সেলিম কবির গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের ভান্নারা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। তিনি আড়াই বছর ধরে ওই স্পিনিং মিলে কর্মরত ছিলেন। কারখানার অফিস কোয়ার্টারে স্ত্রী সখিনা বেগম, ৯ বছরের ছেলে সাবিদ হোসেন ও ৯ মাস বয়সী সাজিদ হোসেনকে নিয়ে থাকতেন।
সেলিম কবিরের স্ত্রী সখিনা বেগম শোকে স্তব্ধ। স্বামী হারানোর শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন। এরই মধ্যে বারবার সন্তান আবদার করছে বাবাকে দেখার। বড় ছেলে সাবিদ হোসেন স্থানীয় অপটিমাল নামের একটি কিন্ডারগার্টেনে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। যেন বাবাই তার কাছে বিশেষ কিছু। বিদ্যালয়ে আনা নেয়া, দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য বাবার দিকেই চেয়ে থাকত। বাবাকে ছাড়া যেন তার চলেই না।
গতকাল যখন বাবা হারানোর সংবাদ পায় তখন থেকেই তার মনে চলছে অন্যরকম আবহ। এখন শুধু বাবাকে দেখার আবদার। তবে আগুনে সেলিম কবিরের দেহ এতটাই অঙ্গার হয়েছে যে সন্তানও শেষ বিদায়ের সময় বাবার মুখটা দেখার সুযোগ বঞ্চিত।
কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (এডমিন) হারুনুর রশিদ জানান, সেলিম কবির কারখানার শ্রমিকদের কাছে খুবই আপন ছিলেন। তার ভালোবাসায় আপ্লুত ছিল তার অধিনস্থ শ্রমিকরা। অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি চলতি বি-শিফটে রিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ইচ্ছে করলেই নিরাপদে সরে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু নিজ স্বার্থের কথা না ভেবে প্রিয় শ্রমিকদের নিরাপদ করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই কারখানার গুদামে আগুন লাগে। পরে দ্রুত পুরো কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সেলিম কবিরসহ ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।