সারা দুনিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আসছে ৫ নভেম্বর হবে ভোট। আগামী পাঁচ বছরের জন্য কে হবেন বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান? দ্বিতীয়বারের মতো ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামল পাবে আমেরিকানরা নাকি জাতিকে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে উপহার দেবে ডেমোক্রেটরা? জানতে অপেক্ষায় সবাই।
কে কোনদিকে এগিয়ে আছেন সে নিয়ে আপাতত চলছে নানারকম বিচার বিশ্লেষণ। দুই প্রার্থীকে ঘিরে দুই ভাগে বিভক্ত এখন আমেরিকান তারকারাও। বলার অপেক্ষা রাখে না বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করেন দেশটির সেলিব্রিটিরা। তাদের সমর্থন জনমত গঠনে এবং ভোটারদের প্রভাবিত করতে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে। এবার সেলিব্রেটিদের সমর্থন পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব ফেলছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী, ভোটারের মনোভাব পরিবর্তন এবং পোলিং নম্বরগুলোতে প্রভাব ফেলার ক্ষেত্রে সেলিব্রিটির কণ্ঠস্বর অত্যন্ত শক্তিশালী বলে মন্তব্য করা হয়েছে। দেখে নেয়া যাক ট্রাম্প-কমলার পক্ষো থাকা খ্যাতিমান তারকাদের নামগুলো-
এলন মাস্ক
টেসলা এবং স্পেসএক্সের সিইও এলন মাস্ক ট্রাম্পের অন্যতম দৃশ্যমান সমর্থক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। সমাবেশে উপস্থিত থেকে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। তার সমর্থনকে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজননৈতিক বিশ্লেষকরা। মাস্ক ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনে ১১৯ মিলিয়নেরও বেশি ডলার দান করেছেন এবং স্বাধীনতা ও অস্ত্র অধিকারের জন্য পিটিশনের সমর্থকদের প্রতি প্রতিদিন ১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। জুলাই মাসে সমর্থন জানিয়ে, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে তাকে ‘থিওডোর রুজভেল্টের পর সবচেয়ে কঠিন প্রার্থী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
জ্যাকারি লেভি
জনপ্রিয় ‘শাজাম!’ সিনেমার তারকা অভিনেতা জ্যাকারি লেভিও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি মনে করেন ট্রাম্প একমাত্র প্রার্থী যিনি ‘আমেরিকা পুনরুদ্ধার’ করতে সক্ষম।
কিড রক
রক সঙ্গীতশিল্পী কিড রক ট্রাম্পের একজন জোরালো সমর্থক এবং তার সমাবেশে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন। রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে (RNC) রক গান গেয়েছিলেন। সেখানে আগত দর্শককে তিনি ‘লড়াই কর, লড়াই কর’ স্লোগানে ট্রাম্পের পক্ষে উৎসাহিত করেছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ হত্যার চেষ্টার পর, রক একটি ভিডিও পোস্ট করে ট্রাম্পের সমর্থকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘যদি তুমি ট্রাম্পের সঙ্গে কিছু করো, তাহলে তুমি আমার সঙ্গেও সেটা করছ।’
হাল্ক হোগান
পূর্ববর্তী রেসলিং আইকন হাল্ক হোগান রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে যোগদান করেন ট্রাম্পের সমর্থনে। সেখানে তার শার্ট ছিঁড়ে ফেলে উত্তেজিত ভঙ্গিতে ঘোষণা করেন, ‘ট্রাম্প আবারও শাসন করুক।’
অ্যাম্বার রোজ
মডেল এবং র্যাপার অ্যাম্বার রোজও রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন ট্রাম্পের জন্য। মিডিয়া ট্রাম্পকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরে, আমি মিথ্যাগুলোতে বিশ্বাস করেছিলাম।’ ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সম্প্রদায়ের প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন।
ব্রেট ফাভ্রে
