মোঃ মহিউদ্দিন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা তাইন্দং ও গোমতী ইউনিয়ন থেকে ১৮৬ বস্তা সরকারি চাউল উদ্ধার করেছে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ,এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আকতার (ববি)।
মাটিরাংগার তাইন্দং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিনের ভাড়া গুদামে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজি ওজনের ১৫৮টি বস্তা এবং গোমতিবাজারের বলিচন্দ্র কার্বারিপাড়ার চাউল ব্যবসায়ী আবুল হাসেমের বাড়ি থেকে, কালো বাজারে বিক্রি হওয়া ২৮ বস্তা সরকারি চাউল উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোমতি ইউনিয়নে নির্বাচিত ৩‘শ ৩৫ জন কার্ডধারীর কাছে ১০ টাকা দরে বিক্রির জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজি ওজনের ২৮ টি বস্তা সরকারি চাল গোপনে চুরি হওয়ার খবর পেয়ে তা স্থানীয়রা উদ্ধার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাল জব্দ করেন মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আকতার (ববি)। এসময় সরকারি চাল ক্রয় করার অভিযোগে মো. আবুল হাসেমকে আটক করা হয়।
এছাড়াও তাইন্দং ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জামাল উদ্দিনের মসজিদ মার্কেটের ভাড়া গুদামে সরকারি চাল মজুদ আছে বলে স্থানীয়রা প্রশাসনকে খবর দেয়। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ। অভিযানকালে ইউপি সদস্য মো. জামাল উদ্দিনের গুদাম থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুদা হবে নিরুদ্দেশ’ লেখা ৩০ কেজি ওজনের ১৫৮ বস্তা চাল জব্দ করে।
মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.শামসুদ্দিন ভুঁইয়া জনান,উদ্ধার করা চাল মাটিরাঙা থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন তাইন্দং ৩ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন। এছাড়াও গোমতি ইউনিয়নের বিক্রয়কারী সংশ্লিষ্ট ডিলার মো. আব্দুল মোমিন ও পলাতক রয়েছে। তিনি গোমতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মনির হোসেনের ছোট ভাই। সে স্থানীয় যুবলীগ নেতা।
জানা গেছে, ইউনিয়ন পর্যায়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা মূল্যে চাল বিক্রির জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্ত সেই চাল নির্ধারিত কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি না করে ডিলার মো. আবদুল মোমিন ২৮ বস্তা চাল স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল হাসেমের কাছে বিক্রি করে। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা ক্রেতার বাড়ি থেকে ওই চাল উদ্ধার করে।
মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, ‘খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল কালো বাজারে বিক্রির খবর পেয়ে গোমতি ইউনিয়ন থেকে ২৮ বস্তা এবং তাইন্দং ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিনের ভাড়া গুদামে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজি ওজনের ১৫৮টি বস্তা চাল উদ্ধার করেছি। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ডিলার ও ইউপি সদস্য এবং ক্রেতার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হবে । এছাড়াও সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারের কোন গাফিলতি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। কোন ধরনের খাদ্য শষ্য বিতরণে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।