ঢাকা ০৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিলেটে হচ্ছে বৃষ্টিপাত, বাড়ছে নদ-নদীর পানি কোতয়ালী মডেল থানা কর্তৃক ৬৬ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার। জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ‘সুন্দরবনের মধু’ শৈলকুপায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আলমগীর অরণ্য কে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চন্দনাইশে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি দেলদুয়ার উপজেলা শাখা গঠিত মসজিদে মাইকিং করে লালন অনুসারী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুর বিদ্যুৎতের তার ছিঁড়ে অধ্যাপকের মৃত্যু। নওগাঁর নিয়ামতপুরে ক্ষমতার জোরে সংখ্যালঘুর জমি দখলের অভিযোগ। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়াকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

মসজিদে মাইকিং করে লালন অনুসারী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুর

এস, এম, ওয়ালিদুজ্জামান শুভ কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

মহাত্মা লালন সাইজির অনুসারী মৃত গাজির উদ্দিন ফকিরের স্ত্রী চায়না বেগম চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর কবরে মাথা ঠেকিয়ে কাটিয়ে দেবেন। ভিটেমাটিতে প্রতিদিন জ্বালাবেন সন্ধ্যা প্রদীপ। ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। এলাকার মসজিদে মাইকিং করে ভেঙে দেওয়া হয়েছে তার ঘর।
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, মাঠের মধ্যে স্বামীর কবরের পাশে স্থাপিত বৃদ্ধার ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। টিনের চালা ও বাঁশ-কাঠ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
শেষ বিকেলের আলোয় স্বামীর কবরের পাশে দাড়িয়ে চায়না বেগম বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, কোথাও জায়গা নাহলে তুমি আমার কবরের পাশেই থাকবা। প্রতিবছর বাতাসার সিন্নি হলেও কবরা। তার কথা রাখতেই ঘরখানা তৈয়ার করি। কিন্তু এলাকার লোকজন আমাকে না জানিয়েই সব ভেঙে ফেলেছে।
ঘটনা জানতে পেরে প্রতিবাদ করে হামলার শিকারও হয়েছেন বৃদ্ধা। চায়না বেগমের দাবি, এলাকায় নতুন বাড়ি করা একজন লেবাসধারী হুজুর তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় বাড়ি ভাঙার প্রতিবাদ করায়।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন চায়না বেগম। অভিযোগে ওই এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এনামুল হক, মাতব্বর মোশারফ হোসেন, আনার মণ্ডল ও সাইদুল হাজির নাম উল্লেখসহ ৪৫-৫০ জনকে আসামি করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্তরা তার বাড়িঘর ভাঙচুর করে অন্তত লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেন। এমনকি রাতের আধারে সেখানে তাকে পেলে হত্যাও করা হবে।
চায়না বেগমের বোন জামাই সাধু শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, আমাদের অপরাধটা কী? আমরা সাধু সমাজ কি নিজের জমিতেও আর থাকতে পারবা না। আজকে সাধুর ঘর কেন ভাঙা হলো? সাধু সমাজকে কেন অপমান করা হলো? আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেল চারটায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মিটিং আহ্বান করা হয়েছে বলে জানান এস আই খায়রুজ্জামান। ঘটনার তদন্ত করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। সেখানে একটি সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করা হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

সিলেটে হচ্ছে বৃষ্টিপাত, বাড়ছে নদ-নদীর পানি

মসজিদে মাইকিং করে লালন অনুসারী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুর

আপডেট টাইম ০৭:৪৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

এস, এম, ওয়ালিদুজ্জামান শুভ কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

মহাত্মা লালন সাইজির অনুসারী মৃত গাজির উদ্দিন ফকিরের স্ত্রী চায়না বেগম চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর কবরে মাথা ঠেকিয়ে কাটিয়ে দেবেন। ভিটেমাটিতে প্রতিদিন জ্বালাবেন সন্ধ্যা প্রদীপ। ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। এলাকার মসজিদে মাইকিং করে ভেঙে দেওয়া হয়েছে তার ঘর।
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, মাঠের মধ্যে স্বামীর কবরের পাশে স্থাপিত বৃদ্ধার ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। টিনের চালা ও বাঁশ-কাঠ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
শেষ বিকেলের আলোয় স্বামীর কবরের পাশে দাড়িয়ে চায়না বেগম বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, কোথাও জায়গা নাহলে তুমি আমার কবরের পাশেই থাকবা। প্রতিবছর বাতাসার সিন্নি হলেও কবরা। তার কথা রাখতেই ঘরখানা তৈয়ার করি। কিন্তু এলাকার লোকজন আমাকে না জানিয়েই সব ভেঙে ফেলেছে।
ঘটনা জানতে পেরে প্রতিবাদ করে হামলার শিকারও হয়েছেন বৃদ্ধা। চায়না বেগমের দাবি, এলাকায় নতুন বাড়ি করা একজন লেবাসধারী হুজুর তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় বাড়ি ভাঙার প্রতিবাদ করায়।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন চায়না বেগম। অভিযোগে ওই এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এনামুল হক, মাতব্বর মোশারফ হোসেন, আনার মণ্ডল ও সাইদুল হাজির নাম উল্লেখসহ ৪৫-৫০ জনকে আসামি করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্তরা তার বাড়িঘর ভাঙচুর করে অন্তত লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেন। এমনকি রাতের আধারে সেখানে তাকে পেলে হত্যাও করা হবে।
চায়না বেগমের বোন জামাই সাধু শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, আমাদের অপরাধটা কী? আমরা সাধু সমাজ কি নিজের জমিতেও আর থাকতে পারবা না। আজকে সাধুর ঘর কেন ভাঙা হলো? সাধু সমাজকে কেন অপমান করা হলো? আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেল চারটায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মিটিং আহ্বান করা হয়েছে বলে জানান এস আই খায়রুজ্জামান। ঘটনার তদন্ত করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। সেখানে একটি সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করা হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।