অবসরপ্রাপ্ত ব্রেট ফাভ্রে ২০২০ সাল থেকে ট্রাম্পের সমর্থক। সম্প্রতি আবার ট্রাম্পের সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনের একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে উপস্থিত হয়ে আমেরিকানদের ‘একটি শক্তিশালী নেতা’ নির্বাচন করার জন্য উৎসাহিত করে ট্রাম্পের প্রচারণা করেন। তিনি দাবি করেন ট্রাম্প এমন একজন নেতা যে পরিবারকে রক্ষা করে এবং বিশ্ব শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
রোজেন ব্যার
কৌতুক অভিনেত্রী রোজেন ব্যার যিনি তার বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পরিচিত। তিনি ট্রাম্পের সমর্থন জানিয়ে জো বাইডেনের সমালোচনা করে স্যাটায়ার ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ব্যার ইঙ্গিত করেছেন যে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো বাইডেন প্রশাসনের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিয়ন্সে
হিউস্টনের একটি সমাবেশে কামালা হ্যারিসের সমর্থনে উপস্থিত হন হলিউডের সুপারস্টার তারকা বিয়ন্সে। তিনি ভোটারদের কাছে আবেদন করেন, ‘সেলিব্রিটি হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবে আপনাদের কাছে কমলার জন্য ভোট চাই। কমলা এমন একটি পৃথিবী তৈরি করতে পারবেন যেখানে আমরা বিভক্ত নই। কেলি রোল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি কমলা হ্যারিসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
এমিনেম
র্যাপার এমিনেম দীর্ঘকাল ধরে ট্রাম্পের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। কমলা হ্যারিসের প্রতি তার আকুণ্ঠ সমর্থন। সমাবেশে গিয়ে তিনি তার সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি যুব ভোটারদের কমলাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে একমঞ্চে ডেমোক্রেট প্রার্থীর জন্য প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
শেয়ার
সিনিয়র গায়িকা শেয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যারিসের সমর্থনে প্রকাশ্যে বক্তব্য রেখেছেন। হ্যারিসের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকারের প্রতি তার বিশ্বাস শেয়ার করেন। শেয়ারের পোস্টটি তার ভক্তদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রতিধ্বনিত হয় এবং হ্যারিসের প্রচারণায় দারুণ সাড়া ফেলে।
আশার
আরএনবি শিল্পী আশার আটলান্টা সমাবেশে যোগ দিয়ে কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানান। নতুন প্রজন্মের নেতা হিসেবে কমলার গুরুত্ব তুলে ধরেন। জর্জিয়ার বাসিন্দা হিসেবে তিনি বলেন, হ্যারিস স্বাধীনতার এবং সকলের অধিকার জন্য লড়াই করেন।
লিজো
ডিট্রয়েটের জন্ম নেওয়া র্যাপার লিজো হ্যারিসের সঙ্গে সমাবেশে অংশ নেন এবং ট্রাম্পের ডিট্রয়েটকে ‘একটি গন্ডগোল’ বলে সমালোচনা করেন। লিজো বলেন, কমলা হ্যারিস একজন শক্তিশালী নারী নেতা হিসেবে পৃথিবীকে শান্তির পথ দেখাবেন।
টেইলর সুইফট
এআই দ্বারা পরিবর্তিত একটি ছবির মাধ্যমে ট্রাম্পের সমর্থন দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়ার পর হলিউড মেগাস্টার টেইলর সুইফট তার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিছেন, তার পছন্দের প্রার্থী ক্লিনটন-বুশ-ওবামা-বাইডেনদের উত্তরসূরী কমলা হ্যারিস। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, হ্যারিস অধিকার আদায়ের জন্য সবসময় লড়াই করছেন। আমি মনে করি আমাদের নেতা হিসেবে তার মতোই একজন চ্যাম্পিয়ন প্রয়োজন।
ফিনিয়াস
গায়িকা বিলি আইলিশ এবং ফিনিয়াস একসঙ্গে কমলা হ্যারিসের সমর্থন জানান। ভক্তদের ‘আপনাদের জীবন নির্ভর করছে এটা ভেবে ভোট দিন’ বলে কমলার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। তারা গর্ভপাতের স্বাধীনতা, গ্রহের শান্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি জন্য কমলা হ্যারিসের সমর্থনে নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ওপরাহ উইনফ্রে
কিংবদন্তি এই তারকা ডেমোক্রেটদের সমাবেশে উপস্থিদ হয়ে কমলা হ্যারিসের সমর্থনে আবেগপূর্ণ বক্তব্য দেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনী যুদ্ধে ‘শালীনতা এবং সম্মান’- এর জন্য লড়াইয়ের কথা বলেন। তার সমর্থন হ্যারিসের জন্য খুবই ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে।
জর্জ ক্লুনী
ডেমোক্রেটদের একজন ডোনার হিসেবে পরিচিত অভিনেতা জর্জ ক্লুনী। তিনি কমলা হ্যারিসের প্রথম সমর্থক ছিলেন। বাইডেনকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে হ্যারিসের সমর্থনে কথা বলেছিলেন তিনি। একটি সিএনএন সাক্ষাৎকারে তিনি হ্যারিসের প্রার্থী হওয়াকে ‘ঐতিহাসিক অভিযান’ বলে উল্লেখ করেন এবং একজন নেতা হিসেবে তার প্রতি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
এছাড়াও গায়ক জন লিজেন্ড, অভিনেত্রী সিন্থিয়া নিক্সন, মেরিল স্ট্রিপ, জেনিফার লোপেজ, মিন্ডি কালিং, রক লিজেন্ড ফু ফাইটার্স এবং ব্রুস স্প্রিংস্টিন কমলা হ্যারিসের পক্ষ বাছাই করেছেন। তারা অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। কেউ ছুটে যাচ্ছেন সমাবেশে, কেউ গাইছেন গান।
নির্বাচনের দিন নিকটবর্তী হওয়ার সাথে সাথে প্রচারণা কেবল রাজনৈতিক নেতাদের জন্যই নয়, সেলিব্রিটিদের জন্যও একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যারা নিজেদের প্রভাব ব্যবহার করে ভোটারদের অনুপ্রাণিত করছেন। লক্ষ লক্ষ অনুসারী এবং ভক্তদের কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করছেন তারা। বিনোদনের প্রতিটি কোণ থেকে তারকারা তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরছেন পছন্দের প্রার্থীর জন্য। এটা একদিকে যেমন বিভাজনের কথা বলে তেমনি রাজনীতির ময়দানে একটি সাংস্কৃতিক মুহূর্তেরও জন্ম দিয়েছে।
কে কোনদিকে এগিয়ে আছেন সে নিয়ে আপাতত চলছে নানারকম বিচার বিশ্লেষণ। দুই প্রার্থীকে ঘিরে দুই ভাগে বিভক্ত এখন আমেরিকান তারকারাও। বলার অপেক্ষা রাখে না বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করেন দেশটির সেলিব্রিটিরা। তাদের সমর্থন জনমত গঠনে এবং ভোটারদের প্রভাবিত করতে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে। এবার সেলিব্রেটিদের সমর্থন পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব ফেলছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী, ভোটারের মনোভাব পরিবর্তন এবং পোলিং নম্বরগুলোতে প্রভাব ফেলার ক্ষেত্রে সেলিব্রিটির কণ্ঠস্বর অত্যন্ত শক্তিশালী বলে মন্তব্য করা হয়েছে। দেখে নেয়া যাক ট্রাম্প-কমলার পক্ষো থাকা খ্যাতিমান তারকাদের নামগুলো-
এলন মাস্ক
টেসলা এবং স্পেসএক্সের সিইও এলন মাস্ক ট্রাম্পের অন্যতম দৃশ্যমান সমর্থক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। সমাবেশে উপস্থিত থেকে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। তার সমর্থনকে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজননৈতিক বিশ্লেষকরা। মাস্ক ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনে ১১৯ মিলিয়নেরও বেশি ডলার দান করেছেন এবং স্বাধীনতা ও অস্ত্র অধিকারের জন্য পিটিশনের সমর্থকদের প্রতি প্রতিদিন ১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। জুলাই মাসে সমর্থন জানিয়ে, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে তাকে ‘থিওডোর রুজভেল্টের পর সবচেয়ে কঠিন প্রার্থী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
জ্যাকারি লেভি
জনপ্রিয় ‘শাজাম!’ সিনেমার তারকা অভিনেতা জ্যাকারি লেভিও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি মনে করেন ট্রাম্প একমাত্র প্রার্থী যিনি ‘আমেরিকা পুনরুদ্ধার’ করতে সক্ষম।
কিড রক
রক সঙ্গীতশিল্পী কিড রক ট্রাম্পের একজন জোরালো সমর্থক এবং তার সমাবেশে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন। রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে (RNC) রক গান গেয়েছিলেন। সেখানে আগত দর্শককে তিনি ‘লড়াই কর, লড়াই কর’ স্লোগানে ট্রাম্পের পক্ষে উৎসাহিত করেছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ হত্যার চেষ্টার পর, রক একটি ভিডিও পোস্ট করে ট্রাম্পের সমর্থকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘যদি তুমি ট্রাম্পের সঙ্গে কিছু করো, তাহলে তুমি আমার সঙ্গেও সেটা করছ।’
হাল্ক হোগান
পূর্ববর্তী রেসলিং আইকন হাল্ক হোগান রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে যোগদান করেন ট্রাম্পের সমর্থনে। সেখানে তার শার্ট ছিঁড়ে ফেলে উত্তেজিত ভঙ্গিতে ঘোষণা করেন, ‘ট্রাম্প আবারও শাসন করুক।’
অ্যাম্বার রোজ
মডেল এবং র্যাপার অ্যাম্বার রোজও রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন ট্রাম্পের জন্য। মিডিয়া ট্রাম্পকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরে, আমি মিথ্যাগুলোতে বিশ্বাস করেছিলাম।’ ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সম্প্রদায়ের প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন।
ব্রেট ফাভ্রে
অবসরপ্রাপ্ত ব্রেট ফাভ্রে ২০২০ সাল থেকে ট্রাম্পের সমর্থক। সম্প্রতি আবার ট্রাম্পের সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনের একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে উপস্থিত হয়ে আমেরিকানদের ‘একটি শক্তিশালী নেতা’ নির্বাচন করার জন্য উৎসাহিত করে ট্রাম্পের প্রচারণা করেন। তিনি দাবি করেন ট্রাম্প এমন একজন নেতা যে পরিবারকে রক্ষা করে এবং বিশ্ব শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
রোজেন ব্যার
কৌতুক অভিনেত্রী রোজেন ব্যার যিনি তার বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পরিচিত। তিনি ট্রাম্পের সমর্থন জানিয়ে জো বাইডেনের সমালোচনা করে স্যাটায়ার ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ব্যার ইঙ্গিত করেছেন যে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো বাইডেন প্রশাসনের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিয়ন্সে
হিউস্টনের একটি সমাবেশে কামালা হ্যারিসের সমর্থনে উপস্থিত হন হলিউডের সুপারস্টার তারকা বিয়ন্সে। তিনি ভোটারদের কাছে আবেদন করেন, ‘সেলিব্রিটি হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবে আপনাদের কাছে কমলার জন্য ভোট চাই। কমলা এমন একটি পৃথিবী তৈরি করতে পারবেন যেখানে আমরা বিভক্ত নই। কেলি রোল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি কমলা হ্যারিসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
এমিনেম
র্যাপার এমিনেম দীর্ঘকাল ধরে ট্রাম্পের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। কমলা হ্যারিসের প্রতি তার আকুণ্ঠ সমর্থন। সমাবেশে গিয়ে তিনি তার সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি যুব ভোটারদের কমলাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে একমঞ্চে ডেমোক্রেট প্রার্থীর জন্য প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
শেয়ার
