ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দেশ জুরে শুরু হয়েছে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। মুরাদনগর উপজেলা মোট-১৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। টাঙ্গাইলে এইচআইভি ও এইডস রোগের সচেতনতা সৃষ্টিতে কর্মশালা অনুষ্ঠিত লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ বগুড়া শিবগঞ্জে নাতির রাম দা’র কোপে নানী খুন ফুটপাত উদ্ধার করতে হবে: মেয়র রেজাউল আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা” লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক দিঘলিয়ায় মে দিবস পালিত।

মতলব উত্তরে প্রধান শিক্ষক না হয়েও সমপরিমাণ গ্রেডে দুই বছর বেতন উত্তোলন!

স্টাফ রিপোটার মতলব উত্তর থেকেঃ
চাঁদপুরের মতলব উত্তরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক গেজেটে উল্লেখিত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সমপরিমান গ্রেডে দুই বছর ধরে বেতন উত্তোলন করেছেন। শুধু তাই নয়, মোসাঃ কামরুনাহার সহকারি শিক্ষক হয়েও প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন করছেন বিগত বছর যাবৎ। এ ঘটনাটি এলাকায় জানা জানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, উপজেলার মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গত ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারী জাতীয়করণ হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত একটি অফিস আদেশে মজলিশপুরসহ মতলব উত্তরের কয়েকটি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। উল্লেখিত অফিসে আদেশে মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ৪ জন শিক্ষক সেই সময় অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান। এরমধ্যে মোসাঃ কামরুন্নাহারকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষক কামরুন্নাহার শিক্ষা অফিসে ভুল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে গেজেটে নাম প্রকাশ করান। সেই সময় প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে যে’কটি যোগ্যতা প্রয়োজন ছিল তার মধ্যে একটি হচ্ছে চাকুরীর বয়স কমপক্ষে ৭ বছর হতে হবে। অথচ চাকুরীতে যোগদান ২০০৬ সালের ১৫ জুন অনুযায়ী জাতীয়করণের তারিখ পর্যন্ত তার চাকুরীর বয়স হয় ৬ বছর ৬ মাস ১৭ দিন। কামরুন্নাহার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে এ বিষয়টি তিনি গোপন করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অফিস আদেশে তার নাম প্রকাশ হওয়ার পর তিনি প্রধান শিক্ষকের গ্রেডে ২০১৭-১৮ সাল অর্থাৎ ২৪ মাস বেতন ভাত উত্তোলন করেছেন। ২০১৯ সালের প্রথম দিক দিয়ে তার ফাইল শিক্ষা অফিসে যাচাই বাছাই করা হলে তার তথ্য ফাঁস হয়ে যায় এবং তার বেতন স্কেল সহকারি শিক্ষকের সমপরিমাণ করে দেয় শিক্ষা অফিস। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি এখনো। এদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয়করণের সময় কিছু শিক্ষক এমন ভুল তথ্য দিয়েছেন। যার কারণে এখন তারাই ভোক্তভূগীর শিকার হচ্ছেন। তবে এসব বিষয়গুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে যারা অযোগ্য ছিলেন তাদেরকে সহকারি শিক্ষকের স্কেলে বেতন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। তাদের প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হবে। তবে প্রধান শিক্ষকের গ্রেডে শিক্ষক মোসাঃ কামরুন্নাহার ২৪ মাস বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক কামরুন্নাহার বলেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে যা যা যোগ্যতা লাগবে, আমার ওইসব যোগ্যতা আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অল্প কয়েক বছর প্রধান শিক্ষকের গ্রেডে বেতন উত্তোলন করেছি। গত কিছুদিন যাবৎ পাচ্ছি না। জানিনা কেন এমনটা হল। তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন ভূঞা বলেন, আমার জানামতে এ উপজেলায় দুইজন শিক্ষক জাতীয়করণের সময় ভুল তথ্য দিয়েছেন। পরবর্তীতে তারা প্রধান শিক্ষক পদে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। একজন শিবপুর স্কুলের নার্গিস আক্তার অপরজন মজলিশপুর স্কুলের কামরুন্নাহার। তারা প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেলেও বর্তমানে ওই দুইজন সহকারি শিক্ষকের স্কেলে বেতন পাচ্ছেন। তবে কামরুন্নাহার প্রধান শিক্ষকের স্কেলে বেতন তুলছেন জানতে পেরে আমরা তা বন্ধ করে দিয়েছি। পদের বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তিনি সহকারি শিক্ষকের স্কেলে বেতন পাবেন। যদি তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে অযোগ্য বিবেচিত হন তাহলে তার পূর্বের বেতনের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে আর যোগ্য বিবেচিত হলে প্রধান শিক্ষকের স্কেলে বেতন পাবেন। মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান নিয়োগ হলে কামরুন্নাহারকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশ জুরে শুরু হয়েছে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। মুরাদনগর উপজেলা মোট-১৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন।

মতলব উত্তরে প্রধান শিক্ষক না হয়েও সমপরিমাণ গ্রেডে দুই বছর বেতন উত্তোলন!

আপডেট টাইম ০২:৩৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ মার্চ ২০২০

স্টাফ রিপোটার মতলব উত্তর থেকেঃ
চাঁদপুরের মতলব উত্তরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক গেজেটে উল্লেখিত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সমপরিমান গ্রেডে দুই বছর ধরে বেতন উত্তোলন করেছেন। শুধু তাই নয়, মোসাঃ কামরুনাহার সহকারি শিক্ষক হয়েও প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন করছেন বিগত বছর যাবৎ। এ ঘটনাটি এলাকায় জানা জানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, উপজেলার মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গত ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারী জাতীয়করণ হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত একটি অফিস আদেশে মজলিশপুরসহ মতলব উত্তরের কয়েকটি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। উল্লেখিত অফিসে আদেশে মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ৪ জন শিক্ষক সেই সময় অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান। এরমধ্যে মোসাঃ কামরুন্নাহারকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষক কামরুন্নাহার শিক্ষা অফিসে ভুল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে গেজেটে নাম প্রকাশ করান। সেই সময় প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে যে’কটি যোগ্যতা প্রয়োজন ছিল তার মধ্যে একটি হচ্ছে চাকুরীর বয়স কমপক্ষে ৭ বছর হতে হবে। অথচ চাকুরীতে যোগদান ২০০৬ সালের ১৫ জুন অনুযায়ী জাতীয়করণের তারিখ পর্যন্ত তার চাকুরীর বয়স হয় ৬ বছর ৬ মাস ১৭ দিন। কামরুন্নাহার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে এ বিষয়টি তিনি গোপন করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অফিস আদেশে তার নাম প্রকাশ হওয়ার পর তিনি প্রধান শিক্ষকের গ্রেডে ২০১৭-১৮ সাল অর্থাৎ ২৪ মাস বেতন ভাত উত্তোলন করেছেন। ২০১৯ সালের প্রথম দিক দিয়ে তার ফাইল শিক্ষা অফিসে যাচাই বাছাই করা হলে তার তথ্য ফাঁস হয়ে যায় এবং তার বেতন স্কেল সহকারি শিক্ষকের সমপরিমাণ করে দেয় শিক্ষা অফিস। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি এখনো। এদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয়করণের সময় কিছু শিক্ষক এমন ভুল তথ্য দিয়েছেন। যার কারণে এখন তারাই ভোক্তভূগীর শিকার হচ্ছেন। তবে এসব বিষয়গুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে যারা অযোগ্য ছিলেন তাদেরকে সহকারি শিক্ষকের স্কেলে বেতন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। তাদের প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হবে। তবে প্রধান শিক্ষকের গ্রেডে শিক্ষক মোসাঃ কামরুন্নাহার ২৪ মাস বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক কামরুন্নাহার বলেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে যা যা যোগ্যতা লাগবে, আমার ওইসব যোগ্যতা আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অল্প কয়েক বছর প্রধান শিক্ষকের গ্রেডে বেতন উত্তোলন করেছি। গত কিছুদিন যাবৎ পাচ্ছি না। জানিনা কেন এমনটা হল। তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন ভূঞা বলেন, আমার জানামতে এ উপজেলায় দুইজন শিক্ষক জাতীয়করণের সময় ভুল তথ্য দিয়েছেন। পরবর্তীতে তারা প্রধান শিক্ষক পদে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। একজন শিবপুর স্কুলের নার্গিস আক্তার অপরজন মজলিশপুর স্কুলের কামরুন্নাহার। তারা প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেলেও বর্তমানে ওই দুইজন সহকারি শিক্ষকের স্কেলে বেতন পাচ্ছেন। তবে কামরুন্নাহার প্রধান শিক্ষকের স্কেলে বেতন তুলছেন জানতে পেরে আমরা তা বন্ধ করে দিয়েছি। পদের বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তিনি সহকারি শিক্ষকের স্কেলে বেতন পাবেন। যদি তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে অযোগ্য বিবেচিত হন তাহলে তার পূর্বের বেতনের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে আর যোগ্য বিবেচিত হলে প্রধান শিক্ষকের স্কেলে বেতন পাবেন। মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান নিয়োগ হলে কামরুন্নাহারকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।