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে’ উপলক্ষে সারা বিশ্বের ৪০টি বিভিন্ন ভাষার দৈনিকে তাঁর উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার জীবনের ছায়া অবলম্বনে বিটিভির জন্য গোলাম সারোয়ার দোদুল নির্মাণ করেন ঈদের নাটক ‘অবদান’। বিনাম‚ল্যে বই বিতরণ করে সকলের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির করার জন্য ইউনিলিভার বাংলাদেশ পলান সরকারকে ‘সাদা মনের মানুষ’ খেতাবে ভূষিত করে।

অবশেষে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের বাড়িতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ২০১৯ সালে ১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান আলোকিত মানুষ পলান সরকার।