সিনিয়র গায়িকা শেয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যারিসের সমর্থনে প্রকাশ্যে বক্তব্য রেখেছেন। হ্যারিসের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকারের প্রতি তার বিশ্বাস শেয়ার করেন। শেয়ারের পোস্টটি তার ভক্তদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রতিধ্বনিত হয় এবং হ্যারিসের প্রচারণায় দারুণ সাড়া ফেলে।
আশার
আরএনবি শিল্পী আশার আটলান্টা সমাবেশে যোগ দিয়ে কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানান। নতুন প্রজন্মের নেতা হিসেবে কমলার গুরুত্ব তুলে ধরেন। জর্জিয়ার বাসিন্দা হিসেবে তিনি বলেন, হ্যারিস স্বাধীনতার এবং সকলের অধিকার জন্য লড়াই করেন।
লিজো
ডিট্রয়েটের জন্ম নেওয়া র্যাপার লিজো হ্যারিসের সঙ্গে সমাবেশে অংশ নেন এবং ট্রাম্পের ডিট্রয়েটকে ‘একটি গন্ডগোল’ বলে সমালোচনা করেন। লিজো বলেন, কমলা হ্যারিস একজন শক্তিশালী নারী নেতা হিসেবে পৃথিবীকে শান্তির পথ দেখাবেন।
টেইলর সুইফট
এআই দ্বারা পরিবর্তিত একটি ছবির মাধ্যমে ট্রাম্পের সমর্থন দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়ার পর হলিউড মেগাস্টার টেইলর সুইফট তার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিছেন, তার পছন্দের প্রার্থী ক্লিনটন-বুশ-ওবামা-বাইডেনদের উত্তরসূরী কমলা হ্যারিস। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, হ্যারিস অধিকার আদায়ের জন্য সবসময় লড়াই করছেন। আমি মনে করি আমাদের নেতা হিসেবে তার মতোই একজন চ্যাম্পিয়ন প্রয়োজন।
ফিনিয়াস
গায়িকা বিলি আইলিশ এবং ফিনিয়াস একসঙ্গে কমলা হ্যারিসের সমর্থন জানান। ভক্তদের ‘আপনাদের জীবন নির্ভর করছে এটা ভেবে ভোট দিন’ বলে কমলার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। তারা গর্ভপাতের স্বাধীনতা, গ্রহের শান্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি জন্য কমলা হ্যারিসের সমর্থনে নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ওপরাহ উইনফ্রে
কিংবদন্তি এই তারকা ডেমোক্রেটদের সমাবেশে উপস্থিদ হয়ে কমলা হ্যারিসের সমর্থনে আবেগপূর্ণ বক্তব্য দেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনী যুদ্ধে ‘শালীনতা এবং সম্মান’- এর জন্য লড়াইয়ের কথা বলেন। তার সমর্থন হ্যারিসের জন্য খুবই ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে।
জর্জ ক্লুনী
ডেমোক্রেটদের একজন ডোনার হিসেবে পরিচিত অভিনেতা জর্জ ক্লুনী। তিনি কমলা হ্যারিসের প্রথম সমর্থক ছিলেন। বাইডেনকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে হ্যারিসের সমর্থনে কথা বলেছিলেন তিনি। একটি সিএনএন সাক্ষাৎকারে তিনি হ্যারিসের প্রার্থী হওয়াকে ‘ঐতিহাসিক অভিযান’ বলে উল্লেখ করেন এবং একজন নেতা হিসেবে তার প্রতি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
এছাড়াও গায়ক জন লিজেন্ড, অভিনেত্রী সিন্থিয়া নিক্সন, মেরিল স্ট্রিপ, জেনিফার লোপেজ, মিন্ডি কালিং, রক লিজেন্ড ফু ফাইটার্স এবং ব্রুস স্প্রিংস্টিন কমলা হ্যারিসের পক্ষ বাছাই করেছেন। তারা অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। কেউ ছুটে যাচ্ছেন সমাবেশে, কেউ গাইছেন গান।
নির্বাচনের দিন নিকটবর্তী হওয়ার সাথে সাথে প্রচারণা কেবল রাজনৈতিক নেতাদের জন্যই নয়, সেলিব্রিটিদের জন্যও একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যারা নিজেদের প্রভাব ব্যবহার করে ভোটারদের অনুপ্রাণিত করছেন। লক্ষ লক্ষ অনুসারী এবং ভক্তদের কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করছেন তারা। বিনোদনের প্রতিটি কোণ থেকে তারকারা তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরছেন পছন্দের প্রার্থীর জন্য। এটা একদিকে যেমন বিভাজনের কথা বলে তেমনি রাজনীতির ময়দানে একটি সাংস্কৃতিক মুহূর্তেরও জন্ম দিয়েছে।