ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

শরীয়তপুরে চলছে কৃষি জমি ধ্বংসের মহোৎসব।

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর জেলা বেশিরভাগ উপজেলায়ই কৃষি নির্ভর আর ছোট্র এ জেলায় গত দশ বছরে জেলার আয়তনের তুলনায় ব্যাপক হারে কৃষি জমি নষ্ট করা হয়েছে।

ড্রেজারের মাধ্যমে বালু দিয়ে ভরাট করে ও শত শত মাছ চাষের ঘের তেরী করে দুই ফসলি তিন ফসলি কৃসি জমি নষ্ট করার মহোৎসবে মেতেছেন এক শ্রেনীর প্রভাবশালীরা।

যদিও সংশ্লিষ্টদের প্রতি সরকারের নির্দেশনা রয়েছে যেকোনো উপায়ে কৃষি জমি নষ্ট করা যাবেনা।

জেলার সদর ও জাজিরা উপজেলায় ড্রেজিং এবং ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, নড়িয়া, গোসাইরহাট উপজেলায় মাছ চাষের ঘের তৈরী করা হচ্ছে ব্যাপক হারে।

এই ড্রেজার ও মাছের ঘের ব্যবসায়ীরা এতোটাই ভয়ংকর যে তাদের স্বার্থের প্রয়োজনে মানুষকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করেনা।

গত ৩ ফেব্রয়ারী ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারা বুনিয়ার ইউনিয়নের মাল বাজার এলাকায় খাশ জমিতে অবৈধভাবে মাছ চাষের ঘের তৈরীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক হুংকার পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক সাংবাদিক খোরশেদ আলম বাবুলসহ তার সহকর্মীদের উপর হামলা করে দক্ষিণ তারা বুনিয়ার চেয়ারম্যান শাহ জালাল মালের সন্ত্রাসী বাহিনী।

এদিকে শরীয়তপুর জেলা শহর জুড়ে চলছে ড্রেজারের নৈরাজ্য, ড্রেজার দিয়ে এতিহ্যবাহী দিঘী, কৃষি জমি, খাল ভরাট করে ফেলছে ভূমি খেকোরা। অভিযোগ রয়েছে এই অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের ঐতিহ্যবাহী সরকারী পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করার।

এসব ড্রেজারের পাইপ শহরের বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার এবং ছয় গাঁও ইউনিয়নের কৃষি জমি ধ্বংস করে চলছে মাছের ঘের তৈরীর মহোৎসব।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, এদুটি ইউনিয়নের লাকার্তা, ভেনোপা, ছয় গাঁও গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নামমাত্র মুল্যে দিয়ে দখল করে মাছ চাষের জন্য প্রায় কৃষি জমি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলছে বলে জানান কৃষকরা।

কৃষকদের অভিযোগ এতে স্থানীয় কৃষকরা পড়েছে বিপাকে, ধানসহ দুই ফসলি জমি কেটে এধরনের বিশাল বিশাল মাছের ঘের নির্মান করে কৃষি জমি নষ্ট করে, কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যহত করায়, বেকার হয়ে পড়েছে অসংখ্য কৃষক।

এসব ঘের তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ কিংবা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও বেশিরভাগ ঘেরেরই নেই অনুমতি।

এছাড়া দু-একটি ঘের তৈরীর অনুমতি থাকলেও তারা শর্ত না মেনে মাটির উপরিভাগ কেটে অন্যত্র সরিয়ে ফেলায়, চার মাস ধান চাষ করার কথা থাকলেও তা করতে পারছেননা মাছ চাষীরা

কোনো কৃষক মাছ চাষীদের জমি না দিলে সে জমিকে এমন ভাবে জলাবদ্ধতায় ফেলে রাখে যাতে সে কোনো ফসল করতে না পারে এবং জমিটি যাতে ঘের তৈরীতে দিতে বাধ্য হয় কৃষক।

এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা ইসলাম বলেন, এধরণের কোনো মাছ চাষের ঘের তৈরীতে আমাদের অনুমতি কেউ নিতে আসেনা, আমরা ইচ্ছে করলেই ঘের তৈরী করা আটকাতে পারিনা, তারপরেও আমরা চেষ্টা করি যাতে কৃষকরা তাদের জমি মাছ চাষের ঘের তৈরীতে না দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাফীস বলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ছয়গাঁ ইউনিয়নে বেশিরভাগ জমিতে মাছ চাষের ঘের তৈরী করে ফেলেছে, আমরা চেষ্টা করছি এ উপজেলার এ’দুটি ইউনিয়নের বাইরে যেনো এধরনের মাছ চাষের ঘের তৈরী করতে না পারে। এছাড়া আমাদের কাছে এধরণের অভিযোগ আসলে মাছ চাষের ঘের তৈরীর কাজ বন্ধ করাসহ জড়িমানা করি। তিনি আরো জানান, এসব ঘের তৈরীর জন্য বিভিন্ন রাজনেতিক নেতাদের হস্তক্ষেপের কারনে অনেকটা দ্বিধায় পড়তে হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

