আরমান মিয়া, মুরাদনগর উপজেলা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে ফেসবুকের পোষ্ট নিয়ে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়ন এলাকায় সকল প্রকার সভা সমাবেশসহ গণ জমায়েত নিষিদ্ধ করে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় ওই ইউনিয়নসহ পাশের কোরবানপুর এলাকায় বিপুল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এদিকে রোববার কোরবানপুর গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ১২৮৫ জনকে এহজহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরো এক হাজারজনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার ৫ জনকে গ্রেপ্তারের পর ভ্রাম্যমান আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,কোরবানপুর গ্রামের শিক্ষক শংকর দেবনাথ এবং আন্দিকুট গ্রামের অনিক ভৌমিক নামের দুই ব্যাক্তি তাদের ফেসবুক আইডি থেকে মহানবীকে (সা:) নিয়ে ফ্রান্সে প্রদর্শিত ব্যঙ্গচিত্রকে সমর্থন করে কমেন্ট করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হলে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এতে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় এনিয়ে পুর্বধইর পুর্ব ইউপির চেয়ারম্যান বন কুমার শীবসহ ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক বাড়ির ৫টি ঘরে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে রোবার রাতেই জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সোমবার দুপুরে কোরবানপুর এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে সার্বিক সহযোগিতার উদ্যোগ গ্রহন করেন কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনের সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এফসিএ। একই সময় চট্রগ্রাম রেঞ্চের ডিআইজি মো: আনোয়ার হোসেনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ বন কুমার শীব, স্বন্দ্বীপ কুমার শীব ও লিটন দেবনাথ বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় মোট ১২৮৫ জনকে আসামী করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার ৫ জনকে গ্রেফতারের পর বিভিন্ন মেযাদে কারাদন্ড দেয়া হয়। ভ্রাম্যমান আদালতে কোরবানপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে মো: বাবু মিয়া(৩০) কে ৬মাস, মো: এরশাদ(৪০)কে ১৮ মাস, একই গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে বেলাল উদ্দিন(৫০)কে ১৮ মাস, মৃত আজিজ মিয়ার ছেলে এনু মিয়া(৪৮)কে ৬ মাস এবং নুরুল ইসলামের ছেলে মো: মালু মিয়া(৩৮)কে ১৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল।
এবিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, সোমবার আন্দিকোট এলাকায় সভা-সমাবেশ ও বিশৃঙ্খলা হতে পারে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই ইউনিয়ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তবে পুলিশ-প্রশাসনের সতর্ক অবস্থানের কারণে সেখানে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি। তারপরও আমাদের সার্বিক নজরদারি অব্যাহত আছে।