১ লাখ টাকা জমা রাখলে মাসে ৯০০ টাকা মুনাফা দিচ্ছে বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংক। শাখার সামনে এমন ব্যানার ঝুলিয়ে ব্যাংকটি বলছে, এটাই সর্বোচ্চ মুনাফা। আর প্রতি লাখে ইস্টার্ণ ব্যাংক ২৫০ টাকা, ঢাকা ব্যাংক ৫০০ টাকা এবং ওয়ান ব্যাংক দিচ্ছে ৬০০ টাকা।
রাজধানীর দিলকুশা এলাকায় এই চার ব্যাংকের শাখায় গিয়ে একই মেয়াদের আমানতের বিপরীতে ভিন্ন ভিন্ন সুদহারের এমন চিত্র দেখা গেছে। অন্য ব্যাংকগুলোতেও একই চিত্র।
বেসরকারি ব্যাংকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সিদ্ধান্ত মানতে গিয়ে কোনো কোনো ব্যাংক আমানতের সুদহার আড়াই শতাংশেও নামিয়েছে। আবার কেউ কেউ উচ্চ সুদে আমানত নিচ্ছে। বিএবির সিদ্ধান্তের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ৯১ দিন, ১৮২ দিনসহ বিভিন্ন মেয়াদি নতুন নতুন আমানত প্রকল্প ঘোষণা করেছে। আবার কোন ধরনের আমানতে ৬ শতাংশ সুদ কার্যকর করতে হবে, বিএবি তা-ও নির্দিষ্ট করেনি।
যেসব আমানতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, আগের মতো সুদ না পাওয়ায় তা তুলে নিচ্ছেন গ্রাহকেরা। এমনকি সরকারি ব্যাংকও বেসরকারি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেলছে। ফলে আমানত নিয়ে গোটা ব্যাংক খাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে আমানতের সুদহার ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনায় বিপাকে পড়ছেন সুদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরা। এত কম সুদে ব্যাংকগুলোও এখন আমানত পাচ্ছে না।
এদিকে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএবি এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিকল্প নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকায় অবতীর্ণ, যাতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরাও (এমডি) আতঙ্কে রয়েছেন। ব্যাংকের সুদহার সম্পদ-দায় বা অ্যাসেট-লায়াবিলিটি কমিটি (অ্যালকো) নির্ধারণ করলেও এখন সেই কমিটিও অকার্যকর। বিএবি একদিকে সুদহার কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে বেশি মুনাফা করতে নিজ ব্যাংকের এমডিদের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিচ্ছে।