ঢাকা ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন “বাংলাদেশের হিট অফিসার কী করছেন? হিট নিয়ন্ত্রণে “ অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের নগদ অর্থ সহায়তায়: আ জ ম নাসির “স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা ঢাকা মতিঝিলে ইসতেস্কার নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার।

বাবা-মার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা

শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরে তাসলিম খান (৪৩) নামে এক অবস্থাসম্পন্ন ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা হয়েছে অসহায় বাবা-মার। সোমবার (২৬ আগস্ট ) জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কার্যক্রমের আওতায় ওই বাবা-মার ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা হয়। অসহায় সেই পিতা-মাতা হলেন নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেন খান (৬৬) ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম (৬০)। জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী জজ) জুলফিকার হোসাইন রনির সভাপতিত্বে আসামি পক্ষে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার ও বাদীপক্ষের লিগ্যাল এইডের প্যানেল এডভোকেট শাহ মোঃ শাহীন হাসান খানের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের আলোচনায় বাবা-মাকে প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা ভরণ- পোষণসহ প্রয়োজনীয় পোষাক-পরিচ্ছদ প্রদানের সিদ্ধান্তে বিষয়টি সুরাহা হয়। আর এই সিদ্ধান্তের আলোকে পরে আমলী আদালত থেকে বাবা-মার ভরণ-পোষণের মামলায় পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন লাভ করেন সেই অবস্থাসম্পন্ন ছেলে । জানা যায়, নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকার দরিদ্র কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন খান ও মমতাজ বেগম দম্পতির ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। ৩ মেয়েরই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা স্বামীর বাড়িতে এবং ২ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী-ঠিকাদার ও ছোট ছেলে ঢাকাতেই পেশায় শ্রমিক। মোয়াজ্জেম হোসেন খানের বসতভিটা ছাড়া সহায়-সম্পদ খুব একটা নেই। ফলে খুব কষ্টেই সংসার চলছিল ওই দম্পতির। তার উপর গত প্রায় এক বছর যাবত বার্ধক্যজনিতসহ নানা রোগে ভুগছেন মোয়াজ্জেম হোসেন খান। ফলে প্রতিমাসে প্রায় ৪ হাজার টাকার চিকিৎসা ব্যয়সহ সংসারের খরচ নির্বাহ করা একেবারেই কঠিন হয়ে পড়ে। ছোট ছেলের কষ্টের সংসার থেকে বাবা-মার খরচের জন্য মাঝে-মধ্যে সামান্য কিছু দিলেও অবস্থাসম্পন্ন বড় ছেলে বেশ কিছুদিন থেকেই বেঁকে বসে ভরণ-পোষণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় তারা প্রায় ৩ মাস আগে শেরপুরের জজ আদালত ভবনে থাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের দ্বারস্থ হন। আর তাতে সাড়া দিয়ে জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী জজ) জুলফিকার হোসাইন রনি উভয় পক্ষকে নিয়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু বারবার অবগত করার পরও সাড়া দিচ্ছিলেন না অবস্থাসম্পন্ন ছেলে তাসলিম খান। ওই অবস্থায় লিগ্যাল এইড অফিসের পরামর্শে গত ৩১ জুলাই শেরপুরের আমলী আদালতে ছেলে তাসলিম খান ও ছেলেরবধূ ডলি আক্তার (৩৫) কে আসামি করে হতভাগ্য মা মমতাজ বেগম বাদী হয়ে স্বামীসহ তার ভরণ-পোষণের দাবিতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশের প্রেক্ষিতে ২৬ আগস্ট ছেলেরবধূ অসুস্থতার অজুহাতে অনুপস্থিত থাকলেও ছেলে তাসলিম খান হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ সুলতানা আসামিকে পুলিশ হেফাজতে রেখে উভয় পক্ষকে নিয়ে লিগ্যাল এইড অফিসে বসে আপোস-মিমাংসার সুযোগ দেন ।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন

বাবা-মার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট টাইম ০৬:১৪:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০১৯

শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরে তাসলিম খান (৪৩) নামে এক অবস্থাসম্পন্ন ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা হয়েছে অসহায় বাবা-মার। সোমবার (২৬ আগস্ট ) জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কার্যক্রমের আওতায় ওই বাবা-মার ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা হয়। অসহায় সেই পিতা-মাতা হলেন নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেন খান (৬৬) ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম (৬০)। জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী জজ) জুলফিকার হোসাইন রনির সভাপতিত্বে আসামি পক্ষে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার ও বাদীপক্ষের লিগ্যাল এইডের প্যানেল এডভোকেট শাহ মোঃ শাহীন হাসান খানের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের আলোচনায় বাবা-মাকে প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা ভরণ- পোষণসহ প্রয়োজনীয় পোষাক-পরিচ্ছদ প্রদানের সিদ্ধান্তে বিষয়টি সুরাহা হয়। আর এই সিদ্ধান্তের আলোকে পরে আমলী আদালত থেকে বাবা-মার ভরণ-পোষণের মামলায় পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন লাভ করেন সেই অবস্থাসম্পন্ন ছেলে । জানা যায়, নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকার দরিদ্র কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন খান ও মমতাজ বেগম দম্পতির ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। ৩ মেয়েরই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা স্বামীর বাড়িতে এবং ২ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী-ঠিকাদার ও ছোট ছেলে ঢাকাতেই পেশায় শ্রমিক। মোয়াজ্জেম হোসেন খানের বসতভিটা ছাড়া সহায়-সম্পদ খুব একটা নেই। ফলে খুব কষ্টেই সংসার চলছিল ওই দম্পতির। তার উপর গত প্রায় এক বছর যাবত বার্ধক্যজনিতসহ নানা রোগে ভুগছেন মোয়াজ্জেম হোসেন খান। ফলে প্রতিমাসে প্রায় ৪ হাজার টাকার চিকিৎসা ব্যয়সহ সংসারের খরচ নির্বাহ করা একেবারেই কঠিন হয়ে পড়ে। ছোট ছেলের কষ্টের সংসার থেকে বাবা-মার খরচের জন্য মাঝে-মধ্যে সামান্য কিছু দিলেও অবস্থাসম্পন্ন বড় ছেলে বেশ কিছুদিন থেকেই বেঁকে বসে ভরণ-পোষণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় তারা প্রায় ৩ মাস আগে শেরপুরের জজ আদালত ভবনে থাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের দ্বারস্থ হন। আর তাতে সাড়া দিয়ে জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী জজ) জুলফিকার হোসাইন রনি উভয় পক্ষকে নিয়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু বারবার অবগত করার পরও সাড়া দিচ্ছিলেন না অবস্থাসম্পন্ন ছেলে তাসলিম খান। ওই অবস্থায় লিগ্যাল এইড অফিসের পরামর্শে গত ৩১ জুলাই শেরপুরের আমলী আদালতে ছেলে তাসলিম খান ও ছেলেরবধূ ডলি আক্তার (৩৫) কে আসামি করে হতভাগ্য মা মমতাজ বেগম বাদী হয়ে স্বামীসহ তার ভরণ-পোষণের দাবিতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশের প্রেক্ষিতে ২৬ আগস্ট ছেলেরবধূ অসুস্থতার অজুহাতে অনুপস্থিত থাকলেও ছেলে তাসলিম খান হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ সুলতানা আসামিকে পুলিশ হেফাজতে রেখে উভয় পক্ষকে নিয়ে লিগ্যাল এইড অফিসে বসে আপোস-মিমাংসার সুযোগ দেন ।