ঢাকা ০৩:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন “বাংলাদেশের হিট অফিসার কী করছেন? হিট নিয়ন্ত্রণে “ অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের নগদ অর্থ সহায়তায়: আ জ ম নাসির “স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা ঢাকা মতিঝিলে ইসতেস্কার নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার।

মহাধুমধামে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী-‘রূপকথার বিবাহ উৎসব’

সাবিরুর গণি (ভারত) :  গত ১৮ইং অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত্র ৮টা সৈয়দপুর উপজেলার পুরাতন বাবুপাড়ায় আলোর রোশনায় বাজি পটকার আওয়াজ ‘বিবাহ’ উৎসবে পরিণত হলো। দু’বছর আগে বাংলাদেশের সৈয়দপুর পুরাতন বাবুপাড়ায় বাসিন্দা ফরিদা ইয়াসমিনের (নয়ন) দুই মেয়েকে নিয়ে ভারতের কলকাতা (পার্ক সারকাস) এলাকায় এক বিবাহ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়। সেখানেই (বিবাহ অনুষ্ঠানে) মন দেওয়া নেওয়া হয়ে যায় কলকাতার ব্যবসায়ী ছেলে কাজি উজ্জ্বলের সঙ্গে নয়নের বড় মেয়ে কাজি আমিরার।

ভালবাসার বেড়া-কাঁটাতার, বর্ডার পুলিশ, বি.এস.এস, বি.ডি.আর কিছুই মানে না কোন চিন্তা না করে আমিরা মাকে তার মতামত জানায়, স্বামী হারা মার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে দুই মেয়েকে নিয়ে তার স্বপ্নের কি হবে, বড় মেয়েকে ডাক্তার করা ইচ্ছা, ছোট মেয়ের এয়ার হোস্টেস হওয়ার বাসনা। ফরিদা ইয়াসমিন ও সেই ভাবে লেখাপড়ায় খেলাধুলায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ তার ছন্দপতন।

স্বাধীনচেতা মা ফরিদা ইয়াসমিন ভারতের ছেলের সাথে ফোনালাপ করে এবং তার একটা শর্ত মানার জন্য অনুরোধ করে যে, মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় নিয়ে যেতে হবে। ভারতের ছেলে কাজি উজ্জ্বল শর্ত মেনে নেওয়ার ফলে বিয়ের দিন ঠিক হয় ১৬ই অক্টোবর গায়ে হলুদ, ১৭ই অক্টোবর মেহেন্দীর অনুষ্ঠান ও ১৮ই অক্টোবর বিবাহ, ভারত থেকে ছেলের ৪০ জন বরযাত্রী, বরের ১৫ বছর শুয়ে পড়ে থাকা প্যারালাইসিস মা, সদস্য আই.সি.সি.ইউ থেকে বাহির করা হার্টের রুগী বাবা কাজি আরিফ নিয়ে হিলি সীমান্ত দিয়ে তার সঙ্গে নিমন্ত্রিত এই সাংবাদিক সাবিরুল গণি তার পরিবারকে নিয়ে সৈয়দপুরের পুরাতন বাবুপাড়ায় ১৬ তারিখের রাত্রীবেলা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে উপস্থি হয়। জমাকালো নাচ গানের মধ্য দিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান মধ্যরাতে শেষ হলো। ফরিদা ইয়াসমিন অতিথি পরায়ন মহিলা ৬ দিন বাবুর্চি দিয়ে রান্না করে, সকাল, দুপুর, বিকাল, রাত্র এলাহি খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করে রাত্রে মেহমানদের হোটেল ও নিজ বাসায় তোষক, বালিশ, চাদরের বিপুল আয়োজন করে রাত্রীযাপনের সুযোগ করে দেয়, বিবাহের দিন হলো ভারতের বরযাত্রী ও অন্যান্য অতিথিদের আপ্যায়নের তদারকি করতে দেখা গেলো সৈয়দুপুর উপজেলার চেয়ারম্যান মোখসেদুল মোমিন, উপজেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নুরুল হক সাহেব ও জেলার নামী স্কুল লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম কিশোর (অবাক করা বিষয় এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা সাড়ে চার হাজার) আরও আন্তরিকতায় আপ্যায়নে ডাক্তার, পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের। এ যেন ভারত বাংলাদেশের মেলবন্ধনের অনুষ্ঠান, ভারতের চটুল হিন্দিগানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ভাটিয়ালী গানের নাচ। অতিথিদের জমকালো চক্চকে পোশাক পরিচ্ছদ বরের খানদানি বাদশাহী শিরওয়ানি পাগড়ী। ভারতে ৪০ জন বরযাত্রীদের এলাকাভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী সব পোশাক, এলাহি খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থার সঙ্গে বরের থালায় বাংলাদেশের ট্রেডিশন ৮/১০ কিলো ওজনের আস্ত একটা রোস্টেট খাসি, হুল্লোড়, হাসি, কান্নার মধ্য দিয়ে শেষ রাতে যেন রূপকথার বিয়ের সমাপ্তি হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন

