ঢাকা ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতা ফজলে রাব্বিসহ ১৫ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। বগুড়ায় প্রচন্ড তাপদাহে শ্রমজীবী ও পথচারীদের ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবারণে আওয়ামীলীগ নেতা দুলু বাকেরগঞ্জে ভোটের গনসংযোগ শেষে হিটস্ট্রোকে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু। টাঙ্গাইলে কাগজপত্র সঠিক না থাকায় তিন বাসকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা বাকেরগঞ্জে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিনজন নিহত। রাজধানীর জুরাইনে (,ডিএমপি,) ট্রাফিকের উদ্যোগে সাধারণ জনগণ,পথচারীদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ বরিশালে সাজানো মামলায় কারাবাস: ভুক্তভোগীর আক্ষেপ, বাদীর উল্লাস –ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে কিশোর গ্যাংয়ের ০৪ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৭ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রাসহ যাত্রী আটক চট্টগ্রামের চন্দনাইশে গৃহবধুর আত্মহত্যা

হারিয়ে যাচ্ছে লাটিম খেলা

হারিয়ে যাচ্ছে লাটিম খেলা,

মোহাম্মদ ফখর উদ্দিন
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

আমাদের শৈশব হারিয়ে গেছে।সেই সঙ্গে হারিয়ে গেছে অনেক খেলা।এখন সেসব খেলার কথা মনে হলে খেলার সথীদের কথা মনে পড়ে যায়, মনে পড় শৈশবের হারিয়ে যাওয়া খেলা আর স্মৃতির কথা। আমরা তখন বিষন্ন হয়ে যাই কিছুক্ষণের জন্য হলেও।
‘শৈশব’ শব্দটা শুনলেই কেমন যেন একটা চিরচেনা গল্পের জগৎ সামনে চলে আসে। নির্ভার, চিন্তাহীন একটা সময়। কত আনন্দ–না করেছি আমরা সে সময়! কত গল্প, কত দুষ্টুমি আর কত খেলা। যাঁরা এখন এই লেখার পাঠক, তাঁদের শৈশবের স্মৃতি এখন বেশ খানিকটা ফেকাশে হয়ে গেছে। শৈশবের কথা উঠলেই এখন খেলার সঙ্গী, খেলা, খেলার মাঠ আর কত হাজারো রকমের স্মৃতি ভেসে ওঠে মনে৷

গ্রামাঞ্চলে এক সময় লাটিম খেলার প্রচলন ছিল বেশি।কিন্ত বর্তমানে তা অনেকটা কমে গেছে৷বর্তমানের ছেলে-মেয়েরা জন্মের পর থেকে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দেখতেছে,মোবাইলে গেম দেখতেছে তারা জানতেছেনা প্রাচিনের খেলা গুলা!

লাটিম খেলতে একজন যেমন খেলতে পারে, তেমনি ৪/৫ জনও দলবদ্ধ হয়ে খেলতে পারে।একজন খেললে তার কাছে লাটিম খেলা মানে এটি কতক্ষণ ঘোরাতে পারে তা পরীক্ষা করে দেখা। আর কয়েকজন মিলে খেললে সেটা হয় প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় যে জিতে সে হেরে যাওয়া খেলোয়াড়ের লাটিমের মালিক হয়ে যায়। লাটিম সাধারণত গ্রাম শহরে সবদোকানে পাওয়া যায়। এদের কাছ থেকে ছেলেরা এগুলো কিনে আনে।

লাটিম খেলার নিয়ম : খেলার শুরুতে সমতল ভূমিতে একটি বৃত্ত আঁকা হয়। এই বৃত্ত আঁকারও একটা নিয়ম আছে। প্রথমে একটি লাটিমের সঙ্গে লেপতির এক মাথা বাধা হয়। এরপর একজন লেপতির অপর মাথা মাটিতে এক স্থানে চেপে ধরে। আরেকজন খেলোয়াড় লেপতি টানটান করে লাটিমটি মাটিস্পর্শ করে ঘুরিয়ে আনলেই লাটিমের সোঁচালো আলে দাগ বসে যায়। এতেই বৃত্ত তৈরি হয়। এরপর শুরু হয় খেলা| একেকজন খেলোয়াড় লাটিম বৃত্তের মধ্যে ঘোরানো শুরু করে।

