ঢাকা ০৬:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ৬৬ দিন পর উৎপাদন কার্যক্রম শুরু

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর দেশের বৃহত্তম নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আবারো শ্রমিকদের হাতের ছোয়ায় উতপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারনে শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের অনেকেই উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা করছেন। গত রবিবার (৩১ মে) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে বগি মেরামত ও নির্মান কাজ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমনের প্রভাবে সাধারণ ছুটির আওতায় গত ২৬ মার্চ থেকে দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে এই প্রতিষ্ঠানেও ছুটি ঘোষনা করা হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় বগি মেরামত ও যন্ত্রাংশ উৎপাদন কার্যক্রম। কিন্তু সাধারণ ছুটি আর বৃদ্ধি না করায় কারখানার ২৯ টি সপেই আবারো ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, মুল প্রবেশ গেটে সয়ংক্রিয় জীবাণু নাশক টানেলের ভিতর দিয়ে শ্রমিকরা সারিবদ্ধভাবে যাচ্ছেন নিজ নিজ ওয়ার্কসপে। সবার মুখেই মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লোভস। এছাড়া প্রতিটি সপের প্রবেশ গেটে রাখা হয়েছে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। ডিওএইচ সপে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ব্রড ও মিটার গেজ উভয় লাইনের যাত্রীবাহী একাধিক বগি মেরামত করা হচ্ছে। শ্রমিকরা সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে সকলেই যার যার কাজে ব্যস্ত। সেখানে উপস্থিত ওই সপের ইনচার্জ সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান জানান, লকডাউন পরবর্তী প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়েছে আমাদের কঠোর কর্মযজ্ঞ। সকলেই সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। তবে লোকবল সংকটের কারনে চলতি বছরের লক্ষমাত্রা পূরণ হবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। একই সপের খালাসী পদে কর্মরত আব্দুর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, কারখানা থেকে যে হারে লোক অবসরে যাচ্ছে সেই অনুপাতে দেওয়া হচ্ছে না নিয়োগ। তাই কয়েকজন শ্রমিকের কাজ এসে পড়েছে একজনের ঘাড়ে। তার মধ্যে আবার করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘিদিন বন্ধ থাকায় এখন কাজের চাপ কয়েকগুন বেড়ে গেছে। তবে আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিভাগের পরামর্শে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনেই মেরামত কাজ করছি। কারখানার কর্ম ব্যবস্থাপক (ডাব্লুএম) শেখ হাসানুজ্জামান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবেশ ও বহি:গমনের জন্য ৩টির মধ্যে ১টি মাত্র গেট ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে স্থাপন করা হয়েছে জীবাণুনাশক সয়ংক্রিয় টানেল। এছাড়া প্রত্যেককেই প্রতিদিন মাস্ক সরবারাহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বন্ধকালীন সময়ে স্বল্প পরিসরে খোলা রেখে পণ্য পরিবহন লাগেজ ভ্যান মেরামতের কাজও করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে ৩০ টি যাত্রীবাহী এবং ২০ টি মালবাহী বগি মেরামতের কাজ চলমান। বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (রেলওয়ে কারখানা) জয়দুল ইসলাম বলেন, কারখানায় কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরিধান, হ্যান্ড গ্লোভস ও স্যানিটাইজার ব্যবহার। এছাড়া সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগীয় হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, যারা কর্মএলাকার বাইরে ছিল অর্থাৎ ছুটি শেষে যারা নিজ গ্রামের বাড়ি কিংবা অন্য জায়গা থেকে এসে কর্মক্ষত্রে যোগদান করেছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে বিশেষ পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। তবে তাদের সংখ্যা খুব বেশী নয় শতকরা মাত্র ১০ ভাগ।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ৬৬ দিন পর উৎপাদন কার্যক্রম শুরু

আপডেট টাইম ০২:৪২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুন ২০২০

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর দেশের বৃহত্তম নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আবারো শ্রমিকদের হাতের ছোয়ায় উতপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারনে শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের অনেকেই উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা করছেন। গত রবিবার (৩১ মে) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে বগি মেরামত ও নির্মান কাজ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমনের প্রভাবে সাধারণ ছুটির আওতায় গত ২৬ মার্চ থেকে দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে এই প্রতিষ্ঠানেও ছুটি ঘোষনা করা হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় বগি মেরামত ও যন্ত্রাংশ উৎপাদন কার্যক্রম। কিন্তু সাধারণ ছুটি আর বৃদ্ধি না করায় কারখানার ২৯ টি সপেই আবারো ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, মুল প্রবেশ গেটে সয়ংক্রিয় জীবাণু নাশক টানেলের ভিতর দিয়ে শ্রমিকরা সারিবদ্ধভাবে যাচ্ছেন নিজ নিজ ওয়ার্কসপে। সবার মুখেই মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লোভস। এছাড়া প্রতিটি সপের প্রবেশ গেটে রাখা হয়েছে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। ডিওএইচ সপে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ব্রড ও মিটার গেজ উভয় লাইনের যাত্রীবাহী একাধিক বগি মেরামত করা হচ্ছে। শ্রমিকরা সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে সকলেই যার যার কাজে ব্যস্ত। সেখানে উপস্থিত ওই সপের ইনচার্জ সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান জানান, লকডাউন পরবর্তী প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়েছে আমাদের কঠোর কর্মযজ্ঞ। সকলেই সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। তবে লোকবল সংকটের কারনে চলতি বছরের লক্ষমাত্রা পূরণ হবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। একই সপের খালাসী পদে কর্মরত আব্দুর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, কারখানা থেকে যে হারে লোক অবসরে যাচ্ছে সেই অনুপাতে দেওয়া হচ্ছে না নিয়োগ। তাই কয়েকজন শ্রমিকের কাজ এসে পড়েছে একজনের ঘাড়ে। তার মধ্যে আবার করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘিদিন বন্ধ থাকায় এখন কাজের চাপ কয়েকগুন বেড়ে গেছে। তবে আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিভাগের পরামর্শে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনেই মেরামত কাজ করছি। কারখানার কর্ম ব্যবস্থাপক (ডাব্লুএম) শেখ হাসানুজ্জামান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবেশ ও বহি:গমনের জন্য ৩টির মধ্যে ১টি মাত্র গেট ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে স্থাপন করা হয়েছে জীবাণুনাশক সয়ংক্রিয় টানেল। এছাড়া প্রত্যেককেই প্রতিদিন মাস্ক সরবারাহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বন্ধকালীন সময়ে স্বল্প পরিসরে খোলা রেখে পণ্য পরিবহন লাগেজ ভ্যান মেরামতের কাজও করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে ৩০ টি যাত্রীবাহী এবং ২০ টি মালবাহী বগি মেরামতের কাজ চলমান। বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (রেলওয়ে কারখানা) জয়দুল ইসলাম বলেন, কারখানায় কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরিধান, হ্যান্ড গ্লোভস ও স্যানিটাইজার ব্যবহার। এছাড়া সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগীয় হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, যারা কর্মএলাকার বাইরে ছিল অর্থাৎ ছুটি শেষে যারা নিজ গ্রামের বাড়ি কিংবা অন্য জায়গা থেকে এসে কর্মক্ষত্রে যোগদান করেছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে বিশেষ পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। তবে তাদের সংখ্যা খুব বেশী নয় শতকরা মাত্র ১০ ভাগ।