ঢাকা ০২:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, প্রথম ধাপ ইন্দুরকানীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইভিএম ভোট কেন্দ্র চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে একসাথে কাজ করবে চসিক ও সিএমপি নির্বাচনী ছড়া বাড়ছে সাংবাদিক কমছে সাংবাদিকতা-মোঃ রাব্বী মেল্লা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাতুয়াইলে বাস ও পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও আহত ২ লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কে শপথ বাক্য পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী বরিশালে সার্বজনীন পেনশন মেলা ২০২৪ উদ্বোধন হিরাঝীলে বিশ্বাস মঞ্জিল নামের একটি বিল্ডিং হেলে পড়ে,নিরাপত্তাহীনতায় এলাকাবাসী বাকেরগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জন প্রিয়তার শীর্ষে সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া। বাকেরগঞ্জে যুবদল সভাপতি টুকুর মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল

কুষ্টিয়া চিনিকলের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল মাঠে এবার হতে যাচ্ছে আখের আবাদ 

মোহাম্মদ রফিক, কুষ্টিয়া:  কুষ্টিয়া চিনিকলের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল মাঠে এবার হতে যাচ্ছে আখের আবাদ। চিনিকলের দ্বৈন্যদশা ফেরাতে এই মাঠ চষে সেখানে রোপন করা হবে আখ। তাতে চিনিকল ধারাবাহিক লোকসানের কবল থেকে কিছুটা হলেও মুক্ত হবে। কুষ্টিয়া চিনিকল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে হতবাক কুষ্টিয়া চিনিকল আবাসিক এলাকাবাসী, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়, সর্বোপরি চিনি সন্তানদের সংগঠন কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। অবিলম্বে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণারও হুঁশিয়ারীও দেন তারা।
নুরুল কাদের জানান, এই মাঠের সাথে জড়িয়ে রয়েছে চিনি সন্তানদের অসংখ্য স্মৃতি। এই মাঠে বেড়ে ওঠা চিনিকল আবাসিক এলাকার শত পরিবার। এই মাঠ থেকেই তৈরী হয়েছে অসংখ্য প্রতিভা। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় আজ সেই মাঠ চষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আখের আবাদের। তাঁর মতে মাঠ চষে আখের আবাদের দরকার নেই। চিনিকলের স্বার্থ যদি দেখতেই হয়, চিনিকলকে যদি লাভজনক শিল্পে পরিণত করতেই হয় তাহলে আখচাষীদের প্রণোদনা দিয়ে তাদের আখচাষে উদ্বুদ্ধ করার প্রক্রিয়া জোরদার করা হোক। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেদিকে না গিয়ে ঐতিহ্যবাহী ফুটবল মাঠ নিশ্চিহ্ন করে সেখানে আখের আবাদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও কুষ্টিয়ার অহংকার আকরাম হোসেন জানান, এই মাঠ অত্র এলাকার ক্রীড়ামোদীদের অবলম্বন। অথচ এই মাঠ কিনা বিলুপ্ত করে আখচাষের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি। অন্যথায় জেলার সকল ক্রীড়ামোদীদের সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারী দেন তিনি।কুষ্টিয়া জেলা দলের সাবেক কৃতি খেলোয়াড় শাহীন জানান, এই মাঠেই আমার ফুটবলে হাতেখড়ি। এই মাঠে আমাদের অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে অথচ এই মাঠ বিলুপ্ত করে সেখানে আখের আবাদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় বিষয় বলে মনে করেন তিনি।
সাবেক ফুটবলার নাজমূল হক রাজা বলেন, আশপাশ এলাকায় ফুটবলার তৈরীর উর্বর ক্ষেত্র এই মাঠ। অথচ এই মাঠ বিনষ্ট করে সেখানে আখের আবাদের বিষয়টি দু:খজনক।সাবেক ফুটবলার বদির উদ্দিন জানান, এই মাঠেই আমরা ফুটবল খেলা শিখেছি। আমার মত অসংখ্য প্রতিভা তৈরী হয়েছে এই মাঠ থেকে। একসময় কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থায় চিনিকলের যে দু’টি টিম ছিল তা এই মাঠকে ঘিরেই তৈরী হয়েছিল। ওইসব ক্লাব থেকেই তৈরী হয়েছিল অসংখ্য ফুটবলার। কিন্তু আজ সেই মাঠ বিলুপ্ত করে সেখানে আখের আবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। এসিদ্ধান্ত থেকে তাদেরকে সরে আসার দাবী জানান বদির উদ্দিন।
সাবেক ফুটবলার শরীফ বিশ্বাস জানান, চিনিকলের এই মাঠ থেকেই ফুটবলে হাতেখড়ি। কেএসএম সবুজ সংঘের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলাম। ওই ক্লাবের ক্যাম্পিং হতো এই মাঠেই। কোচ বাবলু ভায়ের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আজ সেই মাঠ যদি বিলীন হয়ে যায় কষ্টের শেষ থাকবেনা। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবী জানান তিনি। অন্যথায় তীব্র আন্দোলন ঘোষণারও হুঁশিয়ারী দেন তিনি।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, প্রথম ধাপ ইন্দুরকানীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইভিএম ভোট কেন্দ্র

কুষ্টিয়া চিনিকলের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল মাঠে এবার হতে যাচ্ছে আখের আবাদ 

আপডেট টাইম ০১:২১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৯
মোহাম্মদ রফিক, কুষ্টিয়া:  কুষ্টিয়া চিনিকলের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল মাঠে এবার হতে যাচ্ছে আখের আবাদ। চিনিকলের দ্বৈন্যদশা ফেরাতে এই মাঠ চষে সেখানে রোপন করা হবে আখ। তাতে চিনিকল ধারাবাহিক লোকসানের কবল থেকে কিছুটা হলেও মুক্ত হবে। কুষ্টিয়া চিনিকল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে হতবাক কুষ্টিয়া চিনিকল আবাসিক এলাকাবাসী, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়, সর্বোপরি চিনি সন্তানদের সংগঠন কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। অবিলম্বে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণারও হুঁশিয়ারীও দেন তারা।
নুরুল কাদের জানান, এই মাঠের সাথে জড়িয়ে রয়েছে চিনি সন্তানদের অসংখ্য স্মৃতি। এই মাঠে বেড়ে ওঠা চিনিকল আবাসিক এলাকার শত পরিবার। এই মাঠ থেকেই তৈরী হয়েছে অসংখ্য প্রতিভা। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় আজ সেই মাঠ চষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আখের আবাদের। তাঁর মতে মাঠ চষে আখের আবাদের দরকার নেই। চিনিকলের স্বার্থ যদি দেখতেই হয়, চিনিকলকে যদি লাভজনক শিল্পে পরিণত করতেই হয় তাহলে আখচাষীদের প্রণোদনা দিয়ে তাদের আখচাষে উদ্বুদ্ধ করার প্রক্রিয়া জোরদার করা হোক। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেদিকে না গিয়ে ঐতিহ্যবাহী ফুটবল মাঠ নিশ্চিহ্ন করে সেখানে আখের আবাদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও কুষ্টিয়ার অহংকার আকরাম হোসেন জানান, এই মাঠ অত্র এলাকার ক্রীড়ামোদীদের অবলম্বন। অথচ এই মাঠ কিনা বিলুপ্ত করে আখচাষের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি। অন্যথায় জেলার সকল ক্রীড়ামোদীদের সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারী দেন তিনি।কুষ্টিয়া জেলা দলের সাবেক কৃতি খেলোয়াড় শাহীন জানান, এই মাঠেই আমার ফুটবলে হাতেখড়ি। এই মাঠে আমাদের অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে অথচ এই মাঠ বিলুপ্ত করে সেখানে আখের আবাদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় বিষয় বলে মনে করেন তিনি।
সাবেক ফুটবলার নাজমূল হক রাজা বলেন, আশপাশ এলাকায় ফুটবলার তৈরীর উর্বর ক্ষেত্র এই মাঠ। অথচ এই মাঠ বিনষ্ট করে সেখানে আখের আবাদের বিষয়টি দু:খজনক।সাবেক ফুটবলার বদির উদ্দিন জানান, এই মাঠেই আমরা ফুটবল খেলা শিখেছি। আমার মত অসংখ্য প্রতিভা তৈরী হয়েছে এই মাঠ থেকে। একসময় কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থায় চিনিকলের যে দু’টি টিম ছিল তা এই মাঠকে ঘিরেই তৈরী হয়েছিল। ওইসব ক্লাব থেকেই তৈরী হয়েছিল অসংখ্য ফুটবলার। কিন্তু আজ সেই মাঠ বিলুপ্ত করে সেখানে আখের আবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। এসিদ্ধান্ত থেকে তাদেরকে সরে আসার দাবী জানান বদির উদ্দিন।
সাবেক ফুটবলার শরীফ বিশ্বাস জানান, চিনিকলের এই মাঠ থেকেই ফুটবলে হাতেখড়ি। কেএসএম সবুজ সংঘের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলাম। ওই ক্লাবের ক্যাম্পিং হতো এই মাঠেই। কোচ বাবলু ভায়ের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আজ সেই মাঠ যদি বিলীন হয়ে যায় কষ্টের শেষ থাকবেনা। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবী জানান তিনি। অন্যথায় তীব্র আন্দোলন ঘোষণারও হুঁশিয়ারী দেন তিনি।