মহাধুমধামে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী-‘রূপকথার বিবাহ উৎসব’

আপডেট টাইম ০১:০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৮

সাবিরুর গণি (ভারত) :  গত ১৮ইং অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত্র ৮টা সৈয়দপুর উপজেলার পুরাতন বাবুপাড়ায় আলোর রোশনায় বাজি পটকার আওয়াজ ‘বিবাহ’ উৎসবে পরিণত হলো। দু’বছর আগে বাংলাদেশের সৈয়দপুর পুরাতন বাবুপাড়ায় বাসিন্দা ফরিদা ইয়াসমিনের (নয়ন) দুই মেয়েকে নিয়ে ভারতের কলকাতা (পার্ক সারকাস) এলাকায় এক বিবাহ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়। সেখানেই (বিবাহ অনুষ্ঠানে) মন দেওয়া নেওয়া হয়ে যায় কলকাতার ব্যবসায়ী ছেলে কাজি উজ্জ্বলের সঙ্গে নয়নের বড় মেয়ে কাজি আমিরার।

ভালবাসার বেড়া-কাঁটাতার, বর্ডার পুলিশ, বি.এস.এস, বি.ডি.আর কিছুই মানে না কোন চিন্তা না করে আমিরা মাকে তার মতামত জানায়, স্বামী হারা মার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে দুই মেয়েকে নিয়ে তার স্বপ্নের কি হবে, বড় মেয়েকে ডাক্তার করা ইচ্ছা, ছোট মেয়ের এয়ার হোস্টেস হওয়ার বাসনা। ফরিদা ইয়াসমিন ও সেই ভাবে লেখাপড়ায় খেলাধুলায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ তার ছন্দপতন।

স্বাধীনচেতা মা ফরিদা ইয়াসমিন ভারতের ছেলের সাথে ফোনালাপ করে এবং তার একটা শর্ত মানার জন্য অনুরোধ করে যে, মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় নিয়ে যেতে হবে। ভারতের ছেলে কাজি উজ্জ্বল শর্ত মেনে নেওয়ার ফলে বিয়ের দিন ঠিক হয় ১৬ই অক্টোবর গায়ে হলুদ, ১৭ই অক্টোবর মেহেন্দীর অনুষ্ঠান ও ১৮ই অক্টোবর বিবাহ, ভারত থেকে ছেলের ৪০ জন বরযাত্রী, বরের ১৫ বছর শুয়ে পড়ে থাকা প্যারালাইসিস মা, সদস্য আই.সি.সি.ইউ থেকে বাহির করা হার্টের রুগী বাবা কাজি আরিফ নিয়ে হিলি সীমান্ত দিয়ে তার সঙ্গে নিমন্ত্রিত এই সাংবাদিক সাবিরুল গণি তার পরিবারকে নিয়ে সৈয়দপুরের পুরাতন বাবুপাড়ায় ১৬ তারিখের রাত্রীবেলা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে উপস্থি হয়। জমাকালো নাচ গানের মধ্য দিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান মধ্যরাতে শেষ হলো। ফরিদা ইয়াসমিন অতিথি পরায়ন মহিলা ৬ দিন বাবুর্চি দিয়ে রান্না করে, সকাল, দুপুর, বিকাল, রাত্র এলাহি খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করে রাত্রে মেহমানদের হোটেল ও নিজ বাসায় তোষক, বালিশ, চাদরের বিপুল আয়োজন করে রাত্রীযাপনের সুযোগ করে দেয়, বিবাহের দিন হলো ভারতের বরযাত্রী ও অন্যান্য অতিথিদের আপ্যায়নের তদারকি করতে দেখা গেলো সৈয়দুপুর উপজেলার চেয়ারম্যান মোখসেদুল মোমিন, উপজেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নুরুল হক সাহেব ও জেলার নামী স্কুল লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম কিশোর (অবাক করা বিষয় এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা সাড়ে চার হাজার) আরও আন্তরিকতায় আপ্যায়নে ডাক্তার, পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের। এ যেন ভারত বাংলাদেশের মেলবন্ধনের অনুষ্ঠান, ভারতের চটুল হিন্দিগানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ভাটিয়ালী গানের নাচ। অতিথিদের জমকালো চক্চকে পোশাক পরিচ্ছদ বরের খানদানি বাদশাহী শিরওয়ানি পাগড়ী। ভারতে ৪০ জন বরযাত্রীদের এলাকাভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী সব পোশাক, এলাহি খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থার সঙ্গে বরের থালায় বাংলাদেশের ট্রেডিশন ৮/১০ কিলো ওজনের আস্ত একটা রোস্টেট খাসি, হুল্লোড়, হাসি, কান্নার মধ্য দিয়ে শেষ রাতে যেন রূপকথার বিয়ের সমাপ্তি হয়।