ঢাকা ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত –রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। হবিগঞ্জে এসএসসিতে ফেল করায় ৩ জনের বিষপান কিশোরী নিহত বিসিক কলাবাগানে ভেকুর আঘাতে তিতাস গ্যাসের সংযোগ পাইপ ফেটে আগুনে ৯ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায় চট্টগ্রামে ন্যাশনাল ব্যাংকের মতবিনিময় সভায় চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান

করুণা নিয়ে তরুণরা যা যা করতে পারে

মাতৃভূমি ডেস্ক: ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৭৯টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে এবং মারা গেছে একজন। খুব দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করবে মরণঘাতী ভাইরাস।

দেশের এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে, এই জাতীয় সংকট মোকাবিলায় তাদের জোড়ালো ভূমিকা রাখতে হবে। করোনা প্রতিরোধে দেশের তরুণরা কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে, এ বিষয়ে কয়েকজন তরুণের মতামত জানাচ্ছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালিদ সাইফুল্লাহ্।

সোশ্যাল মিডিয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি

বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটির প্রচার সম্পাদক জয়নুল হক। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মরণঘাতী করোনাভাইরাস পৃথিবী গ্রাস করে ফেলেছে। বাংলাদেশেও এর প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। তরুণ সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশে  তরুণদের করোনাভাইরাস সচেতনতায় এগিয়ে আসা উচিৎ। তারাই পারে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে দেশকে করোনার মতো মরণঘাতী ভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করতে।

আমরা সবাই যদি নিজ নিজ এলাকার মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করি, তাহলেই এর ভয়াবহতা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে আমাদের এ মাতৃভূমি। যেহেতু এই সময় স্কুল, কলেজ ইউনিভার্সিটিসহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তাই এই সময়কে কাজে লাগিয়ে তরুণরা ফেসবুক বা অন্যান্য স্যোশ্যাল মিডিয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক তথ্য প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

গুজব ও আতঙ্ক নির্মূল করবে তরুণরা

তরল প্রযুক্তি ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও নির্মাতা আশিক উল বারাত। তিনি বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও খুব দ্রুত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। মূলত এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাসটির কোনো প্রতিষেধক আবিস্কার না হওয়ায় শুধু  সতর্কতা ও জনসচেতনতাই পারে এ মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করতে। আর প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও জনসচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটররা। যেহেতু সমাজের একটা বিশাল শ্রেণী কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় এবং তাদের নির্মিত কনটেন্টগুলো উপভোগ করে থাকে, সেহেতু কনটেন্টের মূল কি- পয়েন্টে কিংবা নির্মিত কনটেন্টের শুরুতেই জুড়ে দিতে পারেন সচেতনতার বার্তা।

এক্ষেত্রে ভাইরাস বিষয়ে যে বিষয়গুলোর প্রতি মানুষের ভুল ধারণা আছে, তা জানিয়ে দেওয়া কিংবা কীভাবে কোন অবস্থায় কতটুকু সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কোয়ারেন্টাইনে কাদের থাকতে হবে, এ রোগের লক্ষণগুলো কী, লক্ষণগুলো দেখা গেলে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে।

এ বিষয়গুলো জানিয়ে দেওয়া, আবার গুজবগুলোকে চিহ্নিত করা কনটেন্ট ক্রিয়েটরের দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে গুজব ও আতঙ্ক না ছড়িয়ে সঠিক তথ্য জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়াই হতে পারে সর্বোত্তম  ভূমিকা।

হোম ডেলিভারি দিতে পারেন উদ্যোক্তারা

ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল সজীব খান বলেন, করোনা যেহেতু একটি আন্তর্জাতিক ইমারজেন্সি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে, তাই এই মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় তরুণদের নিজ নিজ জায়গা থেকে যথাসম্ভব প্রতিরোধমূলক অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। তরুণদের দ্বারা পরিচালিত প্রত্যেকটি সংগঠন একেকটা পরিবারের মতো। পরিবারের একজনও যদি সাবধান ও সচেতন হয়, তাহলে তার পুরো পরিবারকে সতর্ক এবং সুরক্ষিত রাখা অনেকাংশেই সম্ভব।

এভাবে যদি তরুণদের সকল সংগঠন নিজেদের মধ্যে সঠিক তথ্য দিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারে, তাহলে হয়তো আমাদের অবস্থা অন্যান্য আক্রান্ত দেশগুলোর মতো নাজেহাল হয়ে পড়বে না। এর পাশাপাশি উদ্যোক্তারা নিজ নিজ ব্যবসার পেজ এবং ওয়েবসাইট থেকে সঠিক তথ্য দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে জনসাধারণকে সহযোগিতা করতে পারে।

যেসব উদ্যোক্তাদের ব্যবসা মেডিক্যাল পণ্য এবং গ্রোসারি পণ্য নিয়ে, তারা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে পণ্যের সঠিক দাম ও জনসাধারণের অবস্থা বিবেচনায় পণ্য ও সুবিধাগুলো প্রয়োজন সাপেক্ষে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। ফলে, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে সবার বাইরে বের হতে হবে না, যা রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার কমাতে সহায়ক হবে। এভাবে তরুণ সংগঠণগুলোর পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তারা এই ভাইরাস প্রতিরোধে বিশাল পরিসরে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।

মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধি

এক্সিলেন্স বাংলাদেশের ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট অফিসার আফসানা রাত্রি মিশু। তিনি বলেন, তরুণরা দেশকে করোনা মুক্ত করার ক্ষেত্রে উদ্দীপনামূলক ভূমিকা রাখতে পারে। একটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল যুবসমাজই পারে করোনামুক্ত দেশ গঠন করতে। তরুণরা তাদের সংগঠনগুলোর মাধ্যমে একত্রিত হয়ে পাড়া-মহল্লায় গণসচেতনতা করতে পারে। একই সাথে হ্যান্ড মাইকিংয়ের মাধ্যমে করোনায় করণীয় বিষয়গুলো পড়ে শুনাতে পারেন। এক্ষেত্রে জনগণ বেশি সচেতন হবে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি

ইয়ুথ ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউটের হেড অব কমিউনিকেশন অফিসার মাজহারুল ইসলাম বেগ।  তিনি বলেন, সমাজের যেই অংশটাকে মানুষ সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করে, সেটা হচ্ছে তরুণ সমাজ। যেমন যুগের সাথে তাল মেলাতে কিছুটা হিমশিম খাওয়া বয়োজ্যেষ্ঠরা  সমাজের নিত্যনতুন পরিবর্তনগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে নিতে তরুনদের অনুসরন করে। তাই এ সমস্যা মোকাবিলায় তরুণদের রাখতে হবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা। একইভাবে বর্তমানে বাংলাদেশও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তরুণদের নেতৃত্ব দিতে হবে সামনে থেকে।

তরুণ সমাজ চাইলেই এই বিষয়টায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। কেননা, তারাই বুঝিয়ে বলতে পারে অনুজদের, আবার তাদের পরিবর্তনেই দীর্ঘ দিনের অভ্যাস বদলাতে পারে অগ্রজরা। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় সঠিক তথ্য উপস্থাপন, গুজবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা, সচেতনতা বৃদ্ধি করার কাজ তারা করতে পারে ঘরে বসেই। এর পাশাপাশি দেশের এই ক্রান্তিকালে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সচেতনতা বৃদ্ধি, নিজে সচেতন থেকে মাঠ পর্যায়ের মানুষদের মাঝে সচেতনতার আলো ছড়িতে দেওয়া, সেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হতে পারে তারুণ্যের বিশেষ দ্বায়িত্ব। জয় হোক তারুণ্যের, প্রতিরোধ হোক করোনার।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু।

করুণা নিয়ে তরুণরা যা যা করতে পারে

আপডেট টাইম ০৩:৩৩:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ মার্চ ২০২০

মাতৃভূমি ডেস্ক: ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৭৯টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে এবং মারা গেছে একজন। খুব দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করবে মরণঘাতী ভাইরাস।

দেশের এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে, এই জাতীয় সংকট মোকাবিলায় তাদের জোড়ালো ভূমিকা রাখতে হবে। করোনা প্রতিরোধে দেশের তরুণরা কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে, এ বিষয়ে কয়েকজন তরুণের মতামত জানাচ্ছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালিদ সাইফুল্লাহ্।

সোশ্যাল মিডিয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি

বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটির প্রচার সম্পাদক জয়নুল হক। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মরণঘাতী করোনাভাইরাস পৃথিবী গ্রাস করে ফেলেছে। বাংলাদেশেও এর প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। তরুণ সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশে  তরুণদের করোনাভাইরাস সচেতনতায় এগিয়ে আসা উচিৎ। তারাই পারে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে দেশকে করোনার মতো মরণঘাতী ভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করতে।

আমরা সবাই যদি নিজ নিজ এলাকার মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করি, তাহলেই এর ভয়াবহতা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে আমাদের এ মাতৃভূমি। যেহেতু এই সময় স্কুল, কলেজ ইউনিভার্সিটিসহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তাই এই সময়কে কাজে লাগিয়ে তরুণরা ফেসবুক বা অন্যান্য স্যোশ্যাল মিডিয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক তথ্য প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

গুজব ও আতঙ্ক নির্মূল করবে তরুণরা

তরল প্রযুক্তি ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও নির্মাতা আশিক উল বারাত। তিনি বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও খুব দ্রুত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। মূলত এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাসটির কোনো প্রতিষেধক আবিস্কার না হওয়ায় শুধু  সতর্কতা ও জনসচেতনতাই পারে এ মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করতে। আর প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও জনসচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটররা। যেহেতু সমাজের একটা বিশাল শ্রেণী কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় এবং তাদের নির্মিত কনটেন্টগুলো উপভোগ করে থাকে, সেহেতু কনটেন্টের মূল কি- পয়েন্টে কিংবা নির্মিত কনটেন্টের শুরুতেই জুড়ে দিতে পারেন সচেতনতার বার্তা।

