সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। তবে, এই সম্প্রীতি নষ্ট করতে গভীর ষড়যন্ত্র ও মাস্টারপ্ল্যান করছে কেউ কেউ। তারা বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সক্ষার বাইরে গিয়ে বর্তমান সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ বছর বাংলাদেশে সাড়ে ৩২ হাজারের বেশি পূজা মণ্ডপে উসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও কেউ কেউ অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।
এবারের দুর্গাপূজা অনুষ্ঠানে পরিকল্পিত নাশকতা সৃষ্টি করে সরকার এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর উপর দায় চাপিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টার আশঙ্কা করা হয়েছিল। এ কারণে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও পূজামণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী, ছাত্র-জনতা এমনকি মাদরাসা শিক্ষক ও ছাত্রদেরও রাত জেগে পাহারা দিতে দেখা গেছে। ইতিপূর্বে ৫ আগস্টের বিপ্লবের পরও স্বার্থান্বেষি মহলের নাশকতা থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও সম্পদ রক্ষায় ছাত্র-জনতা পাহারা বসিয়ে রক্ষা করেছে।
তারপরেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে একটি দেশের অমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উদ্বেগ প্রকাশ এবং গণমাধ্যমে পরিকল্পিত অপপ্রচার থেকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ ভিন্ন বার্তা পাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কিংবা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বার্থ, এসবের কোনোটাই রক্ষিত হচ্ছে না।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশকে অহেতুক ব্লেইমগেম ও রাজনৈতিক গুটি খেলার চালে পরিণত করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সমাজবাস্তবতা ও প্রকারান্তরে সম্প্রীতি নিরাপত্তার সাথে বসবাসকারী শান্তিপ্রিয় হিন্দু সম্প্রদায়কে অনাস্থা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা বা দূরভিসন্ধি বলেই গণ্য হচ্ছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এ বিষয়ে সচেতন রয়েছে। সাংবিধানিক কিংবা আইনগত নিরাপত্তা পাওয়ার ক্ষেত্রে এ দেশে সকলেই সমান অধিকার ও মর্যাদার হকদার। এ ক্ষেত্রে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ও শান্তি-সম্প্রীতির সপক্ষে আমাদের সক্রিয় জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেভাবে আন্দোলন করেছি, ঠিক তেমনিভাবেই এখনো আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে রাষ্ট্র সংস্কার ও মেরামত করতে হবে। এই সরকারের বয়স খুবই কম। সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে। কারণ ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে একটি মহল। তাদের কূটচালে পা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
এদিকে, আট দফা দাবি জানিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। তাদের ৮ দফার অন্য দাবি গুলো হলো- দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন এবং অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপাসনালয় নির্মাণ ও হোস্টেলে প্রার্থনা রুম, সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দেওয়া।
আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের এ দাবিকে সমর্থন জানাই। তবে তাদের মনে রাখতে হবে বর্তমান সরকারের পক্ষে তাদের সব দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। দাবি তোলা ও আদায়ের জন্য একটি সঠিক সময় প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে এখন অজস্র চ্যালেঞ্জ। সামনে এগিয়ে যেতে তারা অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে শৃঙ্খলা ফেরানো, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফেরানো, শিক্ষা খাত ঢেলে সাজানো, স্বাস্থ্য খাতের নৈরাজ্য থামাতে সরকারকে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে।
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই সরকার ছাত্র আন্দোলনের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে গঠিত হয়েছে। তাই সরকারের প্রতি মানুষের আশা অনেক বেশি। বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক যে অর্জনগুলোর জন্য আত্মত্যাগ করেছে এই সরকারকে তা পূরণ করতে হচ্ছে। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আদিবাসীসহ এ দেশের সবাই মিলেই এ সরকারের পাশে আছে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সবাই মিলিতভাবেই ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা বৈষম্য, বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে। তবে, বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকদের অধিকার রক্ষায় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন খুবই জরুরি। এই মন্ত্রণালয়ের কাজ হবে তাদের কল্যাণে কাজ করা।
আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেভাবে আন্দোলন করেছি, ঠিক তেমনিভাবেই এখনো আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে রাষ্ট্র সংস্কার ও মেরামত করতে হবে। এই সরকারের বয়স খুবই কম। সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে। কারণ ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে একটি মহল। তাদের কূটচালে পা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হাজার বছর ধরে চলে আসা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিযেন বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাই আমাদের সকলের প্রধান কাজ।
