এবার যুদ্ধের মাঠে ‘অদৃশ্য পাইলট’

আপলোড সময় : ২১-০৬-২০২৫ ০১:৪৮:২৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-০৬-২০২৫ ০১:৪৮:২৪ অপরাহ্ন
দুনিয়াটা বদলে গেছে। ক্লাসে শিক্ষক নেই, হাসপাতালে চিকিৎসক নেই। তবু চলছে পাঠদান, চলছে চিকিৎসা। কারণ একটাই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। যে প্রযুক্তি একসময় ছিল বিজ্ঞানের কাল্পনিক গল্পে, এখন তা আমাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। আর এবার সেই প্রযুক্তি পা রাখল এমন এক জায়গায়, যেখানে আগে কেবল প্রাণ বাজি রেখে দাঁড়াতে হতো।

সুইডেন এবার পাইলট ছাড়াই আকাশে ওড়াল এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধবিমান, যার নিয়ন্ত্রণে নেই কোনো মানুষ। ককপিট ফাঁকা, কিন্তু বিমান চলছে আরও বেশি গতিতে, আরও নিখুঁতভাবে, আরও ভয়ংকর কৌশলে।

এআই চালিত এই যুদ্ধবিমানগুলো এখন কেবল উড়ছে না। তারা নিজেরাই পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে, যুদ্ধের কৌশল সাজাচ্ছে, শত্রুর গতিবিধি যাচাই করছে, আর প্রয়োজন হলে এক ঝটকায় ছুড়ে দিচ্ছে ধ্বংসের গোলা।

এই বিমানগুলোর মাথায় বসানো হয়েছে এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা। যা যেকোনো মুহূর্তে নির্ণয় করতে পারে কোথায় আঘাত করা সবচেয়ে কার্যকর, সেকেন্ডের ভেতরেই বিশ্লেষণ করে নেয় পিছিয়ে যাবে, না পাল্টা আঘাত হানবে এবং নিজের ক্ষমতা যাচাই করে সর্বোচ্চ ফলাফল দিতে পারে, এমনকি ডগফাইটে জিতে যেতে পারে পাইলট চালিত বিমানের সঙ্গেও!

সম্প্রতি এভিয়েশন ইন্টারন্যাশনাল নিউজ এক রিপোর্টে জানায়, সুইডেনের এই এআই চালিত যুদ্ধবিমানগুলো পরীক্ষামূলকভাবে সফলভাবে উড়েছে। এমনকি বাল্টিক সাগরের আকাশে একটি প্রতীকী যুদ্ধ মহড়ায় অংশ নিয়ে মানব-চালিত বিমানকে পরাজিত করে চমকে দিয়েছে সবার ধারণা। কোনো পাইলট ছাড়াই বিমান উড়েছে, কৌশল দেখিয়েছে, শত্রুকে আঘাত করেছে আর সবকিছু করেছে নিজের সিদ্ধান্তে।

জার্মানির প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সংস্থা Helsing এই প্রকল্পে কাজ করেছে। গত ২৮ মে থেকে ৩ জুন, এই সময়ের মধ্যে সুইডেনের সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তিন দফা পরীক্ষা চালানো হয়। সবগুলোতেই এআই যুদ্ধবিমান স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড্ডয়ন করেছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী কৌশল পরিবর্তন করেছে, শত্রু লক্ষ্য করে নিখুঁতভাবে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং জরুরি অবস্থায় অবতরণও সম্পূর্ণ নিরাপদে করতে পেরেছে

এই পরীক্ষাগুলো যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে স্পষ্ট হয়েছে বিমানগুলো শুধু উড়তে পারে না, যুদ্ধও করতে পারে, এবং মানুষ ছাড়াই জয় ছিনিয়ে আনতে পারে।

সুইডেনের প্রতিরক্ষা বিভাগ বলছে, এই বিমান এখনো গবেষণার আওতায় রয়েছে। তবে প্রাথমিক সফলতার পর এটি বিশ্বের সামরিক প্রযুক্তি অঙ্গনে রীতিমতো বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। অনেক দেশই এখন এই প্রযুক্তির দিকে নজর দিচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বিমানগুলো ভবিষ্যতের যুদ্ধকে পুরোপুরি বদলে দেবে। এটা শুধু একটি প্রযুক্তির প্রয়োগ নয়, এটি এমন এক যুগের ইঙ্গিত যেখানে যুদ্ধ হবে মানুষের চেয়ে বেশি যন্ত্রনির্ভর, আর সিদ্ধান্ত নেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক: মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ

প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক: রেজাউল করিম

অফিস :

প্রধান কার্যালয়ঃ ২৪/২৫, দিলকুশা, সাধারণ বীমা ভবন, লিফট-৪ (৫ম তলা), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ ।

রেজিঃ নং ডিএ ৬৪৪২।  নিবন্ধিত দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টাল নং ৮৪।