মাতৃভূমির খবর ডেস্কঃ রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে ভোট শুরু হয়েছে, বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে। এখানে ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে।
আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রায় ৩০ বছর ধরে এই আসনটি জাপার প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও তার দল জাপার দখলে। আসনটি নিজেদের রাখতে এবারও এরশাদের মৃত্যুর পর শূন্য এ আসনে তার ছেলে রাহাগীর আল মাহি সাদ এরশাদকে (সাদ এরশাদ) দলীয় প্রার্থী করেছে জাপা।
নির্বাচনী এলাকায় আজ সাধারণ ছুটি। তবে নির্বাচনী এলাকায় কোনো পাবলিক পরীক্ষা থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাধারণ ছুটির আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জিএম শাহাতাব উদ্দিন বলেন, নগরীসহ নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল ও মোটরযান চলাচল বন্ধের পাশাপাশি বহিরাগতদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ চলবে একটানা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
মোট ভোটার ৪ লাখ ৪১ হাজার ২২৪ জন। পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৮২৩ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৪০১ জন।
উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন জানান, ১৭৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য ১৭৫ প্রিসাইডিং অফিসার, ১০২৩ সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ২০৪৬ পোলিং অফিসারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ৪৯টি ঝুঁকিপূর্ণসহ ১৭৫টি ভোটকেন্দ্রের ১০২৩টি গোপনকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।
প্রার্থী মোট ছয়জন। প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে রাহাগীর আল মাহি সাদ এরশাদ (সাদ এরশাদ) লাঙ্গল প্রতীক, বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান ধানের শীষ প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ মোটরগাড়ি, এনপিপির শফিউল আলম আম প্রতীক, গণফ্রটের কাজী শহীদুল্লাহ মাছ প্রতীক এবং খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ রংপুর জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নবম সংসদে তিনি রংপুর-১ আসনের জাপার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে গত মেয়র নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন এরশাদ।
এবার নির্বাচনে রংপুরের শক্তিশালী মহানগর জাপা এই প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, সাদ এরশাদ এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন। এর আগে রংপুরে তিনি সেভাবে কখনই যাননি।
নির্বাচনের ব্যাপারে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর জানান, আসনটি আমাদের পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এরশাদের আসন। তিনি এখানে বরাবরই জয়ী হয়েছেন। তাকে মানুষ ভালোবাসার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তার মৃত্যুর পর এখানে তার ছেলে প্রার্থী।
প্রার্থী নতুন হলেও তিনি এরশাদের ছেলে। সাদ এরশাদ যখন মাঠ চষে বেড়িয়েছেন তখন সেটি আমরা লক্ষ করেছি। বিপুল ভোটের ব্যবধানে লাঙ্গল প্রতীক জয়ী হবে। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তুলছেন, এটা ঠিক নয়। আমরা আচরণবিধি মেনে প্রচার চালিয়েছি।
বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু জানান, জাতীয় পার্টি মানুক আর না মানুক বিএনপির প্রার্থী এখানে বড় ধরনের ফ্যাক্টর। আমরা সব বাধা পেরিয়ে মাঠে প্রচার চালিয়েছি। মানুষ শুধু চেয়েছে ভোটের গ্যারান্টি। এই গ্যারান্টি যদি নির্বাচন কমিশন দিতে পারে, তা হলে বিএনপির বিজয় এখানে নিশ্চিত।
জাপার বিদ্রোহী প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। কারণ জাপার একটি বড় অংশ ও এখানকার সাধারণ মানুষ আমার সঙ্গে আছে। মানুষ স্থানীয় প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চায়।