লেখক: কলামিস্ট ও চবি অ্যালামনাই বসুন্ধরার সভাপতি। সাবেক ট্রাস্টি, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট।
এবারের দুর্গাপূজা অনুষ্ঠানে পরিকল্পিত নাশকতা সৃষ্টি করে সরকার এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর উপর দায় চাপিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টার আশঙ্কা করা হয়েছিল। এ কারণে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও পূজামণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী, ছাত্র-জনতা এমনকি মাদরাসা শিক্ষক ও ছাত্রদেরও রাত জেগে পাহারা দিতে দেখা গেছে। ইতিপূর্বে ৫ আগস্টের বিপ্লবের পরও স্বার্থান্বেষি মহলের নাশকতা থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও সম্পদ রক্ষায় ছাত্র-জনতা পাহারা বসিয়ে রক্ষা করেছে।
তারপরেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে একটি দেশের অমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উদ্বেগ প্রকাশ এবং গণমাধ্যমে পরিকল্পিত অপপ্রচার থেকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ ভিন্ন বার্তা পাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কিংবা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বার্থ, এসবের কোনোটাই রক্ষিত হচ্ছে না।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশকে অহেতুক ব্লেইমগেম ও রাজনৈতিক গুটি খেলার চালে পরিণত করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সমাজবাস্তবতা ও প্রকারান্তরে সম্প্রীতি নিরাপত্তার সাথে বসবাসকারী শান্তিপ্রিয় হিন্দু সম্প্রদায়কে অনাস্থা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা বা দূরভিসন্ধি বলেই গণ্য হচ্ছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এ বিষয়ে সচেতন রয়েছে। সাংবিধানিক কিংবা আইনগত নিরাপত্তা পাওয়ার ক্ষেত্রে এ দেশে সকলেই সমান অধিকার ও মর্যাদার হকদার। এ ক্ষেত্রে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ও শান্তি-সম্প্রীতির সপক্ষে আমাদের সক্রিয় জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেভাবে আন্দোলন করেছি, ঠিক তেমনিভাবেই এখনো আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে রাষ্ট্র সংস্কার ও মেরামত করতে হবে। এই সরকারের বয়স খুবই কম। সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে। কারণ ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে একটি মহল। তাদের কূটচালে পা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
এদিকে, আট দফা দাবি জানিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। তাদের ৮ দফার অন্য দাবি গুলো হলো- দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন এবং অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপাসনালয় নির্মাণ ও হোস্টেলে প্রার্থনা রুম, সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দেওয়া।
আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের এ দাবিকে সমর্থন জানাই। তবে তাদের মনে রাখতে হবে বর্তমান সরকারের পক্ষে তাদের সব দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। দাবি তোলা ও আদায়ের জন্য একটি সঠিক সময় প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে এখন অজস্র চ্যালেঞ্জ। সামনে এগিয়ে যেতে তারা অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে শৃঙ্খলা ফেরানো, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফেরানো, শিক্ষা খাত ঢেলে সাজানো, স্বাস্থ্য খাতের নৈরাজ্য থামাতে সরকারকে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে।
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই সরকার ছাত্র আন্দোলনের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে গঠিত হয়েছে। তাই সরকারের প্রতি মানুষের আশা অনেক বেশি। বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক যে অর্জনগুলোর জন্য আত্মত্যাগ করেছে এই সরকারকে তা পূরণ করতে হচ্ছে। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আদিবাসীসহ এ দেশের সবাই মিলেই এ সরকারের পাশে আছে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সবাই মিলিতভাবেই ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা বৈষম্য, বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে। তবে, বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকদের অধিকার রক্ষায় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন খুবই জরুরি। এই মন্ত্রণালয়ের কাজ হবে তাদের কল্যাণে কাজ করা।
আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেভাবে আন্দোলন করেছি, ঠিক তেমনিভাবেই এখনো আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে রাষ্ট্র সংস্কার ও মেরামত করতে হবে। এই সরকারের বয়স খুবই কম। সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে। কারণ ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে একটি মহল। তাদের কূটচালে পা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হাজার বছর ধরে চলে আসা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিযেন বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাই আমাদের সকলের প্রধান কাজ।
লেখক: কলামিস্ট ও চবি অ্যালামনাই বসুন্ধরার সভাপতি। সাবেক ট্রাস্টি, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট।