সরকারের ঘোষিত সর্বজনীন পেনশন প্রিত্যয় স্কিমটির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং সরকারের ঘোষিত সুবিধাদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মেনে নেয় নি। কেন মেনে নিচ্ছে না সেকথা পরে বলছি। প্রত্যয় শব্দের অর্থ-নিশ্চয়তা, প্রতীতি, বিশ্বাস ইত্যাদি। স্কিমের শব্দ চয়নটি ভালো বলতেই হয়। বিশ্বাস না থাকলে মানুষ তো বটেই সমাজ রাষ্ট্র সবকিছুই অচল।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুর আগে তার ‘সভ্যাতার সংকট’ প্রবন্ধে বলেছেন ‘মানুষের ওপর বিশ্বাস হারোনো পাপ.. বিশ্বাস রাখলাম।’ কাজেই বিশ্বাস তো রাখতেই হবে। বিশ্বাসের সামাজিক গুরুত্ব অনস্বিকার্য। খোদ ব্রিটেন রাষ্ট্রটি চলে বিশ্বাসের ওপর। তাদের লিখিত কোনো সংবিধান নেই। বিশ্বাস যখন এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তখন সরকার সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতেই স্কিমটির নাম দিয়েছেন ‘প্রত্যয়’।
২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার কারিগরদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা করা ছাড়া এই সমস্যার সমাধানের বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। প্রত্যয় স্কিম সরকারের ঘোষিত নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই অভিযোগ একটাই এই স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থাকবে না। স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো চালু কারা কোনো অমূলক প্রত্যাশা নয়।
কিন্তু এই প্রত্যয় স্কিমটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য যারা তৈরি করেছেন তারা অবিশ্বাসের মতো কিছু কাজ করেছেন যে কারণে শিক্ষকরা আজকে রোদ বৃষ্টি ধুলো বালি উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছেন। বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে। শিক্ষরা সারাজীবন সরল পথে চলেন। সহজ কথা বোঝেন। সত্যকথা বলেন। জটিল সমীকরণে নেই। সুতরাং সরকারের প্রত্যয় স্কিম থেকে শিক্ষকদের বের করে স্বতন্ত্র স্কিমে রাখুন তাহলে আর প্রত্যয় বোঝানোর দরকার হবে না।
১৯৭৩ সালে সদ্য স্বাধীন একটি দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভেবেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় হবে স্বায়ত্তশাসিত। শিক্ষকরা হবেন মর্যদাশীল। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাত দিতে চান নি। শিক্ষকদের ওপর ‘প্রত্যয়’ রেখেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু জানতেন এই শিক্ষকরা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর নির্দেশে বই খাতা কলম ছেড়ে ইস্পাতের ম্যাগজিন হাতে তুলে নিয়েছিলেন। ১৪ ডিসেম্বর এই সূর্য সন্তানরাই হাসতে হাসতে জীবন দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ‘প্রধম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) প্রণয়ন, পরিকল্পনা কমিশনে শিক্ষকদের নিয়োগ করে বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ায় শিক্ষকদের নিয়েজিক করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষদের ওপর বঙ্গবন্ধুর ‘প্রত্যয়’ ছিল অগাধ ও অশেষ। বঙ্গবন্ধু হয়তো সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের মেজ দা সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত ভ্রমণ কাহিনি ‘পালামৌ’ এর সেই বিখ্যাত উক্তিটি পড়েছিলেন ‘বন্যেরা বনে সুন্দুর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’ যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সব সময় আলাদা সম্মান দিতেন। আজকে ‘প্রত্যয়’ নাম দিয়ে শিক্ষদের যে বঞ্চনার মুখে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু এটি মেনে নিতেন না (আশা করছি বঙ্গবন্ধু কন্যা অবশ্যই শিক্ষদের এই বঞ্চনা মেনে নিবেন না)।
প্রত্যয় স্কিমে কি আছে তা ইতোমধ্যে সবাই জেনে গেছে। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকুরির মেয়াদ (অবসরের বয়স) কতো বছরের এটি প্রত্যয় স্কিম প্রণেতারা জানতেন না। পরে তারা জেনেছেন শিক্ষকরা যখন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হলেন। আমাদের বাঙালি নোবেল বিজয়ী বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তাঁর আত্মজীবনী ‘জগৎ কুটির’ এ লিখেছেন উপমহাদেশ যখন ভাগ করার দায়িত্ব নিয়ে স্যার সিরিল র্যাডক্লিফ এখানে এসেছিলেন তখন তিনি সময় পেয়েছিলেন খুব অল্প।
