ডুবতে বসেছে দুর্নীতি আর অনিয়মে ভরপুর হোমল্যান্ড লাইফ। কয়েক হাজার গ্রাহকের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ করতে পারছে না কোম্পানিটি। সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট-ট্যাক্সও বাকি। জীবন বিমা কোম্পানিটির অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে একটি অভিযোগও জমা পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হোমল্যান্ড লাইফে গ্রাহকদের বিমা দাবি পাওনা ৯০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এই বিমা দাবি কোম্পানিটি পরিশোধ করতে পারছে না। কোম্পানির বিজিটিবি (সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ) রয়েছে ৬১ কোটি ৬৭ লাখ এবং স্থায়ী সম্পদ রয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর বাইরে তেমন কোনো সম্পত্তি নেই। ‘হায় হায়’ কোম্পানিতে পরিণত হতে খুব বাকি নেই হোমল্যান্ডের।
বিমা গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ দাবির টাকা পরিশোধ না করার পাশাপাশি কোম্পানিটি সরকারের পাওনা ভ্যাট ও ট্যাক্সও দিচ্ছে না। ২০১৫ সাল থেকেই কোম্পানিটি ঠিকমতো ভ্যাট-ট্যাক্স দেয় না। এ বাবদ কোম্পানিটির কাছে সরকারের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট ৫ কোটি ৫১ লাখ এবং ট্যাক্স ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
বিমা গ্রাহকদের দাবির টাকা পরিশোধ করতে আমরা কয়েকজন কোম্পানির কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না।- হোমল্যান্ড লাইফের জিএম মো. শহিদুল ইসলাম
গত মার্চে হোমল্যান্ড লাইফের ৪৩ জন সিনিয়র উন্নয়ন কর্মকর্তা ৩৯ হাজার গ্রাহকের ৮০ কোটি টাকার বিমা দাবির চেক দেওয়ার জন্য কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, প্রায় ৫-৭ বছর ধরে গ্রাহকরা এসবি, মেয়াদোত্তর ও মৃত্যু দাবির চেক পরিশোধ না করায় উন্নয়ন কর্মকর্তারা অফিসে যেতে পারছেন না। ফলে ব্যবসার অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। কোম্পানির শত শত কর্মী নিষ্ক্রিয়। যার কারণে হাজার হাজার পলিসি তামাদি। ফলে নবায়ন প্রিমিয়ামের হার শূন্যের কোঠায়।
সিনিয়র উন্নয়ন কর্মকর্তা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এমন চিঠি দিলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর তারা আইডিআরএ চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দেন। তাতে হোমল্যান্ড লাইফের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ৮-১০ বছর ধরে কোম্পানির গ্রহকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে ১০ মার্চ কোম্পানির কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে দুই দফায় চারজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পিআর, এফপিআর, ডিসিএস ডকুমেন্ট ছাড়া ২৯৭ কোটি টাকা ব্যাংক স্লিপ জালিয়াতি করে ভুয়া ব্যবসা দেখানো হয়েছে। ভুয়া ব্যবসা দেখিয়ে উন্নয়ন মিটিংয়ের নামে আত্মসাৎ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এছাড়া কোম্পানির ১২০ কাঠা জমি বিক্রি করা হয়েছে। এই জমির মূল্য প্রতি কাঠা এক কোটি টাকা অথচ বিক্রি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা করে। কম টাকায় জমি বিক্রি দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অসংখ্য ভুয়া মামলা করে কোম্পানির হিসাব খাত থেকে কোনো রকম সুনির্দিষ্ট বিবরণ ছাড়া মামলার খরচ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ৮ লাখ টাকা, ৯ সেপ্টেম্বর ১০ লাখ, ২০২২ সালের ১৮ মে ২৫ লাখ, ১৯ মে ৪৩ লাখ ৫০ হাজার এবং ২০ সেপ্টেম্বর ৩০ লাখ টাকা মামলার খরচ বাবদ কোম্পানি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কোম্পানির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম তালুকদার তার ব্যক্তিগত পারিবারিক খুনের মামলা বাবদ প্রায় ৫০ লাখ টাকা কোম্পানির হিসাব থেকে তোলেন বলেও এতে অভিযোগ করা হয়েছে।
এই অভিযোগকারীদের একজন জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. রিয়াজ মোর্শেদ। অভিযোগপত্রে দেওয়া তার মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে একজন নারী রিসিভ করেন। তিনি রিয়াজা মোর্শেদের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমার স্বামী অভিযোগ দিয়েছিলেন এটা সত্য। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না।’
হোমল্যান্ড লাইফের জিএম মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিমা গ্রাহকদের দাবির টাকা পরিশোধ করতে আমরা কয়েকজন কোম্পানির কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা দিতে না পারার কারণে আমরা ব্যক্তিগত জীবনে নানাভাবে নাজেহাল হচ্ছি। গ্রাহকরা অফিসে এসে টাকা চাচ্ছেন, নানাভাবে আমাদের অপমান করছেন। কর্মীরা অফিসে আসতে পারছেন না।’
বর্তমানে হোমল্যান্ড লাইফে কোনো মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নেই। আর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা জামাল উদ্দিন লন্ডনে অবস্থান করছেন। ফলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা হোসনে আরা নাজের মোবাইল ফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হোমল্যান্ড লাইফে গ্রাহকদের বিমা দাবি পাওনা ৯০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এই বিমা দাবি কোম্পানিটি পরিশোধ করতে পারছে না। কোম্পানির বিজিটিবি (সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ) রয়েছে ৬১ কোটি ৬৭ লাখ এবং স্থায়ী সম্পদ রয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর বাইরে তেমন কোনো সম্পত্তি নেই। ‘হায় হায়’ কোম্পানিতে পরিণত হতে খুব বাকি নেই হোমল্যান্ডের।
বিমা গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ দাবির টাকা পরিশোধ না করার পাশাপাশি কোম্পানিটি সরকারের পাওনা ভ্যাট ও ট্যাক্সও দিচ্ছে না। ২০১৫ সাল থেকেই কোম্পানিটি ঠিকমতো ভ্যাট-ট্যাক্স দেয় না। এ বাবদ কোম্পানিটির কাছে সরকারের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট ৫ কোটি ৫১ লাখ এবং ট্যাক্স ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
বিমা গ্রাহকদের দাবির টাকা পরিশোধ করতে আমরা কয়েকজন কোম্পানির কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না।- হোমল্যান্ড লাইফের জিএম মো. শহিদুল ইসলাম
গত মার্চে হোমল্যান্ড লাইফের ৪৩ জন সিনিয়র উন্নয়ন কর্মকর্তা ৩৯ হাজার গ্রাহকের ৮০ কোটি টাকার বিমা দাবির চেক দেওয়ার জন্য কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, প্রায় ৫-৭ বছর ধরে গ্রাহকরা এসবি, মেয়াদোত্তর ও মৃত্যু দাবির চেক পরিশোধ না করায় উন্নয়ন কর্মকর্তারা অফিসে যেতে পারছেন না। ফলে ব্যবসার অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। কোম্পানির শত শত কর্মী নিষ্ক্রিয়। যার কারণে হাজার হাজার পলিসি তামাদি। ফলে নবায়ন প্রিমিয়ামের হার শূন্যের কোঠায়।
সিনিয়র উন্নয়ন কর্মকর্তা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এমন চিঠি দিলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর তারা আইডিআরএ চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দেন। তাতে হোমল্যান্ড লাইফের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ৮-১০ বছর ধরে কোম্পানির গ্রহকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে ১০ মার্চ কোম্পানির কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে দুই দফায় চারজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পিআর, এফপিআর, ডিসিএস ডকুমেন্ট ছাড়া ২৯৭ কোটি টাকা ব্যাংক স্লিপ জালিয়াতি করে ভুয়া ব্যবসা দেখানো হয়েছে। ভুয়া ব্যবসা দেখিয়ে উন্নয়ন মিটিংয়ের নামে আত্মসাৎ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এছাড়া কোম্পানির ১২০ কাঠা জমি বিক্রি করা হয়েছে। এই জমির মূল্য প্রতি কাঠা এক কোটি টাকা অথচ বিক্রি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা করে। কম টাকায় জমি বিক্রি দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অসংখ্য ভুয়া মামলা করে কোম্পানির হিসাব খাত থেকে কোনো রকম সুনির্দিষ্ট বিবরণ ছাড়া মামলার খরচ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ৮ লাখ টাকা, ৯ সেপ্টেম্বর ১০ লাখ, ২০২২ সালের ১৮ মে ২৫ লাখ, ১৯ মে ৪৩ লাখ ৫০ হাজার এবং ২০ সেপ্টেম্বর ৩০ লাখ টাকা মামলার খরচ বাবদ কোম্পানি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কোম্পানির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম তালুকদার তার ব্যক্তিগত পারিবারিক খুনের মামলা বাবদ প্রায় ৫০ লাখ টাকা কোম্পানির হিসাব থেকে তোলেন বলেও এতে অভিযোগ করা হয়েছে।
এই অভিযোগকারীদের একজন জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. রিয়াজ মোর্শেদ। অভিযোগপত্রে দেওয়া তার মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে একজন নারী রিসিভ করেন। তিনি রিয়াজা মোর্শেদের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমার স্বামী অভিযোগ দিয়েছিলেন এটা সত্য। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না।’
হোমল্যান্ড লাইফের জিএম মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিমা গ্রাহকদের দাবির টাকা পরিশোধ করতে আমরা কয়েকজন কোম্পানির কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা দিতে না পারার কারণে আমরা ব্যক্তিগত জীবনে নানাভাবে নাজেহাল হচ্ছি। গ্রাহকরা অফিসে এসে টাকা চাচ্ছেন, নানাভাবে আমাদের অপমান করছেন। কর্মীরা অফিসে আসতে পারছেন না।’
বর্তমানে হোমল্যান্ড লাইফে কোনো মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নেই। আর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা জামাল উদ্দিন লন্ডনে অবস্থান করছেন। ফলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা হোসনে আরা নাজের মোবাইল ফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।