এরপর যার লাটিমটি ঘুরতে ঘুরতে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে সবচেয়ে বেশি দূরে যায় সে
প্রথম, তারপর যারটি থাকে সে দ্বিতীয় হয়। এমনভাবে তৃতীয়, চতুর্থও নির্ধারণ হয়। এরপর চতুর্থ অবস্থানের খেলোয়াড় বৃত্তে লাটিম ঘুরিয়ে দেয়, তৃতীয় অবস্থানের জন তার লাটিম দিয়ে ঘোরানো লাটিমকে আঘাত করে বৃত্তের বাইরে আনতে পারলে লাটিমটি তার হয়ে যায়।

এরপরে তৃতীয় অবস্থানের খেলোয়াড় তার লাটিম ঘুরালে, দ্বিতীয় অবস্থানের খেলোয়াড় একইভাবে ওই লাটিমকে তার লাটিম দিয়ে আঘাত করে বৃত্তের বাইরে নিতে পারলে সেটির মালিক হয়। এরপর দ্বিতীয় খেলোয়াড়ের লাটিমকে প্রথম অবস্থানের খেলোয়াড় আঘাত করে বাইরে নিতে পারলে সেটির মালিক সে হয়। এভাবে চলতে থাকে খেলা।

তবে এ খেলায় লাটিমের আঘাতে অন্যের লাটিম ভেঙেও যায় অনেক সময়। আর সেটা করতে পারলে খেলোয়াড়রা অনেক বাহ্বা পায়। এজন্য লাটিমের আল সোঁচালো করতে পছন্দ করে খেলোয়াড়রা। এছাড়াও কে কতক্ষণ সময় ধরে লাটিম ঘোরাতে পারে সে প্রতিযোগিতাও হয় শিশুকিশোরদের মধ্যে।

গ্রামের অনেক শিশু-কিশোরই মাটিতে ঘুরানো লাটিম অদ্ভুত কৌশলে হাতের তালুতে তুলে
নিলেও তা ঘুরতে থাকে। হাতের তালুতে লাটিম ঘোরানোর প্রতিযোগিতাই কখনও কখনও মেতে ওঠে গ্রামের ছেলেরা। গ্রাম-বাংলায় এখনও বিচ্ছিন্নভাবে লাটিম খেলা দেখা যায়। হাট-বাজারে লাটিম বেচা-কেনা হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতা ফজলে রাব্বিসহ ১৫ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

হারিয়ে যাচ্ছে লাটিম খেলা

আপডেট টাইম ১১:০৮:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অক্টোবর ২০২১

হারিয়ে যাচ্ছে লাটিম খেলা,

মোহাম্মদ ফখর উদ্দিন
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

আমাদের শৈশব হারিয়ে গেছে।সেই সঙ্গে হারিয়ে গেছে অনেক খেলা।এখন সেসব খেলার কথা মনে হলে খেলার সথীদের কথা মনে পড়ে যায়, মনে পড় শৈশবের হারিয়ে যাওয়া খেলা আর স্মৃতির কথা। আমরা তখন বিষন্ন হয়ে যাই কিছুক্ষণের জন্য হলেও।
‘শৈশব’ শব্দটা শুনলেই কেমন যেন একটা চিরচেনা গল্পের জগৎ সামনে চলে আসে। নির্ভার, চিন্তাহীন একটা সময়। কত আনন্দ–না করেছি আমরা সে সময়! কত গল্প, কত দুষ্টুমি আর কত খেলা। যাঁরা এখন এই লেখার পাঠক, তাঁদের শৈশবের স্মৃতি এখন বেশ খানিকটা ফেকাশে হয়ে গেছে। শৈশবের কথা উঠলেই এখন খেলার সঙ্গী, খেলা, খেলার মাঠ আর কত হাজারো রকমের স্মৃতি ভেসে ওঠে মনে৷

গ্রামাঞ্চলে এক সময় লাটিম খেলার প্রচলন ছিল বেশি।কিন্ত বর্তমানে তা অনেকটা কমে গেছে৷বর্তমানের ছেলে-মেয়েরা জন্মের পর থেকে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দেখতেছে,মোবাইলে গেম দেখতেছে তারা জানতেছেনা প্রাচিনের খেলা গুলা!

