ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা” লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক দিঘলিয়ায় মে দিবস পালিত। মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের র‌্যালি ও সমাবেশ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড তীব্রতাপ প্রভায়ে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ বগুড়া শাজাহানপুরে অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও “দেশ টিভির সাংবাদিককে লিগ্যাল নোটিশ” বাকেরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ শিক্ষার্থীর পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন।

গেইলের সামনে ‘আফগান গেইল’, হাঁকালেন এক ওভারে ছয় ছক্কা

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক :   প্রতিপক্ষ দলের হয়ে খেলছেন ক্রিস গেইল। হজরতুল্লাহ জাজাইয়ের মন-মননজুড়েই শুধু সেই গেইলেরই বিচরণ। ছোটবেলা থেকেই গেইল তার আদর্শ। স্বপ্ন দেখতেন একদিন গেইলের মতই মারকাটারি ক্রিকেট খেলবেন। নিজেকে প্রমাণ করবেন, তিনিও টি-টোয়েন্টিতে একজন অপরিহার্য খেলোয়াড়।

কিন্তু কি অদ্ভূত ভাগ্য তার! স্বপ্নটা এভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা হয়তো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি ২০ বছর বয়সী আফগান ক্রিকেটার হযরতুল্লাহ জাজাই। নিজের স্বপ্নের নায়ক প্রতিপক্ষ দলে খেলছেন। তার সামনে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করছেন। সেই নায়ক গেইলের চোখের সামনেই এক ওভারে পরপর ছয় বলে টানা ছয়টি ছক্কা মেরে দিলেন হযরতুল্লাহ জাজাই!

আফগান প্রিমিয়ার লিগে রোববার রাতে স্বপ্নের মতই এ কাণ্ড ঘটিয়ে দিয়েছেন হযরতুল্লাহ জাজাই। তিনি হচ্ছেন কাবুল জাওনানের ব্যাটসম্যান। ক্রিস গেইল খেলছিলেন বলখ লিজেন্ডসের হয়ে। আরব আমিরাতের শারজায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে হযরতুল্লাহ জাজাই এক ওভারে ৬ ছক্কা মেরেও কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি।

কারণ, ক্রিস গেইলের দল প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ২৪৪ রান। জবাবে হযরতুল্লাহ জাজাইয়ের দল কাবুল জাওনান ৭ উইকেট হারিয়ে যেতে পেরেছিল ২২৩ রান পর্যন্ত। ফলে ২১ রানে হারতে হয় জাজাইয়ের দলকে।

দলের লক্ষ্য ২৪৫ নাকি সামনে স্বপ্নের নায়ক ক্রিস গেইল দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেটা কোনোই বিবেচ্য বিষয় ছিল না যেন জাজাইয়ের সামনে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের ঘটনা ছিল ওটা। দুর্ভাগা বোলারের নাম আবদুল্লাহ মাজারি। তার করা ওভারের প্রতিটি বলকেই মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন জাজাই।

ম্যাচের পর জাজাই বলেন, ‘নিজের ক্রিকেট আদর্শ গেইলের সামনে এমন একটা পারফরম্যান্স করা যেন ছিল আমার জন্য ছিল যেন সত্যিই একটি পরাবাস্তব বিষয়। আমি শুধু চেষ্টা করেছি নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে। আমি কোনোভাবেই চাইনি এখানে কারও ঔজ্জল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার।’

তিনি হয়তো কারো ঔজ্জ্বল্য ছাপিয়ে যেতে চাননি। তবে, ঠিকই ছাড়িয়ে গেছেন তার আইডল ক্রিস গেইলকে। কারণ, গেইল নিজেও কখনও পারেননি এক ওভারে ৬ ছক্কা মারতে। ক্রিকেটের ইতিহাসে হযরতুল্লাহ জাজাই মাত্র ৬ষ্ঠ ক্রিকেটার, যিনি এক ওভারে টানা ছয় বলে ছয়টা ছক্কা মেরেছেন। আর টি-টোয়েন্টিতে এ নিয়ে তৃতীয়বার।

তার আগে এক ওভারে ছয় ছক্কা মারার রেকর্ড গড়েছিলেন স্যার গ্যারি সোবার্স, রবি শাস্ত্রী, হার্শেল গিবস, যুবরাজ সিং এবং রস হুইটলি। শুধু তাই নয়, জাজাই কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি করার রেকের্ডও ভাগ বসিয়ে দিলেন। এ জায়গায় গেইলের পাশে নিজের নাম লিখলেন জাজাই। মাত্র ১২ বলে এর আগে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন গেইল এবং যুবরাজ সিং। এবার একই কীর্তি গড়লেন জাজাই। টানা ছয় বলে ৬ষ্ঠ ছক্কা মেরেই এই রেকর্ড গড়েন তিনি।

মাত্র ১৭ বলে ৬২ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। বেন লাফলিনের বলে গুলবাদিন নাইবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তার আগে মারেন মোট ৭টি ছক্কা এবং ৪টি বাউন্ডারি। ৬২ রানের মধ্যে ৫৮ রানই এসেছে তার চার-ছক্কা থেকে।

জাজাই বলেন, ‘আমার জন্য অবশ্যই একটি গর্বের সময় এটা। কারণ, এই একটি ইনিংসের মধ্য দিয়ে অনেকগুলো বড় বড় নামের সঙ্গে বসে গেলো আমার নাম। তারা সত্যিকারেই এই খেলাটার কিংবদন্তি। আমি সবার আগে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে চাই যে, তিনি আমাকে ১২ বলে ফিফটি করার সুযোগ দিয়েছেন।’

ম্যাচ শেষে আইডল গেইলের সঙ্গে একটি ছবিও তুলে রাখলেন জাজাই। নিজের জীবনের সেরা স্মৃতিই হয়ে থাকবে হয়তো এই ম্যাচটি।

Tag :

আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়

গেইলের সামনে ‘আফগান গেইল’, হাঁকালেন এক ওভারে ছয় ছক্কা

আপডেট টাইম ০৪:৪৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক :   প্রতিপক্ষ দলের হয়ে খেলছেন ক্রিস গেইল। হজরতুল্লাহ জাজাইয়ের মন-মননজুড়েই শুধু সেই গেইলেরই বিচরণ। ছোটবেলা থেকেই গেইল তার আদর্শ। স্বপ্ন দেখতেন একদিন গেইলের মতই মারকাটারি ক্রিকেট খেলবেন। নিজেকে প্রমাণ করবেন, তিনিও টি-টোয়েন্টিতে একজন অপরিহার্য খেলোয়াড়।

কিন্তু কি অদ্ভূত ভাগ্য তার! স্বপ্নটা এভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা হয়তো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি ২০ বছর বয়সী আফগান ক্রিকেটার হযরতুল্লাহ জাজাই। নিজের স্বপ্নের নায়ক প্রতিপক্ষ দলে খেলছেন। তার সামনে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করছেন। সেই নায়ক গেইলের চোখের সামনেই এক ওভারে পরপর ছয় বলে টানা ছয়টি ছক্কা মেরে দিলেন হযরতুল্লাহ জাজাই!

আফগান প্রিমিয়ার লিগে রোববার রাতে স্বপ্নের মতই এ কাণ্ড ঘটিয়ে দিয়েছেন হযরতুল্লাহ জাজাই। তিনি হচ্ছেন কাবুল জাওনানের ব্যাটসম্যান। ক্রিস গেইল খেলছিলেন বলখ লিজেন্ডসের হয়ে। আরব আমিরাতের শারজায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে হযরতুল্লাহ জাজাই এক ওভারে ৬ ছক্কা মেরেও কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি।

কারণ, ক্রিস গেইলের দল প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ২৪৪ রান। জবাবে হযরতুল্লাহ জাজাইয়ের দল কাবুল জাওনান ৭ উইকেট হারিয়ে যেতে পেরেছিল ২২৩ রান পর্যন্ত। ফলে ২১ রানে হারতে হয় জাজাইয়ের দলকে।

দলের লক্ষ্য ২৪৫ নাকি সামনে স্বপ্নের নায়ক ক্রিস গেইল দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেটা কোনোই বিবেচ্য বিষয় ছিল না যেন জাজাইয়ের সামনে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের ঘটনা ছিল ওটা। দুর্ভাগা বোলারের নাম আবদুল্লাহ মাজারি। তার করা ওভারের প্রতিটি বলকেই মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন জাজাই।

ম্যাচের পর জাজাই বলেন, ‘নিজের ক্রিকেট আদর্শ গেইলের সামনে এমন একটা পারফরম্যান্স করা যেন ছিল আমার জন্য ছিল যেন সত্যিই একটি পরাবাস্তব বিষয়। আমি শুধু চেষ্টা করেছি নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে। আমি কোনোভাবেই চাইনি এখানে কারও ঔজ্জল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার।’

তিনি হয়তো কারো ঔজ্জ্বল্য ছাপিয়ে যেতে চাননি। তবে, ঠিকই ছাড়িয়ে গেছেন তার আইডল ক্রিস গেইলকে। কারণ, গেইল নিজেও কখনও পারেননি এক ওভারে ৬ ছক্কা মারতে। ক্রিকেটের ইতিহাসে হযরতুল্লাহ জাজাই মাত্র ৬ষ্ঠ ক্রিকেটার, যিনি এক ওভারে টানা ছয় বলে ছয়টা ছক্কা মেরেছেন। আর টি-টোয়েন্টিতে এ নিয়ে তৃতীয়বার।

তার আগে এক ওভারে ছয় ছক্কা মারার রেকর্ড গড়েছিলেন স্যার গ্যারি সোবার্স, রবি শাস্ত্রী, হার্শেল গিবস, যুবরাজ সিং এবং রস হুইটলি। শুধু তাই নয়, জাজাই কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি করার রেকের্ডও ভাগ বসিয়ে দিলেন। এ জায়গায় গেইলের পাশে নিজের নাম লিখলেন জাজাই। মাত্র ১২ বলে এর আগে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন গেইল এবং যুবরাজ সিং। এবার একই কীর্তি গড়লেন জাজাই। টানা ছয় বলে ৬ষ্ঠ ছক্কা মেরেই এই রেকর্ড গড়েন তিনি।

মাত্র ১৭ বলে ৬২ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। বেন লাফলিনের বলে গুলবাদিন নাইবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তার আগে মারেন মোট ৭টি ছক্কা এবং ৪টি বাউন্ডারি। ৬২ রানের মধ্যে ৫৮ রানই এসেছে তার চার-ছক্কা থেকে।

জাজাই বলেন, ‘আমার জন্য অবশ্যই একটি গর্বের সময় এটা। কারণ, এই একটি ইনিংসের মধ্য দিয়ে অনেকগুলো বড় বড় নামের সঙ্গে বসে গেলো আমার নাম। তারা সত্যিকারেই এই খেলাটার কিংবদন্তি। আমি সবার আগে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে চাই যে, তিনি আমাকে ১২ বলে ফিফটি করার সুযোগ দিয়েছেন।’

ম্যাচ শেষে আইডল গেইলের সঙ্গে একটি ছবিও তুলে রাখলেন জাজাই। নিজের জীবনের সেরা স্মৃতিই হয়ে থাকবে হয়তো এই ম্যাচটি।