১৯৪৭ সালের জুন মাসে কাজ শুরু করেছিলেন মধ্য আগস্টে শেষ করেছেন। এতো কম সময়ে এতো বড় উপমহাদেশ ভাগ করতে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে ফলে অনেক সময় ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দাগ টানতেন। এর ফলাফল এখানকার মানুষকে ভৌগোলিক টানাপোড়েনের দায় এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।’ প্রত্যয় স্কিম প্রণয়নে এমন ঘটনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। তড়িঘড়ি করে কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকদের প্রতি বঞ্চনার অনুপাত দেখে তাই মনে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করছি। বঙ্গবন্ধু যেমন শিক্ষকদের সম্মান করতেন তাঁর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান করেন। সামাজিক মিডিয়াতে বঙ্গবন্ধু কন্যার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে আছে। বাংলা একাডেমিতে একুশের বইমেলা উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে লাল গালিচায় না হেঁটে তার প্রিয় শিক্ষক আনিসুজ্জামান স্যারকে লাল গালিচায় হেঁটে যেতে দিয়েছেন। এ সম্মান বিরল এক দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি গুলো মেনে নিয়ে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা করা এখন সময়ের দাবি। তাছাড়া সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে একজন প্রফেসর সবচেয়ে কম বেতন পান।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা নাই করলাম। আমেরিকা কানাডা সুইজারল্যান্ডে একজন প্রফেসর সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করেন। ভিয়েতনাম সিঙ্গাপুর ব্রুনাই আরব আমিরাত জাপান চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অগ্রগণ্য। পাশের দেশ ভারতে একজন কলেজ শিক্ষক যে বতন পান আমাদের গ্রেড ওয়ান ভুক্ত একজন সিনিয়র প্রফেসর সে বেতন পান না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করতে আসা দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা অর্থের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। তারা আসেন জ্ঞান আহরণ এবং বিতরণ করতে। গবেষণালব্ধ জ্ঞানকে তাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। এ কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকরা জীবন ধারণের ন্যূনতম সুবিধার নিশ্চয়তা প্রত্যাশা করতে পারবেন না? বিষয়টি ভেবে দেখে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার কারিগরদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা করা ছাড়া এই সমস্যার সমাধানের বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। প্রত্যয় স্কিম সরকারের ঘোষিত নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই অভিযোগ একটাই এই স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থাকবে না। স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো চালু কারা কোনো অমূলক প্রত্যাশা নয়। যে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা এদশে বাহান্ন থেকে একাত্তরের রক্তাক্ত ইতিহাসে ভাস্মর হয়ে আছেন তাঁদের দাবি ভূলুণ্ঠিত হলে তা হবে দুঃখজনক।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুর আগে তার ‘সভ্যাতার সংকট’ প্রবন্ধে বলেছেন ‘মানুষের ওপর বিশ্বাস হারোনো পাপ.. বিশ্বাস রাখলাম।’ কাজেই বিশ্বাস তো রাখতেই হবে। বিশ্বাসের সামাজিক গুরুত্ব অনস্বিকার্য। খোদ ব্রিটেন রাষ্ট্রটি চলে বিশ্বাসের ওপর। তাদের লিখিত কোনো সংবিধান নেই। বিশ্বাস যখন এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তখন সরকার সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতেই স্কিমটির নাম দিয়েছেন ‘প্রত্যয়’।
২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার কারিগরদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা করা ছাড়া এই সমস্যার সমাধানের বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। প্রত্যয় স্কিম সরকারের ঘোষিত নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই অভিযোগ একটাই এই স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থাকবে না। স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো চালু কারা কোনো অমূলক প্রত্যাশা নয়।
কিন্তু এই প্রত্যয় স্কিমটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য যারা তৈরি করেছেন তারা অবিশ্বাসের মতো কিছু কাজ করেছেন যে কারণে শিক্ষকরা আজকে রোদ বৃষ্টি ধুলো বালি উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছেন। বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে। শিক্ষরা সারাজীবন সরল পথে চলেন। সহজ কথা বোঝেন। সত্যকথা বলেন। জটিল সমীকরণে নেই। সুতরাং সরকারের প্রত্যয় স্কিম থেকে শিক্ষকদের বের করে স্বতন্ত্র স্কিমে রাখুন তাহলে আর প্রত্যয় বোঝানোর দরকার হবে না।
১৯৭৩ সালে সদ্য স্বাধীন একটি দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভেবেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় হবে স্বায়ত্তশাসিত। শিক্ষকরা হবেন মর্যদাশীল। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাত দিতে চান নি। শিক্ষকদের ওপর ‘প্রত্যয়’ রেখেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু জানতেন এই শিক্ষকরা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর নির্দেশে বই খাতা কলম ছেড়ে ইস্পাতের ম্যাগজিন হাতে তুলে নিয়েছিলেন। ১৪ ডিসেম্বর এই সূর্য সন্তানরাই হাসতে হাসতে জীবন দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ‘প্রধম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) প্রণয়ন, পরিকল্পনা কমিশনে শিক্ষকদের নিয়োগ করে বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ায় শিক্ষকদের নিয়েজিক করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষদের ওপর বঙ্গবন্ধুর ‘প্রত্যয়’ ছিল অগাধ ও অশেষ। বঙ্গবন্ধু হয়তো সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের মেজ দা সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত ভ্রমণ কাহিনি ‘পালামৌ’ এর সেই বিখ্যাত উক্তিটি পড়েছিলেন ‘বন্যেরা বনে সুন্দুর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’ যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সব সময় আলাদা সম্মান দিতেন। আজকে ‘প্রত্যয়’ নাম দিয়ে শিক্ষদের যে বঞ্চনার মুখে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু এটি মেনে নিতেন না (আশা করছি বঙ্গবন্ধু কন্যা অবশ্যই শিক্ষদের এই বঞ্চনা মেনে নিবেন না)।
প্রত্যয় স্কিমে কি আছে তা ইতোমধ্যে সবাই জেনে গেছে। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকুরির মেয়াদ (অবসরের বয়স) কতো বছরের এটি প্রত্যয় স্কিম প্রণেতারা জানতেন না। পরে তারা জেনেছেন শিক্ষকরা যখন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হলেন। আমাদের বাঙালি নোবেল বিজয়ী বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তাঁর আত্মজীবনী ‘জগৎ কুটির’ এ লিখেছেন উপমহাদেশ যখন ভাগ করার দায়িত্ব নিয়ে স্যার সিরিল র্যাডক্লিফ এখানে এসেছিলেন তখন তিনি সময় পেয়েছিলেন খুব অল্প।
১৯৪৭ সালের জুন মাসে কাজ শুরু করেছিলেন মধ্য আগস্টে শেষ করেছেন। এতো কম সময়ে এতো বড় উপমহাদেশ ভাগ করতে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে ফলে অনেক সময় ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দাগ টানতেন। এর ফলাফল এখানকার মানুষকে ভৌগোলিক টানাপোড়েনের দায় এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।’ প্রত্যয় স্কিম প্রণয়নে এমন ঘটনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। তড়িঘড়ি করে কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকদের প্রতি বঞ্চনার অনুপাত দেখে তাই মনে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করছি। বঙ্গবন্ধু যেমন শিক্ষকদের সম্মান করতেন তাঁর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান করেন। সামাজিক মিডিয়াতে বঙ্গবন্ধু কন্যার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে আছে। বাংলা একাডেমিতে একুশের বইমেলা উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে লাল গালিচায় না হেঁটে তার প্রিয় শিক্ষক আনিসুজ্জামান স্যারকে লাল গালিচায় হেঁটে যেতে দিয়েছেন। এ সম্মান বিরল এক দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি গুলো মেনে নিয়ে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা করা এখন সময়ের দাবি। তাছাড়া সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে একজন প্রফেসর সবচেয়ে কম বেতন পান।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা নাই করলাম। আমেরিকা কানাডা সুইজারল্যান্ডে একজন প্রফেসর সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করেন। ভিয়েতনাম সিঙ্গাপুর ব্রুনাই আরব আমিরাত জাপান চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অগ্রগণ্য। পাশের দেশ ভারতে একজন কলেজ শিক্ষক যে বতন পান আমাদের গ্রেড ওয়ান ভুক্ত একজন সিনিয়র প্রফেসর সে বেতন পান না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করতে আসা দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা অর্থের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। তারা আসেন জ্ঞান আহরণ এবং বিতরণ করতে। গবেষণালব্ধ জ্ঞানকে তাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। এ কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকরা জীবন ধারণের ন্যূনতম সুবিধার নিশ্চয়তা প্রত্যাশা করতে পারবেন না? বিষয়টি ভেবে দেখে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার কারিগরদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা করা ছাড়া এই সমস্যার সমাধানের বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। প্রত্যয় স্কিম সরকারের ঘোষিত নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই অভিযোগ একটাই এই স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থাকবে না। স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো চালু কারা কোনো অমূলক প্রত্যাশা নয়। যে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা এদশে বাহান্ন থেকে একাত্তরের রক্তাক্ত ইতিহাসে ভাস্মর হয়ে আছেন তাঁদের দাবি ভূলুণ্ঠিত হলে তা হবে দুঃখজনক।