এম এস আই জুয়েল পাঠান ঃ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সকল মানুষের পাশে আছেন মেয়র । করোনাভাইরাস মহামারী থেকে তাদের সুরক্ষিত রাখা আমার দায়িত্ব। আমি সেই কাজটি সুক্ষ্মভাবে করার চেষ্টা করছি। নগরবাসীকে করোনার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে প্রাণপন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। শুক্রবার এক ফেসবুক লাইভে সিটি মেয়র. জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।

এ সময় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশবাসীর মতো আমরাও আতঙ্কের মধ্যে আছি। সেই হিসেবে গাজীপুরেও আমরা অনেক অনেক জায়গায় করোনা পজিটিভ রোগী পাচ্ছি। সেগুলো আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আমাদের সিভিল সার্জনের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করছি। কোন এলাকায় কোন মহল্লায় কত সংখ্যক রোগী হতে পারে সেগুলো বিশ্লেষণ করছি।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে প্রায় ২২ লক্ষাধিক মানুষ গার্মেন্টস খাতে যুক্ত রয়েছেন। সে কারণে আমরা পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে চাই।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশেষ করে আমাদের মন্ত্রী-এমপি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক সমাজ, ইমাম এবং বিভিন্ন পর্যায়ের পেশাজীবী মানুষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিব। লকডাউনে যাওয়ার আগে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক তৈরিসহ আরও আনুসঙ্গিক কিছু কাজ রয়েছে। সেগুলো শেষ করে করবো। আমরা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যাইনি।
নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতার সাথে চলাচল করুন। বিশেষ কোন কারণ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা না থাকলে করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। সেটি হলে আমাদের অর্থনীতি এবং জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যাবে। গাজীপুরে লক্ষ লক্ষ লোক বসবাস করে। বেশি মানুষ অসুস্থ্য হলে আমাদের হাসপাতালগুলোর এত লোকের চিকিৎসা দিতে সক্ষমতা নেই।
সেজন্য সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা সবাই বাসাবাড়ি ও অফিসে সতর্কতার সঙ্গে অবস্থান করুন। এভাবে থাকতে পারলে আমরা নিরাপদ থাকবো। প্রশাসনিকভাবে এখনো আমরা লকডাউন শুরু করিনি। আমি আপনাদের মেয়র হিসেবে বলব, আমরা যখনই লকডাউনে যাব, তখন আমরা ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার সময় পূর্বে আপনাদেরকে আপনাদের সাথে আলোচনা করে জানিয়ে দিব। আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে কাজটি করব। আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না।

মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অবশ্যই আপনাদের মঙ্গলের জন্য আপনাদের ভালো নিরাপত্তার জন্য আপনাদের সাথে আলোচনা করেই আমরা লকডাউনে যাবো। আমাদের সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ৫৭ নং ওয়ার্ড পর্যন্ত যত নাগরিক রয়েছেন সবাই সিটি কর্পোরেশনের আমানত।
মেয়র আরও বলেন, আমি চাই আমানত হিসেবে আপনারা ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। আর লোকজনকে উপলক্ষ করে কোন দোকানে বা কোন বাজারে যাতে কোন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি না হয়, সেদিকে আপনারা সবাই সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। যদি আমরা একে অন্যের প্রতি সহানুভূতি দেখাই তাহলে আমরা নিরাপদে থাকবো। না হলে আমাদের সামনে সবার জন্য একটি কষ্টের দিন আসছে, সেটা থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই।

তিনি বলেন, আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবো এবং যেহেতু আমাদের গাজীপুর শিল্পাঞ্চল। সেহেতু আমরা সবাই যেন খেয়ে পরে বাঁচতে পারি এবং গার্মেন্ট শিল্প আমাদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক বাজার সেবা যাতে যাতে আমরা রক্ষা করতে পারি।

গাজীপুর সিটি মেয়র বলেন, সমালোচনা না করে আমরা যেন আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান করতে পারি। আমি চাই আমরা ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে সবাই যেন নিরাপদে থাকতে পারি। প্রতিটি মানুষ যেন নিরাপদে থাকতে পারে সেটি আল্লাহর কাছে চাই । সকলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবেন।