ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা। গজারিয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় খাদে প্রাইভেটকার, নিহত ৩ সিলেটে আগাম বন্যার আশঙ্কায়!! হাওরজুড়ে কৃষকের ব্যস্ততা শিশুদের মনোবিকাশে প্রয়োজন সংস্কৃতি চর্চা: মেয়র রেজাউল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হাতীবান্ধায় নির্বাচনী সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ আহত ১০ ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার, প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই রোগী দেখে সবার মন জয় করেলেন ডাক্তার মোঃ হুমায়ুন রশিদ শাকিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বগুড়া জেলা আরজেএফ’র সুপেয় পানি স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ দুমকীতে খাল সংস্কার প্রকল্পে অনিয়মসহ শত শতগাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ। বাকেরগঞ্জ বাসীর উন্নয়নমুলক সকল প্রত্যাশা পুরনে কাজ করব। ৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ রাজীব আহমেদ তালুকদার।

আখাউড়া মুক্ত দিবস পালিত

রুবেল আহমেদ, আখাউড়া (ব্রাক্ষণবাড়ীয়া):  ঐতিহাসিক ৬ই ডিসেম্বর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কবল থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আখাউড়া মুক্ত হয়। এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনী ঢাকায় আক্রমণ করলে সে দিন থেকেই সারা বাংলাদেশে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ত্রিপুরা ঘেঁষা আখাউড়া পূর্বাঞ্চলীয় প্রবেশদ্বার ৭১ রণাঙ্গনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ছিল।

১৯৭১ সালে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর থেকে আখাউড়া উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনার জন্য দেশ প্রেমিক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, যুবক, শ্রমিক নেতা কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতিতে আখাউড়ায় গঠন করা হয় সর্ব দলীয় সংগ্রাম পরিষদ। ওই পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন কাজী ওয়াহেদুর রহমান লিলু মিয়া।

এস ফোর্সের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল সফিউল্লার তত্ত্বাবধানে এ যুদ্ধ চলতে থাকে। ৩০ নভেম্বর ও ১লা ডিসেম্বর আখাউড়া উত্তরে সীমান্তবর্তী আজমপুর, রাজাপুর, সিঙ্গারবিল, মিরাশানি এলাকায় আধুনিক অস্ত্রে শস্ত্রে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর যুদ্ধ হয়। টানা ৩ দিন চলে এ যুদ্ধ। এ যুদ্ধ অন্তত ৩৫ পাক সেনা নিহত হয়। বন্দি করা হয় পাঁচ জনকে। মুক্তি বাহিনীর নায়েক সুবেদার আশরাফ আলী খান এ সময় শহীদ হন। আহত হয় অনেক মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের মারমুখী আক্রমণে পাক বাহিনী দাঁড়াতে পারেনি। তারা তখন পিছু হটতে বাধ্য হয়।

৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনীরা আজমপুর অবস্থান নিলে সেখানেও যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ১১জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর দুই সিপাহী ও এক নায়েক সুবেদার শহীদ হন। চার এবং পাঁচ ডিসেম্বর যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর প্রায় ১৭০ জন সৈন্য নিহত হয়। তখন গোটা আখাউড়া এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া পুরোপুরি হানাদার মুক্ত হয়।দিনটির শুরুতে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন, আখাউড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আখাউড়া কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে একটি আনন্দ র‌্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রধক্ষিন শেষে আখাউড়া পোষ্ট অফিসের সামনে পতাকা উত্তলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠাটি সমাপ্ত হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা।

আখাউড়া মুক্ত দিবস পালিত

আপডেট টাইম ০৫:১৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

রুবেল আহমেদ, আখাউড়া (ব্রাক্ষণবাড়ীয়া):  ঐতিহাসিক ৬ই ডিসেম্বর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কবল থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আখাউড়া মুক্ত হয়। এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনী ঢাকায় আক্রমণ করলে সে দিন থেকেই সারা বাংলাদেশে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ত্রিপুরা ঘেঁষা আখাউড়া পূর্বাঞ্চলীয় প্রবেশদ্বার ৭১ রণাঙ্গনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ছিল।

১৯৭১ সালে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর থেকে আখাউড়া উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনার জন্য দেশ প্রেমিক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, যুবক, শ্রমিক নেতা কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতিতে আখাউড়ায় গঠন করা হয় সর্ব দলীয় সংগ্রাম পরিষদ। ওই পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন কাজী ওয়াহেদুর রহমান লিলু মিয়া।

এস ফোর্সের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল সফিউল্লার তত্ত্বাবধানে এ যুদ্ধ চলতে থাকে। ৩০ নভেম্বর ও ১লা ডিসেম্বর আখাউড়া উত্তরে সীমান্তবর্তী আজমপুর, রাজাপুর, সিঙ্গারবিল, মিরাশানি এলাকায় আধুনিক অস্ত্রে শস্ত্রে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর যুদ্ধ হয়। টানা ৩ দিন চলে এ যুদ্ধ। এ যুদ্ধ অন্তত ৩৫ পাক সেনা নিহত হয়। বন্দি করা হয় পাঁচ জনকে। মুক্তি বাহিনীর নায়েক সুবেদার আশরাফ আলী খান এ সময় শহীদ হন। আহত হয় অনেক মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের মারমুখী আক্রমণে পাক বাহিনী দাঁড়াতে পারেনি। তারা তখন পিছু হটতে বাধ্য হয়।

৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনীরা আজমপুর অবস্থান নিলে সেখানেও যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ১১জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর দুই সিপাহী ও এক নায়েক সুবেদার শহীদ হন। চার এবং পাঁচ ডিসেম্বর যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর প্রায় ১৭০ জন সৈন্য নিহত হয়। তখন গোটা আখাউড়া এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া পুরোপুরি হানাদার মুক্ত হয়।দিনটির শুরুতে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন, আখাউড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আখাউড়া কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে একটি আনন্দ র‌্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রধক্ষিন শেষে আখাউড়া পোষ্ট অফিসের সামনে পতাকা উত্তলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠাটি সমাপ্ত হয়।