ঢাকা ০১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা অগ্রিম ঈদউল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোঃ রানা খাঁন লক্ষ্মীপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেলেন ৭০ জন ভূমিহীন হাটের ও কোরবানিকৃত পশুর বর্জ্য আলাদা আলাদা ব্যবস্থাপনায় অপসারণ করা হবে : মেয়র তাপস মণিরামপুরে ১২৮ টি ভুমিহীন পরিবারের হাতে তুলে দিলেন আশ্রয়ণ প্রকল্প(০২) এর ঘর। বিসিকের উদ্যোগে “উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে বিসিকের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা সভা মতলব উত্তরে মাদক,ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে অসির সচেতনামূলক সভা নারায়ণগঞ্জের বন্দর ষষ্ঠ উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের শপথ গ্রহন ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৪ ভূমি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগেএ কর্মসূচির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে রামগঞ্জে ২টি কিশোরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা

ভুক্তভোগীরা আইনের আশ্রয় না নেয়ায় অপরাধ বাড়ছে: র‍্যাব

স্টাফ রিপোর্টার মোঃ লিটন আহমেদ

রাজধানীতে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। এছাড়া জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অনেকেই। এসব ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই কোন আইন শৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতা না হওয়ায়। সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সবাই মাদকাসক্ত। রমযান মাস থেকে এ পর্যন্ত ১৩২জন ছিনতাইকারীসহ মলম পার্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব -৩।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, হাতিরঝিল ও খিলগাঁও এলাকায় সাঁড়াশি অভিযানে সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ৪৪ জন গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব -৩।

বুধবার সকালে রাজধানীর টিকাটুলী র‍্যাব -৩ এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্যাটিলয়নের অধিনায়ক (সিও) আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‍্যাব -৩ এর উপ-অধিনায়ক মেজর রাহাত হারুন খান, মগবাজার ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর জুলকার নায়েন প্রিন্স ও স্টাফ অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস।

একটি গোয়েন্দা তথ্যের সূত্র ধরে সিও বলেন, রাজধানীতে মাসে প্রায় ৩৫টি ছিনতায়সহ মলমপার্টি ও অজ্ঞাসপার্টি ঘটনা ঘটে। রাজধানীতে ২০০ স্পাটে ৫০টি চক্রের ২০০ সদস্য এই ছিনতায় সহ নানা অপরাধ করে থাকেন। চক্রের সদস্যরা ছিনতায়ের সময় বাধা পেলে মরন আঘাত করতেও পিছায় না। চলতি বছরের পাঁচ মাসে এ পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। এসব ঘটনায় ৪১টি মামলা হয়েছে।

চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন নামে পরিচিত। সালাম পার্টি, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ও হেন্ডসেফ পার্টি। তাদের ছিনতায় ও অপরাধের ধরণও আলাদা। তারা বিভিন্ন বিভিন্ন কৌশালে কাজ করে। তবে এই চক্রের সদস্যরা অধিকাংশই গার্মেন্টসকর্মী, সিএনজি চালক ও ইট ভাটার শ্রমিক। তারা সারাদিন কাজ করে রাতে সংগঠিত হয়ে এসব অপরাধ করছে।

আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সংগঠিত হতে শুরু করেছিল এই সব অপরাধী চক্র। এছাড়া তারা বিভিন্ন গুরুর হাটকে টার্গেট করেই ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধের পরিকল্পনা করছিল বলে জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মিজু, উজ্জল, স্বাধীন, জিসান, মাসুদ, রানা মিয়া, সোহেল মিয়া, মাহফুজ শেখ, আলামিন, পংকজ কুমার ভৌমিক, বিল্লাল, আব্দুল হালিম, জিসান শান্ত, রাজিব মৃধা, শামীম, মেরাজ, সুমন, রিপন মোল্যা, ফরহাদ, রিংকু, সজিব হোসেন, আরিফ হোসেন, বেলাল হোসেন, রবিন, সাগর, ইয়াছিন, শাকিল আহমেদ সুমন, জুয়েল রানা, সাদ্দাম শেখ, শাকিব মিয়া, শান্ত, আরিফ হোসেন, পারভেজ, জালাল, সোহাগ, রাব্বি, শামীম, আবু বক্কর সিদ্দিক, রাকিব, রানা, অলীমউদ্দিন শেখ, তারেক হোসেন, নুর ইসলাম ও আজিজ।

এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি সুইচ গিয়ার, ৩টি চাকু, ৪টি ক্ষুর, ৩টি এন্টিকাটার, একটি তার, ২টি ব্লেড, ৪টি গামছা, ১৯টি বিষাক্ত মলম, ১৫টি মোবাইল ফোন, ১৪টি সীমকার্ড, ৭৬০ গ্রাম গাঁজা ও নগদ ১৪ হাজার ৬০৫টাকা উদ্ধার করা হয়।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজধানীর লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা ঘোরাফেরা করে। তারপর সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে ডাব, কোমল পানীয় কিংবা পানির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। আবার কখনও যাত্রীবেশে লঞ্চ, বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে বসে তাদের নাকের কাছে চেতনানাশক ঔষধে ভেজানো রুমাল দিয়ে যাত্রীদের অজ্ঞান করে থাকে।

সিও বলেন, বিষাক্ত পানীয় সেবন করার, বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ নেওয়ার পর যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এছাড়াও কখনও ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এরপর কোন সহৃদয় ব্যক্তি অজ্ঞান ও অসুস্থ যাত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে। চেতনানাশকের পরিমাণ বেশী হলে ওই ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফিরতে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে থাকে। অজ্ঞানপার্টির শিকার ব্যক্তি শারিরীকভাবে দুর্বল ও বয়স্ক হলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

অন্যদিকে ভূক্তভোগীর চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম লাগানোর ফলে তার দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারানোর সম্ভাবনা থাকে। অজ্ঞানপার্টির শিকার ভূক্তভোগীর চেতনা না থাকায় তিনি পরিবারের সাথে জ্ঞান ফেরার পূর্ব পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারেন না।

ছিনতাইকারীদের আর্দশ স্পষ্ট-
খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি দেখা গেছে।

অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করে না।

এ সকল অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র‍্যাব -৩ এর সিও।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি, মতিঝিল থানায় দুটি, পল্টন থানায় তিনটি, শাহবাগ থানায় দুটি ও শাহজাহানপুর থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছে র‍্যাব।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

ভুক্তভোগীরা আইনের আশ্রয় না নেয়ায় অপরাধ বাড়ছে: র‍্যাব

আপডেট টাইম ০৪:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার মোঃ লিটন আহমেদ

রাজধানীতে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। এছাড়া জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অনেকেই। এসব ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই কোন আইন শৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতা না হওয়ায়। সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সবাই মাদকাসক্ত। রমযান মাস থেকে এ পর্যন্ত ১৩২জন ছিনতাইকারীসহ মলম পার্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব -৩।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, হাতিরঝিল ও খিলগাঁও এলাকায় সাঁড়াশি অভিযানে সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ৪৪ জন গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব -৩।

বুধবার সকালে রাজধানীর টিকাটুলী র‍্যাব -৩ এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্যাটিলয়নের অধিনায়ক (সিও) আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‍্যাব -৩ এর উপ-অধিনায়ক মেজর রাহাত হারুন খান, মগবাজার ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর জুলকার নায়েন প্রিন্স ও স্টাফ অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস।

একটি গোয়েন্দা তথ্যের সূত্র ধরে সিও বলেন, রাজধানীতে মাসে প্রায় ৩৫টি ছিনতায়সহ মলমপার্টি ও অজ্ঞাসপার্টি ঘটনা ঘটে। রাজধানীতে ২০০ স্পাটে ৫০টি চক্রের ২০০ সদস্য এই ছিনতায় সহ নানা অপরাধ করে থাকেন। চক্রের সদস্যরা ছিনতায়ের সময় বাধা পেলে মরন আঘাত করতেও পিছায় না। চলতি বছরের পাঁচ মাসে এ পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। এসব ঘটনায় ৪১টি মামলা হয়েছে।

চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন নামে পরিচিত। সালাম পার্টি, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ও হেন্ডসেফ পার্টি। তাদের ছিনতায় ও অপরাধের ধরণও আলাদা। তারা বিভিন্ন বিভিন্ন কৌশালে কাজ করে। তবে এই চক্রের সদস্যরা অধিকাংশই গার্মেন্টসকর্মী, সিএনজি চালক ও ইট ভাটার শ্রমিক। তারা সারাদিন কাজ করে রাতে সংগঠিত হয়ে এসব অপরাধ করছে।

আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সংগঠিত হতে শুরু করেছিল এই সব অপরাধী চক্র। এছাড়া তারা বিভিন্ন গুরুর হাটকে টার্গেট করেই ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধের পরিকল্পনা করছিল বলে জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মিজু, উজ্জল, স্বাধীন, জিসান, মাসুদ, রানা মিয়া, সোহেল মিয়া, মাহফুজ শেখ, আলামিন, পংকজ কুমার ভৌমিক, বিল্লাল, আব্দুল হালিম, জিসান শান্ত, রাজিব মৃধা, শামীম, মেরাজ, সুমন, রিপন মোল্যা, ফরহাদ, রিংকু, সজিব হোসেন, আরিফ হোসেন, বেলাল হোসেন, রবিন, সাগর, ইয়াছিন, শাকিল আহমেদ সুমন, জুয়েল রানা, সাদ্দাম শেখ, শাকিব মিয়া, শান্ত, আরিফ হোসেন, পারভেজ, জালাল, সোহাগ, রাব্বি, শামীম, আবু বক্কর সিদ্দিক, রাকিব, রানা, অলীমউদ্দিন শেখ, তারেক হোসেন, নুর ইসলাম ও আজিজ।

এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি সুইচ গিয়ার, ৩টি চাকু, ৪টি ক্ষুর, ৩টি এন্টিকাটার, একটি তার, ২টি ব্লেড, ৪টি গামছা, ১৯টি বিষাক্ত মলম, ১৫টি মোবাইল ফোন, ১৪টি সীমকার্ড, ৭৬০ গ্রাম গাঁজা ও নগদ ১৪ হাজার ৬০৫টাকা উদ্ধার করা হয়।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজধানীর লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা ঘোরাফেরা করে। তারপর সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে ডাব, কোমল পানীয় কিংবা পানির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। আবার কখনও যাত্রীবেশে লঞ্চ, বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে বসে তাদের নাকের কাছে চেতনানাশক ঔষধে ভেজানো রুমাল দিয়ে যাত্রীদের অজ্ঞান করে থাকে।

সিও বলেন, বিষাক্ত পানীয় সেবন করার, বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ নেওয়ার পর যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এছাড়াও কখনও ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এরপর কোন সহৃদয় ব্যক্তি অজ্ঞান ও অসুস্থ যাত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে। চেতনানাশকের পরিমাণ বেশী হলে ওই ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফিরতে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে থাকে। অজ্ঞানপার্টির শিকার ব্যক্তি শারিরীকভাবে দুর্বল ও বয়স্ক হলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

অন্যদিকে ভূক্তভোগীর চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম লাগানোর ফলে তার দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারানোর সম্ভাবনা থাকে। অজ্ঞানপার্টির শিকার ভূক্তভোগীর চেতনা না থাকায় তিনি পরিবারের সাথে জ্ঞান ফেরার পূর্ব পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারেন না।

ছিনতাইকারীদের আর্দশ স্পষ্ট-
খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি দেখা গেছে।

অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করে না।

এ সকল অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র‍্যাব -৩ এর সিও।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি, মতিঝিল থানায় দুটি, পল্টন থানায় তিনটি, শাহবাগ থানায় দুটি ও শাহজাহানপুর থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছে র‍্যাব।