এক্ষেত্রে ভাইরাস বিষয়ে যে বিষয়গুলোর প্রতি মানুষের ভুল ধারণা আছে, তা জানিয়ে দেওয়া কিংবা কীভাবে কোন অবস্থায় কতটুকু সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কোয়ারেন্টাইনে কাদের থাকতে হবে, এ রোগের লক্ষণগুলো কী, লক্ষণগুলো দেখা গেলে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে।

এ বিষয়গুলো জানিয়ে দেওয়া, আবার গুজবগুলোকে চিহ্নিত করা কনটেন্ট ক্রিয়েটরের দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে গুজব ও আতঙ্ক না ছড়িয়ে সঠিক তথ্য জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়াই হতে পারে সর্বোত্তম  ভূমিকা।

হোম ডেলিভারি দিতে পারেন উদ্যোক্তারা

ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল সজীব খান বলেন, করোনা যেহেতু একটি আন্তর্জাতিক ইমারজেন্সি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে, তাই এই মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় তরুণদের নিজ নিজ জায়গা থেকে যথাসম্ভব প্রতিরোধমূলক অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। তরুণদের দ্বারা পরিচালিত প্রত্যেকটি সংগঠন একেকটা পরিবারের মতো। পরিবারের একজনও যদি সাবধান ও সচেতন হয়, তাহলে তার পুরো পরিবারকে সতর্ক এবং সুরক্ষিত রাখা অনেকাংশেই সম্ভব।

এভাবে যদি তরুণদের সকল সংগঠন নিজেদের মধ্যে সঠিক তথ্য দিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারে, তাহলে হয়তো আমাদের অবস্থা অন্যান্য আক্রান্ত দেশগুলোর মতো নাজেহাল হয়ে পড়বে না। এর পাশাপাশি উদ্যোক্তারা নিজ নিজ ব্যবসার পেজ এবং ওয়েবসাইট থেকে সঠিক তথ্য দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে জনসাধারণকে সহযোগিতা করতে পারে।

যেসব উদ্যোক্তাদের ব্যবসা মেডিক্যাল পণ্য এবং গ্রোসারি পণ্য নিয়ে, তারা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে পণ্যের সঠিক দাম ও জনসাধারণের অবস্থা বিবেচনায় পণ্য ও সুবিধাগুলো প্রয়োজন সাপেক্ষে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। ফলে, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে সবার বাইরে বের হতে হবে না, যা রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার কমাতে সহায়ক হবে। এভাবে তরুণ সংগঠণগুলোর পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তারা এই ভাইরাস প্রতিরোধে বিশাল পরিসরে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।

মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধি

এক্সিলেন্স বাংলাদেশের ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট অফিসার আফসানা রাত্রি মিশু। তিনি বলেন, তরুণরা দেশকে করোনা মুক্ত করার ক্ষেত্রে উদ্দীপনামূলক ভূমিকা রাখতে পারে। একটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল যুবসমাজই পারে করোনামুক্ত দেশ গঠন করতে। তরুণরা তাদের সংগঠনগুলোর মাধ্যমে একত্রিত হয়ে পাড়া-মহল্লায় গণসচেতনতা করতে পারে। একই সাথে হ্যান্ড মাইকিংয়ের মাধ্যমে করোনায় করণীয় বিষয়গুলো পড়ে শুনাতে পারেন। এক্ষেত্রে জনগণ বেশি সচেতন হবে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি

ইয়ুথ ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউটের হেড অব কমিউনিকেশন অফিসার মাজহারুল ইসলাম বেগ।  তিনি বলেন, সমাজের যেই অংশটাকে মানুষ সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করে, সেটা হচ্ছে তরুণ সমাজ। যেমন যুগের সাথে তাল মেলাতে কিছুটা হিমশিম খাওয়া বয়োজ্যেষ্ঠরা  সমাজের নিত্যনতুন পরিবর্তনগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে নিতে তরুনদের অনুসরন করে। তাই এ সমস্যা মোকাবিলায় তরুণদের রাখতে হবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা। একইভাবে বর্তমানে বাংলাদেশও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তরুণদের নেতৃত্ব দিতে হবে সামনে থেকে।

তরুণ সমাজ চাইলেই এই বিষয়টায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। কেননা, তারাই বুঝিয়ে বলতে পারে অনুজদের, আবার তাদের পরিবর্তনেই দীর্ঘ দিনের অভ্যাস বদলাতে পারে অগ্রজরা। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় সঠিক তথ্য উপস্থাপন, গুজবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা, সচেতনতা বৃদ্ধি করার কাজ তারা করতে পারে ঘরে বসেই। এর পাশাপাশি দেশের এই ক্রান্তিকালে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সচেতনতা বৃদ্ধি, নিজে সচেতন থেকে মাঠ পর্যায়ের মানুষদের মাঝে সচেতনতার আলো ছড়িতে দেওয়া, সেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হতে পারে তারুণ্যের বিশেষ দ্বায়িত্ব। জয় হোক তারুণ্যের, প্রতিরোধ হোক করোনার।