ঢাকা ০১:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

নীলফামারীতে যৌতুকের বকেয়া চল্লিশ হাজার টাকার জন্য জীবন দিতে হলো শারমীনকে

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ      
যৌতুকের বকেয়া ৪০ হাজার টাকা দিতে না পারায় গৃহবধূ হাবিবা আক্তার শারমিনকে (১৯) হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রধান আসামি স্বামী মোমিনুর ও শ্বশুর লাল মাহমুদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ জুন) দুপুরে নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, এক বছর পূর্বে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানার কৃষ্ণপুর গ্রামের হাবিল শেখের মেয়ে হাবিবা আক্তার শারমিনের (১৯) সাথে নীলফামারী সদর থানার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের সাবুল্লিপাড়া গ্রামের লাল মাহমুদের ছেলে মোমিনুরের (২৫) সাথে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা যৌতুকের শর্তে বিবাহ হয়। বিবাহের সময় ৮০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করা হলেও বকেয়া ৪০ হাজার টাকার জন্য শারমিনের স্বামী ও শ্বশুর তাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। যৌতুকের টাকা নিয়ে দিনে দিনে তাদের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।
গত ৯ জুন সকালে শারমিনকে তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের বকেয়া ৪০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য বললে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে শ্বশুর লাল মাহমুদ শারমিনের পা চেপে ধরে এবং স্বামী মোমিনুর খাটের রোলার দিয়ে শারমিনের পায়ে আঘাত করে ও তার গলা চেপে ধরে একটি বড় স্টিলের মগ দিয়ে আঘাত করে।
শারমিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বিষ পানে মৃত্যু দেখিয়ে শারমিনকে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে উত্তরা ইপিজেড এলাকায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরপরেই স্বামী মোমিনুর অ্যাম্বুলেন্স থেকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় জেলা পুলিশের একটি টিম মৃত্যুর রহস্য উদঘটনে কাজ শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে নারী পুলিশ সদস্য ও পরিবারের মহিলা সদস্যদের দিয়ে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত হলে , ১৮ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করে স্বামী মোমিনুর ও শ্বশুর লাল মাহমুদকে  গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) এই ঘটনায় জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে আসামিরা।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

নীলফামারীতে যৌতুকের বকেয়া চল্লিশ হাজার টাকার জন্য জীবন দিতে হলো শারমীনকে

আপডেট টাইম ১০:১১:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০
শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ      
যৌতুকের বকেয়া ৪০ হাজার টাকা দিতে না পারায় গৃহবধূ হাবিবা আক্তার শারমিনকে (১৯) হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রধান আসামি স্বামী মোমিনুর ও শ্বশুর লাল মাহমুদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ জুন) দুপুরে নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, এক বছর পূর্বে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানার কৃষ্ণপুর গ্রামের হাবিল শেখের মেয়ে হাবিবা আক্তার শারমিনের (১৯) সাথে নীলফামারী সদর থানার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের সাবুল্লিপাড়া গ্রামের লাল মাহমুদের ছেলে মোমিনুরের (২৫) সাথে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা যৌতুকের শর্তে বিবাহ হয়। বিবাহের সময় ৮০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করা হলেও বকেয়া ৪০ হাজার টাকার জন্য শারমিনের স্বামী ও শ্বশুর তাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। যৌতুকের টাকা নিয়ে দিনে দিনে তাদের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।
গত ৯ জুন সকালে শারমিনকে তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের বকেয়া ৪০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য বললে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে শ্বশুর লাল মাহমুদ শারমিনের পা চেপে ধরে এবং স্বামী মোমিনুর খাটের রোলার দিয়ে শারমিনের পায়ে আঘাত করে ও তার গলা চেপে ধরে একটি বড় স্টিলের মগ দিয়ে আঘাত করে।
শারমিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বিষ পানে মৃত্যু দেখিয়ে শারমিনকে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে উত্তরা ইপিজেড এলাকায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরপরেই স্বামী মোমিনুর অ্যাম্বুলেন্স থেকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় জেলা পুলিশের একটি টিম মৃত্যুর রহস্য উদঘটনে কাজ শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে নারী পুলিশ সদস্য ও পরিবারের মহিলা সদস্যদের দিয়ে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত হলে , ১৮ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করে স্বামী মোমিনুর ও শ্বশুর লাল মাহমুদকে  গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) এই ঘটনায় জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে আসামিরা।