বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে খুলনায় অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা আজ (৪ আগস্ট) সকাল থেকে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে জড়ো হতে শুরু করেছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে সেখানে অবস্থান নেয়।
বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হয় এবং তাদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শিববাড়ি মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা সোনাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড হয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যেতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে।
শিববাড়ি মোড়ের আশেপাশে পুলিশের অবস্থান দেখা গেছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মাঠে রয়েছে।’
দূরপাল্লার বাস বন্ধ
খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে ঘুরে দেখা গেছে, সেখান থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সোনা জানান, “স্বল্প দূরত্বের রুটগুলোতে বাস চলাচল করছে, তবে যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়ার দিকে বাস চলছে না। এছাড়া ঢাকা-খুলনার গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।”
মাঠে থাকার ঘোষণা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির
খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি দুপুর আড়াইটায় কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংহতি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। খুলনা মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিলটন জানান, ‘বিএনপি সংহতি সমাবেশ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
অন্যদিকে নগরীর ৭টি স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। দলীয় কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সমাবেশের স্থানগুলি হল: বড় খালপাড় আল আমিন জামে মসজিদ চত্ত্বর, সাতরাস্তার মোড়, নতুনবাজার মোড়, মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় চত্ত্বরে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, খলিল চেম্বার মোড় ও বানরগাতী খালাশীর চাতাল।
জনমনে আতঙ্ক
খুলনা শহরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কে কোনো যানবহন নেই। মানুষের চলাচলও খুব কম। পথচারী আশরাফুল বলেন, ‘বাসায় বাজার নেই, তাই বের হয়েছি। দ্রুত চলে যাব। বাইরের পরিস্থিতি সুবিধার মনে হচ্ছে না।’ সোনাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে লিয়াকত মোল্লা বলেন, ‘আমি সাতক্ষীরা যাব। খুবই রিস্ক নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। বাস পেয়েছি, তবে পথে কি হবে জানি না।’ উল্লেখ্য, আন্দোলনকারীদের দাবি ও সরকারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।