মোহাম্মদ রফিক, কুুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার ভাতার তালিকায় নাম যাচায়–বাছাইয়ে গিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী আক্কাস শেখ (৭০) নামের একজনের লাশ হয়ে বাড়ি ফিরার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি সোমবার আনুমানিক সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার যদুবয়রা হাই স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে ঘটেছে। নিহত আক্কাস যদুবয়রা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বরইচারা গ্রামের বাসিন্দা।
নিহতের পরিবার ও উপস্থিত জনতা সুত্রে জানা যায়, আক্কাস শেখ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এক হাতেই যাবতীয় প্রয়োজন মেটান। বয়সের ভারে পরিবারে বোঝা হয়ে আছেন তিনি। তাই শেষ বয়সে একটু স্বচ্ছলতার জন্য একটি প্রতিবন্ধী ভাতাকার্ড করার জন্য খুব সকাল থেকেই শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সুত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে কুমারখালী উপজেলায় পর্যায়ক্রমে সকল ইউনিয়নে উন্মুক্তভাবে বয়স্কভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তভাতা, দুঃস্থ মহিলা ও অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী বাছাই -২০২০ এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার ছিল ৮নং যদুবয়রা ইউনিয়নের ভাতাভোগী বাছাইয়ের দিন। এবছর ইউনিয়নে বয়স্কভাতা ৬৯, বিধবাভাতা ৬৪ এবং প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা নির্ধারন করা হয়েছে ২৩০ টি।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সকাল ১০ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভাতাভোগী বাছাইয়ে কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুষ্ঠানে যোগদান করেন সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটের দিকে এবং ভাতাভোগী খুব সকাল থেকেই যদুবয়রা স্কুল মাঠে খোলা আকাশের নিচে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে থাকে।উক্ত কর্মসূচিতে ভাতাভোগীরা খুব সকাল থেকে প্রায় বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে।ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল আলম জানান,খুব সুন্দর পরিবেশে ভাতা বাছাইয়ে কার্যক্রম সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে অপ্রত্যাশিত ভাবে আক্কাস শেখ নামের একজন প্রতিবন্ধীর মৃত্যু হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান জানান, সকাল ১০ টায় আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও নদী পার হয়ে একটু ঘুরে যেতে আমি সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটের দিকে পৌছায়ে শুনি একজন মারা গেছে। স্ট্রোক বা হাট এ্যাটাক হয়ে মারা যেতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। তিনি আরো জানান, অসুস্থদের আমরা আগে বাছাই করি এবং যেন তারা একটু ছাঁয়া জায়গার দাঁড়াতে পারে সেজন্য ভেন্যু হিসেবে আমরা স্কুল গুলো বেঁছে নিই।