কোটা সংস্কার আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় তাদের ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয় বলে ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে তথ্য জানার জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ডিবি পুলিশ জানায়, নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার নেতাদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়কের আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, নেতাদের মধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর রয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। তারা হলেন– বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ এবং আবু বাকের মজুমদার। ডিবি দাবি করে, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, ওই তিন শিক্ষার্থী ফেসবুকসহ বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তাহীনতার কথা বলছিলেন। তাদের একজনের বাবাও এ বিষয়ে কথা বলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমরা তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছি এবং জিজ্ঞাসাবাদ করছি যাতে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির বিস্তারিত জানা যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাত কলেজের সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট সমকালকে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়নি, বরং তাদের আটক করা হয়েছে। এর আগেও তাদের ধরেছে, পরে ছেড়েও দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলে হাসপাতালেই রাখা যেত, সেখান থেকে তুলে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না।
এর আগে ১৯ জুলাই খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া এলাকা থেকে নাহিদ ইসলামকে তুলে নেওয়া হয় এবং ২১ জুলাই ভোরে পূর্বাচল এলাকায় ফেলে যাওয়া হয়। একই দিনে আসিফ মাহমুদ এবং আবু বাকের মজুমদারকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। পরে আসিফকে হাতিরঝিল এবং বাকেরকে ধানমন্ডি এলাকায় ফেলে যাওয়া হয়। তারা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আজ নারায়ণগঞ্জে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, তিন সমন্বয়ককে সেফ কাস্টডিতে নেওয়া হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিন সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার ঘটনায় হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং হয়রানি না করার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে।