সিনিয়র রিপোর্টার,মাসুদ হাসান মোল্লা রিদম,ঢাকা: দেশে প্রথমবার মতো অনুষ্ঠিত ‘স্বর্ণ মেলায়’ ঢাকা বিভাগে অবৈধ রুপা, সোনা ও হীরা বৈধ করতে ১৭৫ কোটি টাকার কর দিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে রাজধানীর অভিজাত হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে তিনদিন ব্যাপী স্বর্ণ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়াল। তবে কত কোটি টাকার সোনা, রুপা ও হীরা বৈধ করা হয়েছে তার দেননি তিনি। তিনদিন ব্যাপী এই মেলা রাজধানী ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটলসহ দেশের ৮ টি বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। এনবিআর ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) যৌথভাবে মেলার আয়োজন করে। দিলীপ কুমার আগারওয়াল বলেন, স্বর্ণ মেলায় এখন ( সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা ) পর্যন্ত এক হাজার ২০০ মানুষ তাদের ডায়মন্ড, সোনা ও রুপা বৈধ করতে এসেছেন। আজকে মেলার শেষ দিনে এক হাজার লোক ডায়মন্ড, সোনা ও রুপা বৈধ করান। মেলায় এখন পর্যন্ত ১৭৫ কোটি টাকার কর দিয়ে সোনা বৈধ করা হয়েছে। এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডর (এনবিআরের) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ৩০০ কোটি টাকার কর আদায় হবে বলে আশা করছি। গত ২৩ জুন সকাল ১০টায় মেলা উদ্বোধন করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। মেলার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন এনবিআরের সদস্য (কর ও প্রশাসন) কানন কুমার রায়।
মেলায় ব্যবসায়ীরা ভরিপ্রতি রুপা ৫০ টাকা, স্বর্ণ ভরপ্রতি ১ হাজার এবং ডায়মন্ড ভরিপ্রতি ৬ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসায়ীরা স্বর্ণ, রুপা এবং ডায়মন্ড বৈধ করেছেন। ৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মেলার আয়োজন করে এনবিআর ও বাজুস। তিন দিনব্যাপী ‘স্বর্ণ মেলা-২০১৯’র প্রথম দুদিনে মোট ৫১ কোটি টাকার দিয়ে সোনা, রূপা ও ডায়মন্ড বৈধ করেছেন ২১০ জন ব্যবসায়ী। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক ধনী মানুষ আছেন, যারা ভারতের কলকাতা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর থেকে স্বর্ণের গহনা কেনেন। দেশে অনেক দক্ষ কারিগর রয়েছেন, তাদের হাতের কাজ অনেক সুন্দর। তারা যদি ভালো মানের গহনা তৈরি করতে পারেন, তাহলে কেউ আর গহনার জন্য বিদেশমুখী হবেন না।’ ‘বরং দেশের গহনা বিদেশে রফতানি করা যাবে। আমরা বিদেশে রফতানির জন্য বিশেষ প্রণোদনারও চিন্তা করব।’ স্বর্ণ কারিগরদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কারিগরদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউশন খুব দরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকার আশপাশে একটি জুয়েলারি পল্লী স্থাপনের জন্য সহযোগিতা করবে।’ আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে জমি বরাদ্দের জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন,সোনা আমদানি এখন সহজ হবে। প্রতি ভরি ২ হাজার টাকা দিয়ে আমদানি করা যাবে। আশা করছি অবৈধভাবে দেশে আর সোনা আসবে না। সোনা ব্যবসায়ীদের জন্য একটি অথর্নৈতিক জোন করার জন্য জুলাইতে এনবিআর থেকে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনের কাছে চিঠি দেব। এছাড়া সোনায় ভ্যাট কমানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে জানানো হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সভাপতি গঙ্গা চরণ মালাকার ও এনবিআর সদস্য (আয়কর) কানন কুমার রায়সহ স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা ও রাজস্ব কর্মকর্তারা।