ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা” লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক দিঘলিয়ায় মে দিবস পালিত। মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের র‌্যালি ও সমাবেশ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড তীব্রতাপ প্রভায়ে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ বগুড়া শাজাহানপুরে অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও “দেশ টিভির সাংবাদিককে লিগ্যাল নোটিশ” বাকেরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ শিক্ষার্থীর পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন।

শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করলেই পুত্রবধুদের উপহার পৌছে দিচ্ছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ

শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করলেই উপহার পৌছে দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা। এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর মোশারফ হোসেন। তিনি নিজে গিয়ে উপহার পৌছে দিচ্ছেন। উপহারের মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ী, পোড়াবাড়ির চমচম ও ক্রেস্ট। সেই সাথে পরিবারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তার এমন উদ্যোগের কারণে চারদিক থেকে ফোন আসছে, শুভেচ্ছা, অভিনন্দন আর প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তাকে।

স্থানীয় সংবাদকর্মী নওশাদ রানা সানভী জানান, আমি নিউজ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে টাঙ্গাইল সদর থানায় যাই। ভিতরে প্রবেশ করেই একটি ফেস্টুন আমার নজরে আসে। সেটিতে লেখা ছিলো ‘বৃদ্ধাশ্রম নয়, পরিবারই হোক বাবা-মায়ের নিরাপদ আবাস’। পুত্রবধূ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তার শ্বশুর-শাশুড়ির খেদমত করে আল্লাহ তাকে আখিরাতে পুরস্কার প্রদান করবেন। সেখানে আরও লেখা ছিলো শুশ্বর শাশুড়িকে যে সেবা যত্ন করবে এবং একসাথে বসবাস করবে সেই ভাগ্যবতিকে পুরস্কৃত করা হবে এবং যোগাযোগের জন্য ফোন নাম্বার উলে­খ্য করা ছিলো।

উদ্যোগটি ভালো লাগায় আমি ফেস্টুনের ছবি তুলে ফেসবুক গ্রুপ টাঙ্গাইল জেলা সংবাদে পোস্ট করি। বিষয়টি মানুষ ইতিবাচক ভাবে গ্রহন করে এবং মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়

কলেজ পাড়ার শিউলি জানান, আমি টাঙ্গাইল জেলা সংবাদে একটি পোস্ট দেখতে পাই। সেটি দেখে আমার খুব ভালো লাগে। আমিও আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মায়ের মতো ভালোবাসি এবং তাদের সেবা যত্ন করি। তাদের সেবা করে আমি আত্মতৃপ্তি পাই। বিষয়টি অবগত করার জন্য আমি পোস্টে উলে­খিত নাম্বারে ফোন করি। পরবর্তীতে বিকেল বেলায় দেখি ওসি স্যার নিজে এসে আমাকে উপহারগুলো তুলে দেন।
মাহমুদা আক্তার জানান, আমি পুরস্কার পেয়েছি। পুরস্কার পেয়ে নিজের প্রতি আরও আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। আমি আমার শ্বশুর শাশুড়িকে এমনিতেই দেখাশুনা করি। ভবিষ্যতেও একই রকম তাদের সেবা করে যাবো।

শ্বশুর কাজী মুজিবুর রহমান জানান, আমার মেয়ে আমাকে যেমন ভালোবাসে, আমার ছেলের বউও ঠিক তেমনি ভালোবাসে। আমাদের দেখভাল ও সেবায় কোন ত্র“টি করে না। এমন ছেলে বউ পেয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন জানান, আমার ছেলে ও ছেলে বৌ আমাদের সাধ্য অনুযারি সেবা করে। একজন পুলিশ অফিসার আমার বৌমাকে পুরস্কৃত করেছে। পুরস্কার পেয়ে সে তো আত্মহারা।

মীর মোশারফ হোসেন জানান, আমি লক্ষ্য করেছি বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের অবহেলায় বাবা ও মা অযত্নে জীবন যাবন করেন। অনেকেই ঠিকমত খাবারও দেয় না। আর্থিক অবস্থা ভালো সন্তানেরা বাবা-মাকে ছেড়ে বউ বাচ্চা নিয়ে আলাদা বসবাস করে। অনেক সন্তানরাই ভুলে যায় এই বাবা-মা দিনরাত পরিশ্রম করে এই সন্তানের মুখে আহার তুলে দেন এবং উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। তারা এও ভুলে যায় তাদের একদিন বৃদ্ধ হতে হবে। অনেক সন্তানরা কাজের প্রয়োজনে বাহিরে ব্যস্ত থাকে। তাদের বাবা-মা পুত্রবধূর কাছে বেশি সময় কাটায়। আমার উদ্দেশ্য ওই পুত্রবধূদের উৎসাহিত করা।

তিনি আরও জানান, যারা বাবা মাকে ছেড়ে দুরে চলে যায় এবং অনেকের একাধিক সন্তান থাকার কারনে বাবা-মাকে ভরনপুসন নিয়ে ঠেলাঠেলি করে দুরে সরিয়ে দেয়। সেই সব সন্তান ও পুত্রবধূর প্রতি প্রতিবাদ স্বরূপ এই আয়োজন করেছি। যাতে কোন বাবা-মাকে অবহেলা ও বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়।