লাটিম খেলতে একজন যেমন খেলতে পারে, তেমনি ৪/৫ জনও দলবদ্ধ হয়ে খেলতে পারে।একজন খেললে তার কাছে লাটিম খেলা মানে এটি কতক্ষণ ঘোরাতে পারে তা পরীক্ষা করে দেখা। আর কয়েকজন মিলে খেললে সেটা হয় প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় যে জিতে সে হেরে যাওয়া খেলোয়াড়ের লাটিমের মালিক হয়ে যায়। লাটিম সাধারণত গ্রাম শহরে সবদোকানে পাওয়া যায়। এদের কাছ থেকে ছেলেরা এগুলো কিনে আনে।

লাটিম খেলার নিয়ম : খেলার শুরুতে সমতল ভূমিতে একটি বৃত্ত আঁকা হয়। এই বৃত্ত আঁকারও একটা নিয়ম আছে। প্রথমে একটি লাটিমের সঙ্গে লেপতির এক মাথা বাধা হয়। এরপর একজন লেপতির অপর মাথা মাটিতে এক স্থানে চেপে ধরে। আরেকজন খেলোয়াড় লেপতি টানটান করে লাটিমটি মাটিস্পর্শ করে ঘুরিয়ে আনলেই লাটিমের সোঁচালো আলে দাগ বসে যায়। এতেই বৃত্ত তৈরি হয়। এরপর শুরু হয় খেলা| একেকজন খেলোয়াড় লাটিম বৃত্তের মধ্যে ঘোরানো শুরু করে।

এরপর যার লাটিমটি ঘুরতে ঘুরতে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে সবচেয়ে বেশি দূরে যায় সে
প্রথম, তারপর যারটি থাকে সে দ্বিতীয় হয়। এমনভাবে তৃতীয়, চতুর্থও নির্ধারণ হয়। এরপর চতুর্থ অবস্থানের খেলোয়াড় বৃত্তে লাটিম ঘুরিয়ে দেয়, তৃতীয় অবস্থানের জন তার লাটিম দিয়ে ঘোরানো লাটিমকে আঘাত করে বৃত্তের বাইরে আনতে পারলে লাটিমটি তার হয়ে যায়।

এরপরে তৃতীয় অবস্থানের খেলোয়াড় তার লাটিম ঘুরালে, দ্বিতীয় অবস্থানের খেলোয়াড় একইভাবে ওই লাটিমকে তার লাটিম দিয়ে আঘাত করে বৃত্তের বাইরে নিতে পারলে সেটির মালিক হয়। এরপর দ্বিতীয় খেলোয়াড়ের লাটিমকে প্রথম অবস্থানের খেলোয়াড় আঘাত করে বাইরে নিতে পারলে সেটির মালিক সে হয়। এভাবে চলতে থাকে খেলা।

তবে এ খেলায় লাটিমের আঘাতে অন্যের লাটিম ভেঙেও যায় অনেক সময়। আর সেটা করতে পারলে খেলোয়াড়রা অনেক বাহ্বা পায়। এজন্য লাটিমের আল সোঁচালো করতে পছন্দ করে খেলোয়াড়রা। এছাড়াও কে কতক্ষণ সময় ধরে লাটিম ঘোরাতে পারে সে প্রতিযোগিতাও হয় শিশুকিশোরদের মধ্যে।

গ্রামের অনেক শিশু-কিশোরই মাটিতে ঘুরানো লাটিম অদ্ভুত কৌশলে হাতের তালুতে তুলে
নিলেও তা ঘুরতে থাকে। হাতের তালুতে লাটিম ঘোরানোর প্রতিযোগিতাই কখনও কখনও মেতে ওঠে গ্রামের ছেলেরা। গ্রাম-বাংলায় এখনও বিচ্ছিন্নভাবে লাটিম খেলা দেখা যায়। হাট-বাজারে লাটিম বেচা-কেনা হয়।