ঢাকা ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

কুলাউড়ার রাজাপুর সেতুতে পর্যটনের সম্ভাবনা

কুলাউড়ার রাজাপুর সেতুতে পর্যটনের সম্ভাবনা

 
 
 
 
 
উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ রুবেল বক্স (পাবেল)
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা থেকে ভারত সীমান্তবর্তী মনু নদীতে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয় নির্মানাধীন মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে সর্ববৃহত রাজাপুর সেতুর কাজ প্রায় ৯৪ শতাংশ শেষের পথে। কিন্তু ভারত থেকে বয়ে আসা মনু নদীর স্বচ্ছ পানি ও বিশাল উচু সেতুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য দূরদুরান্ত থেকে প্রতিদিন গাড়ী ও মোটর সাইকেলযোগে ভ্রমণ পিপাসুরা স্বপরিবারে দলে দলে ছুটে যাচ্ছেন সীমান্ত ঘেরা সেই স্বপ্নের সেতুটি দেখতে। পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে সেতুর দুই প্রান্তে নিপুনভাবে কারু কাজ করে বসানো জাফলং থেকে আনা বড় বড় পাথর গুলো দেখে। পর্যটকদের আনাগোনায় সেতুর পাশে অস্থায়ী দোকারপাট খুলে বসেছেন স্থানীয়রা। সেতু ও রাস্তার শতভাগ কাজ শেষ হলে মানুষের উপছে পড়া ভিড় বাড়বে প্রতিনিয়ত।
 
জানা যায়,এই সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে উপজেলার সাথে সীমান্তবর্তী তিন ইউনিয়নের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মহামিলন ঘটবে। এছাড়াও এই সেতু ব্যবহার করে ভারতে সাথে যোগাযোগ মাধ্যম চাতলাপুর স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন উপজেলার মানুষ সহজে যাতায়াত করতে পারবে।
 
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়রা ভ্রমন পিপাসুদের আনন্দ দিতে অনেকেই ছোট ছোট নৌকা রেখেছেন। সৌখিন দর্শনার্র্থীরা কেউ কেউ বিকেল বেলা নৌকা চড়ছেন। কেউ সেলফিতে ছবি তুলতে ব্যস্থ আবার কেউ বা গিটার দিয়ে গান গেয়ে বৈকালিক আড্ডায় সময় পার করছেন। সেতুর উপরে উঠলে একটু পূর্বদিকে থাকালেই চোখে পড়ে আকাশ ছুই ছুই বিশাল একটি পাহাড়। যার নাম কালা পাহাড়। যেটি সিলেটের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত। পর্যটকরা রাজাপুর সেতু দেখতে আসলে সেখান থেকে সহজেই কালা পাহাড় এ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ভ্রমন করতে পারবে। বৈশ্বিক মহামারীর কারনে অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্রেগুলো এখন বন্ধ থাকায় দর্শনার্থীরা একটু প্রাকৃতিক শান্তির ছোয়া পেতে জাফলং ও ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরের স্মেইলটুকু নিতে ছুটে যাচ্ছেন রাজুপুর সেতুর মনোরম দৃশ্য দেখতে। রাজাপুর সেতু নির্মিত হওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নতী হচ্ছে তেমনী পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হচ্ছে দিনদিন। সেতুর মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করছেন অধিকাংশ সচেতন মহল।
 
জানা যায়, ২০১৮ সালে জাতীয় অথনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর সড়কের ১৪ কিলোমিটারে পিসি সেতু ও ৭.৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পায়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যার পুরোটাই সরকার ব্যয় করবে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে রাজাপুর সেতু প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন তৎকালীন হুইপ বর্তমান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এম.পি এবং মৌলভীবাজার -২ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্বা মোঃ আব্দুল মতিন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ এর জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে। সেতুর কাজ প্রায় ৯০ ভাগ সমাপ্ত হলেও করোনা সংকটের কারনে ৭.৫ কি.মি সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ বিলম্ব হচ্ছে। সেতুটি চালু হলে শরীফপুর,হাজীপুর ইউনিয়নের লোকজন ও চাতলাপুর স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যায়াতকারী লোকজন এবং ব্যবসায়ীরা সহজে কম খরছে উপজেলা সদরে আসতে পারবে। বর্তমানে অতিরিক্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসতে হয় এসব লোকজনকে। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় এই এলাকার লক্ষাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগের অবসান হতে যাচ্ছে।
 
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (মৌলভীবাজার) এর নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হক জানান, মনু নদীর রাজাপুর সেতুর কাজ অল্প কিছুদিনের মধ্যে শেষ হবে। এতে এলাকার জনসাধারণের দুর্ভোগের অবসান হবে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৩২ মিটার (৭৬০ ফুট) এবং প্রস্থ প্রায় ৩৩.৭” ফুট। সেতুতে রাস্তা ২৪ ফুট, উভয় পাশে ৩ ফুট করে ৬ ফুট পায়ে চলার রাস্তা। এ সেতুতে ২৫ টি গার্ডার রয়েছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নকৃত এ সেতুতে ৭.৫ কি. মি নতুন সড়কসহ প্রকল্পে মোট নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে প্রায় শতকোটি টাকা। নতুন সংযোক্ত সাড়ে সাত কি.মি সড়কের কাজও দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হবে। তিনি আরো বলেন, নির্মাণাধীন রাজাপুর সেতুতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চলমান রাজাপুর সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে সীমান্তবর্তী হাজিপুর, শরিফপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি শিক্ষা, কৃষি শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