Tag :

আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়

শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করলেই পুত্রবধুদের উপহার পৌছে দিচ্ছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ

আপডেট টাইম ০৬:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ

শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করলেই উপহার পৌছে দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা। এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর মোশারফ হোসেন। তিনি নিজে গিয়ে উপহার পৌছে দিচ্ছেন। উপহারের মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ী, পোড়াবাড়ির চমচম ও ক্রেস্ট। সেই সাথে পরিবারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তার এমন উদ্যোগের কারণে চারদিক থেকে ফোন আসছে, শুভেচ্ছা, অভিনন্দন আর প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তাকে।

স্থানীয় সংবাদকর্মী নওশাদ রানা সানভী জানান, আমি নিউজ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে টাঙ্গাইল সদর থানায় যাই। ভিতরে প্রবেশ করেই একটি ফেস্টুন আমার নজরে আসে। সেটিতে লেখা ছিলো ‘বৃদ্ধাশ্রম নয়, পরিবারই হোক বাবা-মায়ের নিরাপদ আবাস’। পুত্রবধূ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তার শ্বশুর-শাশুড়ির খেদমত করে আল্লাহ তাকে আখিরাতে পুরস্কার প্রদান করবেন। সেখানে আরও লেখা ছিলো শুশ্বর শাশুড়িকে যে সেবা যত্ন করবে এবং একসাথে বসবাস করবে সেই ভাগ্যবতিকে পুরস্কৃত করা হবে এবং যোগাযোগের জন্য ফোন নাম্বার উলে­খ্য করা ছিলো।

উদ্যোগটি ভালো লাগায় আমি ফেস্টুনের ছবি তুলে ফেসবুক গ্রুপ টাঙ্গাইল জেলা সংবাদে পোস্ট করি। বিষয়টি মানুষ ইতিবাচক ভাবে গ্রহন করে এবং মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়

কলেজ পাড়ার শিউলি জানান, আমি টাঙ্গাইল জেলা সংবাদে একটি পোস্ট দেখতে পাই। সেটি দেখে আমার খুব ভালো লাগে। আমিও আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মায়ের মতো ভালোবাসি এবং তাদের সেবা যত্ন করি। তাদের সেবা করে আমি আত্মতৃপ্তি পাই। বিষয়টি অবগত করার জন্য আমি পোস্টে উলে­খিত নাম্বারে ফোন করি। পরবর্তীতে বিকেল বেলায় দেখি ওসি স্যার নিজে এসে আমাকে উপহারগুলো তুলে দেন।
মাহমুদা আক্তার জানান, আমি পুরস্কার পেয়েছি। পুরস্কার পেয়ে নিজের প্রতি আরও আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। আমি আমার শ্বশুর শাশুড়িকে এমনিতেই দেখাশুনা করি। ভবিষ্যতেও একই রকম তাদের সেবা করে যাবো।

শ্বশুর কাজী মুজিবুর রহমান জানান, আমার মেয়ে আমাকে যেমন ভালোবাসে, আমার ছেলের বউও ঠিক তেমনি ভালোবাসে। আমাদের দেখভাল ও সেবায় কোন ত্র“টি করে না। এমন ছেলে বউ পেয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন জানান, আমার ছেলে ও ছেলে বৌ আমাদের সাধ্য অনুযারি সেবা করে। একজন পুলিশ অফিসার আমার বৌমাকে পুরস্কৃত করেছে। পুরস্কার পেয়ে সে তো আত্মহারা।

মীর মোশারফ হোসেন জানান, আমি লক্ষ্য করেছি বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের অবহেলায় বাবা ও মা অযত্নে জীবন যাবন করেন। অনেকেই ঠিকমত খাবারও দেয় না। আর্থিক অবস্থা ভালো সন্তানেরা বাবা-মাকে ছেড়ে বউ বাচ্চা নিয়ে আলাদা বসবাস করে। অনেক সন্তানরাই ভুলে যায় এই বাবা-মা দিনরাত পরিশ্রম করে এই সন্তানের মুখে আহার তুলে দেন এবং উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। তারা এও ভুলে যায় তাদের একদিন বৃদ্ধ হতে হবে। অনেক সন্তানরা কাজের প্রয়োজনে বাহিরে ব্যস্ত থাকে। তাদের বাবা-মা পুত্রবধূর কাছে বেশি সময় কাটায়। আমার উদ্দেশ্য ওই পুত্রবধূদের উৎসাহিত করা।

তিনি আরও জানান, যারা বাবা মাকে ছেড়ে দুরে চলে যায় এবং অনেকের একাধিক সন্তান থাকার কারনে বাবা-মাকে ভরনপুসন নিয়ে ঠেলাঠেলি করে দুরে সরিয়ে দেয়। সেই সব সন্তান ও পুত্রবধূর প্রতি প্রতিবাদ স্বরূপ এই আয়োজন করেছি। যাতে কোন বাবা-মাকে অবহেলা ও বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়।