রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
আসন্ন ৩০ জানুয়ারি রামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌর সভার ৯টি ওয়ার্ডে মেযর কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার- প্রচারণা ডামাঢোল উৎসব মুখর ও সরগম হয়ে উঠেছে।
এ নির্বাচনে ৪জন মেয়র ও ৬৮জন কাউন্সিলর প্রার্থী গত ১১ জানুয়ারী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীরা পৌর এলাকায় নিজ নিজ ওয়ার্ডে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে ভোট প্রার্থনা করে চলেছেন গ্রাম মহল্লা বাড়ি ঘরের দ্বারে দ্বারে। পৌরসভার সব ওয়ার্ডে হাট বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে সব প্রার্থীদের প্রচারণার প্রতীক পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
হাটবাজার চায়ের দোকান থেকে শুরুকরে শহরের বিভিন্ন অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ পাড়া মহল্লায় এখন শুধু নির্বাচনী আলোচনা। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী উৎফুল্ল মেজাজে রয়েছেন।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিদিন পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী শো-ডাউন, উঠান বৈঠক, গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ, ভোটাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় অব্যাহত রেখেছেন ।
অপরদিকে, বিএনপি’র মনোনীত মেয়র প্রার্থী পৌর বিএপির যুগ্ন-আহবায়ক এডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাচ্চু গোপনে আড়ালে আবডালে থেকে ডুব সাতারের মতো নিরবে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রচার- প্রচারণায় চালিয়ে যাচ্ছেন।
জাতীয় পাটির মনোনীত মেয়র প্রার্থী পৌর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক, হাজী মো. মহসিন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তার প্রচার-প্রচারণা শুধু শহরে মাইকিং ও পোষ্টার সাটানো ছাড়া কোন গণসংযোগ দেখা যায়নি।
ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মনোনীত মেয়র প্রার্থী পৌর ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন দেওয়ান হাতপাকা প্রতীকে মাইকিং শহরে মাইকিং ও পোষ্টার সাটিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে আমিসহ চারজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম।
এদের মধ্য থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে দল আমাকে মনোনয়ন দেয়ায় আমি খুবই আনন্দিত এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। গত পাঁচ বছরে আমি মেয়র থাকা অবস্থায় রামগঞ্জ পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা গড়ার লক্ষে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, হাটবাজারে স্থাপনা, পানি সরবরাহ, বিদ্যুত ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হয়েছে। আমি শতভাগ আশাবাদী এবারো নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয় হবো। বিজয় হলে রামগঞ্জ পৌরসভাকে উন্ন্য়নের মাধ্যমে মডেল পৌর সভার রূপাস্তরিত করার চেষ্টা করবো। পৌরসভার নাগরিক সেবার মান বাড়াতে পৌর ট্যাক্স, ট্রেড লাইন্সেসসহ নানা ক্ষেত্রে সেবা যেন আরো ভালো হয় সে দিকে বিচক্ষণ দৃষ্টি থাকবে আমার। আমি পৌর বাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করি তারা আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
অন্যদিকে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী পৌর বিএপির যুগ্ন-আহবায়ক এডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাচ্চু বলেন,আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরা অনেকে রাজনৈতিক মামলার কবলে পড়ে কেউ কারাগারে কেউ গ্রেফতারের ভয়ে এলাকায় ছাড়া। অনেকে গ্রেফতার এড়াতে গা-ঢাকা দিয়েছেন। এ অবস্থায় পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার অপেক্ষায় আছেন। এ পৌরসভা নির্বাচনে রামগঞ্জ পৌরসভা বিএনপির সব ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন। আমি কিছু সংখ্যক নেতাকর্মীকে নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যদি সুষ্ঠু শান্তিপূর্ন ভোট হয় আমি ধানের শীষ প্রতীকে বিজয় হওয়ার আশাবাদী। আমি সৎ, আদর্শ ন্যায়নীতি ও স্বচ্চ রাজনীতি বিশ্বাস করি। পৌর এলাকার জনগনের কারো সঙ্গে আমার কোন দ্বন্দ্ব বিবাদ নেই। তাই আমাদের ভোটারা যদি ঠিকমত কেন্দ্রে যেতে পারেন এবং সঠিক উপায়ে ভোট প্রদান করতে পারেন আমি বিজয় হবো বলে আশাবাদী।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজী মো. মহসিন ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী জাকির হোসেন দেওয়নাকে নির্বাচনী গণসংযোগে তেমন দেখা যাচ্ছে না। শুধু শহরে চলছে প্রচার মাইকিং । এ ছাড়া শহরে কিছু সর্বত্র স্থানে দেখা গেছে নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গল ও হাত পাকা প্রতীকসহ ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাউন্সিলার প্রার্থীদের সাঁটানো পোষ্টার ।
উপজেলা নির্বাচন অফিসের নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ আবু তাহের জানান, আগামী ৩০ জানুয়ারি রামগঞ্জ পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরণের প্রস্তুতি চলছে। রামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে মোট ২৬ হাজার ৫৪২জন ভোটার, ১৪টি কেন্দ্রে ভোট প্রদান করবেন। এ যাবৎ কোনো প্রার্থী আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি।