কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঘিরে ১৮ ও ১৯ জুলাই ঢাকায় সংঘটিত সহিংসতায় রাজশাহী বিভাগের জামায়াত-বিএনপি এবং জেএমবির দেড় শতাধিক সদস্যের অংশগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, ঢাকায় সহিংসতা শেষে এলাকায় ফেরার পথে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে যে দলীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা আন্দোলনের আড়ালে ঢাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ও মদদদাতাদের খুঁজে বের করতে অভিযান চলছে।
গোয়েন্দা সূত্রের মতে, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজশাহী বিভাগ থেকে জামায়াত-শিবির, বিএনপি নেতাকর্মী ও জেএমবির প্রশিক্ষিত সদস্যরা নাশকতায় অংশ নেয়। কারফিউ শিথিল হলে ঢাকা থেকে এলাকায় ফেরার পথে তাদের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যক্তিরা ঢাকায় ও আশপাশের জেলায় সহিংসতায় সরাসরি জড়িত ছিল। গত ১৭ জুলাই পরিকল্পনামতো তারা ঢাকায় এসে জড়ো হয় এবং ১৮ ও ১৯ জুলাইয়ের সহিংসতায় অংশ নেয়। জেএমবির রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ অঞ্চলের অন্তত দেড়শ সদস্য সহিংসতায় অংশগ্রহণ করেছে।
রাজশাহী র্যাব-৫ এর অধিনায়ক ফিরোজ কবির জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, জেএমবির আত্মসমর্পনকারী সদস্যরা ঢাকা, গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকায় সহিংসতায় জড়িত ছিল। র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃত কয়েকজন স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। র্যাব তাদের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অধিকতর তদন্ত শুরু করেছে এবং আত্মগোপনে থাকা জঙ্গিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করছে।
পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক জানান, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি নেতাকর্মী এবং জেএমবির জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি পরিকল্পনা ও মদদদাতাদের ধরতে অভিযান চলছে। যারা অর্থ সহায়তা করেছে এবং উস্কানি দিয়েছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, রাজশাহী বিভাগে সহিংসতার ঘটনায় অন্তত একশ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং পুলিশের পিকআপ ও অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা। সহিংসতার ঘটনায় আরএমপিসহ বিভিন্ন থানায় ৭৬টি মামলায় প্রায় ১ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী ও জঙ্গি রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।