শরীয়তপুরে চলছে কৃষি জমি ধ্বংসের মহোৎসব।

আপডেট টাইম ১০:০৮:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর জেলা বেশিরভাগ উপজেলায়ই কৃষি নির্ভর আর ছোট্র এ জেলায় গত দশ বছরে জেলার আয়তনের তুলনায় ব্যাপক হারে কৃষি জমি নষ্ট করা হয়েছে।

ড্রেজারের মাধ্যমে বালু দিয়ে ভরাট করে ও শত শত মাছ চাষের ঘের তেরী করে দুই ফসলি তিন ফসলি কৃসি জমি নষ্ট করার মহোৎসবে মেতেছেন এক শ্রেনীর প্রভাবশালীরা।

যদিও সংশ্লিষ্টদের প্রতি সরকারের নির্দেশনা রয়েছে যেকোনো উপায়ে কৃষি জমি নষ্ট করা যাবেনা।

জেলার সদর ও জাজিরা উপজেলায় ড্রেজিং এবং ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, নড়িয়া, গোসাইরহাট উপজেলায় মাছ চাষের ঘের তৈরী করা হচ্ছে ব্যাপক হারে।

এই ড্রেজার ও মাছের ঘের ব্যবসায়ীরা এতোটাই ভয়ংকর যে তাদের স্বার্থের প্রয়োজনে মানুষকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করেনা।

গত ৩ ফেব্রয়ারী ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারা বুনিয়ার ইউনিয়নের মাল বাজার এলাকায় খাশ জমিতে অবৈধভাবে মাছ চাষের ঘের তৈরীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক হুংকার পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক সাংবাদিক খোরশেদ আলম বাবুলসহ তার সহকর্মীদের উপর হামলা করে দক্ষিণ তারা বুনিয়ার চেয়ারম্যান শাহ জালাল মালের সন্ত্রাসী বাহিনী।

এদিকে শরীয়তপুর জেলা শহর জুড়ে চলছে ড্রেজারের নৈরাজ্য, ড্রেজার দিয়ে এতিহ্যবাহী দিঘী, কৃষি জমি, খাল ভরাট করে ফেলছে ভূমি খেকোরা। অভিযোগ রয়েছে এই অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের ঐতিহ্যবাহী সরকারী পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করার।

এসব ড্রেজারের পাইপ শহরের বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার এবং ছয় গাঁও ইউনিয়নের কৃষি জমি ধ্বংস করে চলছে মাছের ঘের তৈরীর মহোৎসব।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, এদুটি ইউনিয়নের লাকার্তা, ভেনোপা, ছয় গাঁও গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নামমাত্র মুল্যে দিয়ে দখল করে মাছ চাষের জন্য প্রায় কৃষি জমি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলছে বলে জানান কৃষকরা।

কৃষকদের অভিযোগ এতে স্থানীয় কৃষকরা পড়েছে বিপাকে, ধানসহ দুই ফসলি জমি কেটে এধরনের বিশাল বিশাল মাছের ঘের নির্মান করে কৃষি জমি নষ্ট করে, কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যহত করায়, বেকার হয়ে পড়েছে অসংখ্য কৃষক।

এসব ঘের তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ কিংবা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও বেশিরভাগ ঘেরেরই নেই অনুমতি।

এছাড়া দু-একটি ঘের তৈরীর অনুমতি থাকলেও তারা শর্ত না মেনে মাটির উপরিভাগ কেটে অন্যত্র সরিয়ে ফেলায়, চার মাস ধান চাষ করার কথা থাকলেও তা করতে পারছেননা মাছ চাষীরা

কোনো কৃষক মাছ চাষীদের জমি না দিলে সে জমিকে এমন ভাবে জলাবদ্ধতায় ফেলে রাখে যাতে সে কোনো ফসল করতে না পারে এবং জমিটি যাতে ঘের তৈরীতে দিতে বাধ্য হয় কৃষক।

এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা ইসলাম বলেন, এধরণের কোনো মাছ চাষের ঘের তৈরীতে আমাদের অনুমতি কেউ নিতে আসেনা, আমরা ইচ্ছে করলেই ঘের তৈরী করা আটকাতে পারিনা, তারপরেও আমরা চেষ্টা করি যাতে কৃষকরা তাদের জমি মাছ চাষের ঘের তৈরীতে না দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাফীস বলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ছয়গাঁ ইউনিয়নে বেশিরভাগ জমিতে মাছ চাষের ঘের তৈরী করে ফেলেছে, আমরা চেষ্টা করছি এ উপজেলার এ’দুটি ইউনিয়নের বাইরে যেনো এধরনের মাছ চাষের ঘের তৈরী করতে না পারে। এছাড়া আমাদের কাছে এধরণের অভিযোগ আসলে মাছ চাষের ঘের তৈরীর কাজ বন্ধ করাসহ জড়িমানা করি। তিনি আরো জানান, এসব ঘের তৈরীর জন্য বিভিন্ন রাজনেতিক নেতাদের হস্তক্ষেপের কারনে অনেকটা দ্বিধায় পড়তে হয়।