"মধ্যবিত্তের মধ্য-বয়সী রমনীগন"

আপলোড সময় : ২৮-১১-২০২৪ ০৪:১৫:৫৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৮-১১-২০২৪ ০৪:১৫:৫৪ অপরাহ্ন
বিয়ে আজব এক ব্যপার, যে করেনি সে অস্থির করার জন্য।  আবার যে করেছেন সে অস্থির এ জীবন থেকে পালানোর জন্য। বিয়ে নিয়ে আমাদের নারী-পুরুষের মধ্যে কতো কৌতুহল, ব্যঙ্গ করে বলা হয় " বিয়ের মজাটা আগে বুঝলে বাবার আগেই কামডা সাইরা ফালাইতাম "। বিয়ে নিয়ে কতো গল্প, গান, কবিতা, ছড়া লেখা হয়। আবার একটা সময় পর সেই রঙিন গল্প কবিতা গান গুলোই দীর্ঘ শ্বাসের কারণ হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে যা আরও বিকট আকার ধারণ করছে। এই দীর্ঘশ্বাস ও হতাশা আমাদের মধ্যবিত্ত মধ্য বয়সীদের মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়। যারা জীবনের কোন অর্থ আর খুঁজে পাই না। বিশেষ করে যারা মধ্যবিত্ত এবং ইতোমধ্যে ৩৫ অতিক্রম করে ৪০ কিংবা ৪৫ বছর ছেদ করেছেন এই দীর্ঘশ্বাসের গল্প টা তাদের জন্য।

গৃহের রমনীরা মধ্য বয়সে উপনীত হয়ে এক ধরনের তীব্র বেদনা বোধ করে,  যারা আগাগোড়া গৃহিণী তাহাদের দুঃখ আরো অধিক,  জীবনের এ পর্যয়ে উপস্থিত হয়ে মনে হয় - হায়!  কি করিলাম জীবনে!  কেবল ঘর সংসার আর সন্তান উৎপাদন করে গোটা জীবনের সমাপ্তি করলাম! অথচ আমার চেয়ে নিম্ন মানের ছাত্রীরাও আজ সরকারি বেসরকারি চাকরি করে কত আনন্দে দিনাতিপাত করিতেছে। কত আনন্দে জীবনের স্বাদ গ্রহণ করেছে। আর আমি.......?

স্বামী নামক যে পুরুষটাকে এতকাল পুষিয়া রাখিয়াছি সেও সুযোগ পাইলে অন্য রমনীতে দৃষ্টি প্রসারিত করে। তাহার মনে তাহার কামনায় কে যেন নিত্য আসা যাওয়া করে, আমি কেবলই ব্রাত্যয় হইয়া পড়িতেছি দিনকে দিন।  যে সন্তান সন্তান করিয়া পুরো জীবন আর যৌবন জলাঞ্জলি দিলাম আজ তাহারাও নিজ নিজ ভুবনে ব্যস্ত রয়েছে।
শরীর আগের চাহিয়া আরো অবসন্ন ও অবসাদগ্রস্ত হয়েছে, সেই রুপ কমনীয় ছাপ বয়সের ভারে উবিয়া গিয়েছে, জীবনে দিকে তাকাইয়া কেবলই আফসোস হয়!
জীবনের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আফসোস হয়!
জীবন সঙ্গীর জন্য আফসোস হয়!
জীবনের উপর এমন বিতৃষ্ণা আমার ছাড়া আর কাহারো আছে বলিয়া মনে হয় না।

মাঝে মাঝে মনে মরে যাই, মরে গিয়ে জীবনটাকে অবমুক্ত করি, পরক্ষনেই আবার মৃত্যুর চিন্তা ভুলে সংসারে মনোনিবেশ করি। আবার সংসার সাজাই আপন মনে।
এতো মানুষেরা এতো ছবি ফেজবুকে পোষ্ট  করতেছে অথচ আমার তেমন  দু'খানা ছবি নাই, আলমিরা ভর্তি কাপড়-চোপড় অথচ পরিধান করার মতো কোনো কাপড় নাই, মনে রাখার মতো একখানা স্মৃতিও নাই যা আছে তাহা কেবলই বেদনা! যা শুধুই আমার একার।

 সিলেট, বান্দরবান, কুয়াকাটা, কক্সবাজারে যখন ভ্রমনে  গিয়েছি তখন বয়স ৪০ ছুঁই ছুঁই  তাই সমুদ্রের পানি ছুঁইয়াও শান্তি পাই নাই। পাহাড়ের চূড়াতে উঠে আকাশ ছুঁইয়াও দেখা হয় নাই তাহাদের সহিত কোন ভাবও জমে নাই। সমুদ্রের তীরে কোন রোমান্টিকতা পাই নাই, কেবল লবনাক্ততা অনুভব করেছি।

ইদানীং সংসারের কপালে ঝাঁটা মেরে পিত্রালয়ে থাকতে মনে চায়, পিত্রালয়ে দুই দিন থাকলে সংসারের জন্য মন অস্থির হইয়া ওঠে। ভাঙ্গা এই সংসার টা আবার গোছাতে হবে ভেবেই আবার ফিরে আসি। সময় যায়,বছর যায় এমনকি যুগের পর যুগ চলে যাই। তবুও মধ্যবিত্তের মধ্য বয়সী রমনীদের চিন্তার জগতের তেমন কোন পরিবর্তন আসে না।  তারা রয়ে যায় একই ছন্দে যুগের পর যুগ।


লেখক -
মো: উজ্জ্বল হোসেন
পিতা মো: শওকত আলী
গ্রাম: মোচাই নগর
আমলা সদরপুর,  
মিরপুর, কুষ্টিয়া।
মোবাইল:- 01723108802

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক: মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ

প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক: রেজাউল করিম

অফিস :

প্রধান কার্যালয়ঃ ২৪/২৫, দিলকুশা, সাধারণ বীমা ভবন, লিফট-৪ (৫ম তলা), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ ।

রেজিঃ নং ডিএ ৬৪৪২।  নিবন্ধিত দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টাল নং ৮৪।