কুলাউড়ার রাজাপুর সেতুতে পর্যটনের সম্ভাবনা

আপডেট টাইম ০১:৩০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১
কুলাউড়ার রাজাপুর সেতুতে পর্যটনের সম্ভাবনা

 
 
 
 
 
উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ রুবেল বক্স (পাবেল)
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা থেকে ভারত সীমান্তবর্তী মনু নদীতে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয় নির্মানাধীন মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে সর্ববৃহত রাজাপুর সেতুর কাজ প্রায় ৯৪ শতাংশ শেষের পথে। কিন্তু ভারত থেকে বয়ে আসা মনু নদীর স্বচ্ছ পানি ও বিশাল উচু সেতুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য দূরদুরান্ত থেকে প্রতিদিন গাড়ী ও মোটর সাইকেলযোগে ভ্রমণ পিপাসুরা স্বপরিবারে দলে দলে ছুটে যাচ্ছেন সীমান্ত ঘেরা সেই স্বপ্নের সেতুটি দেখতে। পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে সেতুর দুই প্রান্তে নিপুনভাবে কারু কাজ করে বসানো জাফলং থেকে আনা বড় বড় পাথর গুলো দেখে। পর্যটকদের আনাগোনায় সেতুর পাশে অস্থায়ী দোকারপাট খুলে বসেছেন স্থানীয়রা। সেতু ও রাস্তার শতভাগ কাজ শেষ হলে মানুষের উপছে পড়া ভিড় বাড়বে প্রতিনিয়ত।
 
জানা যায়,এই সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে উপজেলার সাথে সীমান্তবর্তী তিন ইউনিয়নের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মহামিলন ঘটবে। এছাড়াও এই সেতু ব্যবহার করে ভারতে সাথে যোগাযোগ মাধ্যম চাতলাপুর স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন উপজেলার মানুষ সহজে যাতায়াত করতে পারবে।
 
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়রা ভ্রমন পিপাসুদের আনন্দ দিতে অনেকেই ছোট ছোট নৌকা রেখেছেন। সৌখিন দর্শনার্র্থীরা কেউ কেউ বিকেল বেলা নৌকা চড়ছেন। কেউ সেলফিতে ছবি তুলতে ব্যস্থ আবার কেউ বা গিটার দিয়ে গান গেয়ে বৈকালিক আড্ডায় সময় পার করছেন। সেতুর উপরে উঠলে একটু পূর্বদিকে থাকালেই চোখে পড়ে আকাশ ছুই ছুই বিশাল একটি পাহাড়। যার নাম কালা পাহাড়। যেটি সিলেটের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত। পর্যটকরা রাজাপুর সেতু দেখতে আসলে সেখান থেকে সহজেই কালা পাহাড় এ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ভ্রমন করতে পারবে। বৈশ্বিক মহামারীর কারনে অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্রেগুলো এখন বন্ধ থাকায় দর্শনার্থীরা একটু প্রাকৃতিক শান্তির ছোয়া পেতে জাফলং ও ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরের স্মেইলটুকু নিতে ছুটে যাচ্ছেন রাজুপুর সেতুর মনোরম দৃশ্য দেখতে। রাজাপুর সেতু নির্মিত হওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নতী হচ্ছে তেমনী পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হচ্ছে দিনদিন। সেতুর মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করছেন অধিকাংশ সচেতন মহল।
 
জানা যায়, ২০১৮ সালে জাতীয় অথনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর সড়কের ১৪ কিলোমিটারে পিসি সেতু ও ৭.৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পায়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যার পুরোটাই সরকার ব্যয় করবে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে রাজাপুর সেতু প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন তৎকালীন হুইপ বর্তমান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এম.পি এবং মৌলভীবাজার -২ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্বা মোঃ আব্দুল মতিন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ এর জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে। সেতুর কাজ প্রায় ৯০ ভাগ সমাপ্ত হলেও করোনা সংকটের কারনে ৭.৫ কি.মি সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ বিলম্ব হচ্ছে। সেতুটি চালু হলে শরীফপুর,হাজীপুর ইউনিয়নের লোকজন ও চাতলাপুর স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যায়াতকারী লোকজন এবং ব্যবসায়ীরা সহজে কম খরছে উপজেলা সদরে আসতে পারবে। বর্তমানে অতিরিক্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসতে হয় এসব লোকজনকে। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় এই এলাকার লক্ষাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগের অবসান হতে যাচ্ছে।
 
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (মৌলভীবাজার) এর নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হক জানান, মনু নদীর রাজাপুর সেতুর কাজ অল্প কিছুদিনের মধ্যে শেষ হবে। এতে এলাকার জনসাধারণের দুর্ভোগের অবসান হবে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৩২ মিটার (৭৬০ ফুট) এবং প্রস্থ প্রায় ৩৩.৭” ফুট। সেতুতে রাস্তা ২৪ ফুট, উভয় পাশে ৩ ফুট করে ৬ ফুট পায়ে চলার রাস্তা। এ সেতুতে ২৫ টি গার্ডার রয়েছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নকৃত এ সেতুতে ৭.৫ কি. মি নতুন সড়কসহ প্রকল্পে মোট নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে প্রায় শতকোটি টাকা। নতুন সংযোক্ত সাড়ে সাত কি.মি সড়কের কাজও দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হবে। তিনি আরো বলেন, নির্মাণাধীন রাজাপুর সেতুতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চলমান রাজাপুর সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে সীমান্তবর্তী হাজিপুর, শরিফপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি শিক্ষা, কৃষি শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে।