ভাস্কর মজুমদার (নিজস্ব প্রতিবেদক)
: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী (১৫) কে অপহরণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামি সাগরসহ চার জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এরমধ্যে সাগরকে ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে নোয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। অপর আসামী শামিম, মাহফুজ ও রনি দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন।
আদালত সুত্রে জানা যায়, অপহরণ মামলায় তিন আসামী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রামগতির আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক ভিক্টোরিয়া চাকমা তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে স্হানীয় বখাটেরা অপহরণ করে মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্হানে নিয়ে যায়। ঐদিন রাতেই স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে ৬ জনের উল্লেখ করে থানায় মামলা রুজু করে। বিষয়টিতে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ দেখায়। অপহরণের শিকার ছাত্রীকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নোয়াখালীর মাইজদী শহরের হিমাচল বাস কাউন্টার এর সামনে থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। পরে ওই ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন ও সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকের নিকট ২২ ধারার জবানবন্দী নেয়া হয়।
স্কুলছাত্রীর চাচা মো. সোহেল জানান, স্কুলে যাওয়া আসার সময় মোঃ সাগর স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত করতো। এ নিয়ে সাগরের পরিবারের কাছে আমরা অভিযোগ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে চর নেয়ামত হাওলাদার বাড়ী সড়ক এলাকা থেকে মোঃ সাগর ও রাজু সহ ৮/৯ জন ভাতিজিকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নোয়া মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমরা ৬ জনের উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করি। পুলিশ ৫২ ঘন্টা পর ভিকটিমকে উদ্ধার করে। কিন্তু গত ১০ দিনে মাত্র একজন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার মূল হোতা সাগরের পিতা আকবর মাঝি প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যান্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসা বাদের জন্য প্রশাসনের দায়িত্ব প্রাপ্তদের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার এ প্রতিবেদককে জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে স্কুল যাওয়ার পথে আমার মেয়েকে তুলে নেয় স্হানীয় আকবর মাঝির বখাটে পুত্র সাগর, মোঃ রাজু ও তাদের সহযোগীরা। মেয়ের চিন্তায় মেয়ের মা অসুস্থ হয়ে গেছে। এদিকে ঘটনার দশদিন পার হলেও একজন আসামি ছাড়া বাকি আসামিদেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে নাই। আমার মেয়ের অপহরণকারীদের বিচারের দাবীতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অপহরণের শিকার স্কুল ছাত্রী চরনেয়ামত জনতা মডেল একাডেমির নবম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত সাগর ও রাজু একই এলাকার আকবর মাঝির ছেলে।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পরে স্কুল ছাত্রীকে আমরা নোয়াখালী সদর থানা এলাকা উদ্ধার করি। ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা করার পরে সংশ্লিষ্ট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি নেয়া হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামি সাগরকে আমরা নোয়াখালী থেকে ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে আদালত সোপর্দ করি। এছাড়া এ মামলার তিনজন আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে তাদের সকলকে আদালত কারাগারে পাঠায়। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।