সকালে খালি পেটে ভেজানো কালো কিশমিশ খাওয়ার উপকারিতা

আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ১০:৩০:৩৪ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ১০:৩০:৩৪ পূর্বাহ্ন
সাধারণত হালকা বাদামি রঙেরই কিশমিশ বেশি দেখা যায়। এই কিশমিশ তৈরি হয় সবুজ রঙের আঙুরকে রোদে শুকিয়ে কিংবা কারখানায় প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে শুকিয়ে। আর কালো কিশমিশ তৈরি করা হয় কালো বা গাঢ় বেগুনি রঙের আঙুর শুকিয়ে।

যে কোনও গাঢ় রঙের ফল, বিশেষ করে বেগুনি রঙের খাবারে অ্যান্থোসায়ানিন থাকে ভরপুর। যে উপাদান হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কার্যকরী। পাশাপাশি মস্তিষ্ক ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে। এমনকি বেশ কয়েক ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। কালো কিশমিশের ওই গাঢ় রং আসে আঙুরের ঘন বেগুনি রং থেকেই। তাই এতেও রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিনসহ আরও নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এছাড়া কালো কিশমিশে ভিটামিন ও খনিজের উপস্থিতিও বাদামি কিশমিশের চেয়ে বেশি।
 
ভারতীয় তারকা পুষ্টিবিদ ও ফিটনেস প্রশিক্ষক লিউক কুটিনহো বলেছেন, পানিতে ভেজানো কালো কিশমিশ যদি প্রতিদিন সকালে খালিপেটে খাওয়া যায়, তবে অনেক রোগকে দূরে রাখা যাবে। শুধু তা-ই নয়, নানা ধরনের স্ত্রীরোগের ক্ষেত্রেও এটা অত্যন্ত কার্যকরী।
 
চলুন জেনে নেওয়া যাক সকালে পানিতে ভিজিয়ে কালো কিশমিশ খাওয়ার উপকারিতাগুলো-

পুষ্টিবিদ লিউক বলছেন, প্রথমত ভিজিয়ে খেলে কিশমিশে থাকা সব ধুলো-ময়লা বা রাসায়নিক দূর হবে। তার সমস্ত পুষ্টিগুণ শরীরের জন্য সহজ গ্রহণযোগ্য হবে। পাশাপাশি কিশমিশ পানি শুষে ফুলে থাকায় শরীরও আর্দ্র রাখবে। তবে এছাড়াও আরও নানা উপকার পাওয়া যাবে।
 
১. হজমশক্তি: ভেজানো কালো কিশমিশে ফাইবার বেশি থাকে। এটা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সকালে খালিপেটে খেলে তার কার্যকারিতা আরও বেড়ে যায়। সারা দিনের খাবার হজম করার ক্ষমতা ঠিক থাকে।
 
২. ত্বকের স্বাস্থ্য: কালো কিশমিশে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ এবং অ্যান্থোসায়ানিন নামের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা জোরালো প্রদাহনাশকও। এতে শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালসের আনাগোনা কমে। ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ে। ফলে ত্বক থাকে উজ্জ্বল ও টানটান।
 
৩. আয়রনের মাত্রা: কালো কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। যা শরীরে গেলে লোহিত রক্তকণিকা বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্ত শূণ্যতার সমস্যা দূর হয়। সার্বিক কর্মশক্তি বাড়ে। খালি পেটে ভেজানো কিশমিশ খেলে তার থেকে আয়রন গ্রহণ করতে সুবিধা হয় শরীরের।
 
৪. দাঁত ও মাড়ি: কালো কিশমিশ দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে উপকারী। কালো কিশমিশে রয়েছে ওলেয়ানোলিক অ্যাসিড। যা মুখে জন্মানো অনুজীব এবং ব্যাকটেরিয়াকে মারতে সাহায্য করে। ফলে মুখে দুর্গন্ধের মতো সমস্যা দূরে থাকে।
 
৫. হার্ট: খালিপেটে ভেজানো কালো কিশমিশ খেলে শরীরে অ্যান্থোসায়ানিন যায় পূর্ণ মাত্রায়। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে উদ্বেগ কমায়। হাইপারটেনশন দূরে থাকে। ফলে হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
 
৬. ক্যানসার: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্থোসায়ানিনের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ক্যানসার প্রতিরোধে কাজে লাগে। শরীরে ক্যানসারের বাসা বাঁধা, তার বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করতে পারে কালো কিশমিশে থাকে এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট।

৭. স্ত্রীরোগ: রক্ত পরিস্রুত করতে সাহায্য করে কালো কিশমিশ। কালো কিশমিশে থাকা নানা ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। ফলে গর্ভাশয় এবং জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। পিসিওএস, অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা, ঋতুস্রাবের সময় রক্ত জমাট বাঁধার মতো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে কালো কিশমিশ।
 
খাওয়ার নিয়ম-

প্রতিদিন সকালে ৬-৭টি ভেজানো কালো কিশমিশ খালিপেটে খেতে হবে। কিশমিশ ভালোভাবে ধুয়ে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। কেউ কেউ কিশমিশ ভেজানো পানিও পান করেন। তবে পুষ্টিবিদ লিউকের মতে সেটি ফেলে দেওয়াই ভালো। কারণ তাতে ময়লা থাকতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের খালিপেটে ভেজানো কিশমিশ না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই পুষ্টিবিদ। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক: মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ

প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক: রেজাউল করিম

অফিস :

প্রধান কার্যালয়ঃ ২৪/২৫, দিলকুশা, সাধারণ বীমা ভবন, লিফট-৪ (৫ম তলা), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ ।

রেজিঃ নং ডিএ ৬৪৪২।  নিবন্ধিত দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টাল নং ৮৪।