রাহাত মামুন
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা
স্মার্ট চট্টগ্রাম সিটি উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার- রেজাউল করিমের,গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা সমুন্নত রাখতে নির্বাচনে অংশ গ্রহন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চসিক মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা সমুন্নত রাখতেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বিগত নির্বাচনগুলোতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটচুরির যে মহোৎসব দেখেছে তাতে ভোটারেরা আতংকিত। তাই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় জনগণ ভোট কেন্দ্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে এই নির্বাচন কমিশন কবে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এবং ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারলে অবশ্যই ধানের শীষের বিজয় হবে। তিনি প্রশাসন ও ইসিকে চসিক নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
তিনি আজ শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) বাদে জুমা চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে হযরত আমানত শাহ (রাঃ) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণার উদ্ভোধনকালে একথা বলেন।
জেল রোড মাজার গেট থেকে প্রচারণা শুরু হয়ে বান্ডেল রোড, বংশাল রোড, ফিরিঙ্গিবাজার মোড়, কোতোয়ালী মোড়, লালদিঘিরপাড়, বক্সিরহাট হয়ে আন্দরকিল্লার মোড়ে পথসভায় মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় ধানের শীষের প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে বিশ্বের কাছে অন্যতম পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তুলবো। কর্ণফুলী নদীকে পরিবেশ বান্ধব করে চট্টগ্রামকে হেলদি সিটিতে রূপান্তরিত করবো। জনগণের পাশে থাকবো এবং জনগণের পরামর্শ নিয়ে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত নগর হিসেবে গড়ে তুলবো।
প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেই আমাদের কাঙ্খিত বিজয় আসবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হয়েছে, কোন ষড়যন্ত্র আমাদের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নাই। আমরা শপথ নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছি। যত বাধা বিপত্তি আসুক সকল বাধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে বিজয় অর্জন করবো। ডাঃ শাহাদাত হোসেনকে একজন সৎ, যোগ্য, রাজনীতিবিধ। সকল ভেদাভেদ ভুলে ভয় ভীতি উপেক্ষা করে ঐক্যবন্ধ হয়ে তার জন্য কাজ করতে হবে। কাঙ্খিত বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ডাঃ শাহাদাত হোসেন একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ। তাই সবাই নিজের আরামকে হারাম করে তাকে জয়ী করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। তিনি ৪১ ওয়ার্ড ও ১৪ টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে বিএনপির একক কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ কাজ করতে নেতাকর্মীদেও প্রতি আহবান জানান।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামবাসীর আশা ভরসার প্রতীক। চট্টগ্রামের মাটি বিএনপির ঐক্যবদ্ধ ঘাঁটি। চট্টগ্রামবাসী ভোটের দিনও কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ডা.শাহাদাত হোসেনকে জয়ী করবে ইনশাআল্লাহ।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য এরশাদ উল্লাহ বলেন, মেয়র ও কাউন্সিলরদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে এখন থেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডাঃ শাহাদাত হোসেনের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, এড. আব্দুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দীন, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দার মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য শামসুল আলম, হারুন জামান, মোঃ আলী, নিয়াজ মোঃ খান, ইকবাল চৌধুরী, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আনোয়ার হোসেন লিপু, মনজুর আলম মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন সহ মহানগর, ১৫ থানা ৪৩ ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
পিতা-মাতার কবর জেয়ারত করে রেজাউল করিমের নির্বাচনী প্রচারনা শুরু।
স্মার্ট চট্টগ্রাম সিটি উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করে প্রচারণার শুরুতে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদানে চট্টগ্রাম এখন উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থান করছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রাকে অধিকতর মসৃণ ও গতিশীল করতে আমি আমার দলীয় প্রতীক নৌকায় আপনাদের ভোট প্রত্যাশা করছি।
আজ শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) নগরের বহদ্দারহাটে বহদ্দার বাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় ও পারিবারিক কবরস্থানে পিতা-মাতা ও পূর্বপুরুষদের কবর জেয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে এসব কথা বলেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাহাড়, সমতল, সাগর, নদীর অপূর্ব সমাহারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অর্থনীতির অপার সম্ভাবনাকে জাতির জনক ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথাযথ মূল্যায়ন করেছেন। আর কেউ সেভাবে চট্টগ্রামকে মূল্যায়ন করতে পারেনি। চট্টগ্রামকে তারা অবহেলাও করেছে।-বাংলানিউজ
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের ভালোবাসা ও রায় নিয়ে প্রয়াত জননেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথমে মেয়র নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামে উন্নয়নের নব দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন। তৎকালীন বিএনপি সরকারের চরম অসহযোগিতা সত্বেও তিনি করপোরেশনে আয়ের খাত সৃষ্টি করে চট্টগ্রামের অভাবনীয় উন্নয়ন সূচিত করেছিলেন।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যার মনোনীত প্রার্থী। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখযোদ্ধা ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ট সহচর হিসেবে কথা দিলাম, মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমি জনগণের শক্তি ও মতামতকে পাথেয় করে আধুনিক সুযোগ সুবিধার শতভাগ প্রয়োগের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে একটি স্বচ্ছ ও স্মার্ট সিটিতে পরিণত করবো। যেখানে সহজেই নাগরিকরা সকল প্রকার আধুনিক সেবা লাভ করবে।
এ সময় রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, সদস্য সামশুল আলম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদসহ নেতাকর্মীরা।
রেজাউল করিম চৌধুরী শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড, ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ড ও ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে গণসংযোগ করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
করোনার কারণে স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জানুয়ারি। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময় মেনে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা।