পাঁচ তরুণী ও তিন তরুণ সেলফি তুলছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর শ্যামলী সিনেপ্লেক্সের টিকিট কাউন্টার তখনো খোলেনি। পুরোনো সেই শ্যামলী হল আর নেই। ভেঙে চকচকে মার্কেটের পেটের ভেতর পুরে দেওয়া হয়েছে হলটাকে। এখন আর চাইলেই কেউ লুঙ্গি পরে সিনেমা দেখতে আসতে পারেন না। মন খুতখুত করে।
শ্যামলী হলের বাইরে একা দাঁড়িয়ে শীর্ণদেহী এক তরুণ। মুখজুড়ে ছোট করে ছাঁটা চাপ দাড়ি। বাঁ হাতের মুঠোয় একটা এনার্জি ড্রিংকসের ক্যান আর আঙুলে চিমটি দিয়ে ধরা মিস্টার টুইস্টের প্যাকেট। ডান হাতের দুই আঙুল প্যাকেটের ভেতর ঢুকিয়ে একটি করে চিপস বের করে এনে নিজের মুখে পুরছেন। পাশাপাশি টিকিট কাউন্টার খোলার অপেক্ষায় আছেন তিনি। তিনি যে শাকিব খানের ভক্ত, শুরুতে সেটা স্বীকার করেননি। তাঁর সঙ্গে আলাপ করার চেষ্টা করি।
‘মনে রেখো’ ছবির পোস্টারতরুণের নাম মো. আল আমিন। মোহাম্মদপুরে ভাইয়ের ব্যবসা দেখেন। ভাইকে সঙ্গে নিয়ে দেখতে এসেছেন শাকিব খান অভিনীত ‘ক্যাপ্টেন খান’ ছবিটি। বললেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি শাকিব খানের ভক্ত।’ টিস্যু ফ্যাক্টরিতে কর্মরত মো. হাসানকে সাতটি টিকিট কিনতে দেখা যায়। বন্ধুদের নিয়ে দুপুর ১২টার প্রদর্শনীতে বসবেন তিনি। জানালেন, ছবির ‘ম্যাও ম্যাও’ গানটা ভালো লেগেছে তাঁর।
ঈদের দিনও শ্যামলীতে বেশ কিছু দর্শক ‘ক্যাপ্টেন খান’ দেখেছেন। তবে হাউসফুল হয়নি, জানালেন প্রেক্ষাগৃহের নিরাপত্তারক্ষীদের একজন। হাউস ম্যানেজার আহসানুল্লাহ জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যার প্রদর্শনী প্রায় হাউসফুল ছিল। আজ দর্শক বেড়েছে। তিনি বলেন, ছবিটা ভালো। যদিও শোনা যাচ্ছে, ‘ক্যাপ্টেন খান’ তামিল ছবির নকল। কিন্তু নকল করলেই তো আর শেষ পর্যন্ত নকল থাকে না। ছবির মেকিংটা বেশ ভালো।
শাকিব খান ও শবনম বুবলী অভিনীত ‘ক্যাপ্টেন খান’ বড় বাজেটের ছবি। পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ঢাকাসহ সারা দেশে ১৭৬টি প্রেক্ষাগৃহ পেয়েছে তাঁর এই ছবি। ছবিটি নিয়ে দারুণ আশাবাদী তাঁরা।
‘জান্নাত’ ছবির পোস্টারঢাকা এবং ঢাকার বাইরে ৭০টি হলে মুক্তি পেয়েছে ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত আরেক ছবি ‘মনে রেখো’। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলাকার সামনে কম বয়সী যে ছেলেদের ভিড় দেখা যায়, তাদের সবাই মূলত মাহির ভক্ত। কলকাতার অভিনেতা বনি সেনগুপ্তের সঙ্গে কেমন অভিনয় করল মাহি, সেটাই তাঁদের আগ্রহের বিষয়। সুমন নামের এক তরুণ দর্শক জানালেন, মাহির সব ছবি তিনি দেখেছেন। এই নায়িকার অভিনয় ক্রমশই ভালো হচ্ছে, সামনে তিনি আরও ভালো করবেন। সাইফুল নামের এই দর্শক বলেন, মাহির জন্যই দেখতে এলাম।
মাহিয়া মাহি ও সাইমন সাদিক অভিনীত ঈদের আরেক ছবি ‘জান্নাত’ ঢাকার একমাত্র পদ্মা সিনেমায় মুক্তি পেয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরের ২২টি হলে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। এখন পর্যন্ত এ ছবির কোনো খবর জানা যায়নি। আর কলকাতার রাজা চন্দ পরিচালিত ‘বেপরোয়া’ ছবিটি নিয়ে নতুন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রযোজক আবদুল আজিজ। ঈদে ঢাকার বাইরের একটি হলে মুক্তি পেলেও, পরে ঘটা করে এই ছবি মুক্তি দেবেন তাঁরা।
সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, এই ঈদ ‘ক্যাপ্টেন খান’-এর। বেশি হলে মুক্তি পেলে বিনিয়োগ করা অর্থের অনেকটাই ফেরে। তাই পরিচালকের আশা খান সাহেবকে নিয়ে।