দিন যত যাচ্ছে শেয়ারবাজার তত খাদের মধ্যে চলে যাচ্ছে। আর প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগ করা পুঁজি রক্ষার কোনো উপায় যেন তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। ফলে তারা নীরবেই শেয়ারবাজারে দরপতন দেখে যাচ্ছেন।
দরপতনের বৃত্তে থাকা শেয়ারবাজারে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢালাও দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার ১৪ গুণের বেশি। ফলে কমেছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ঢালাও দরপতন হয়েছে। বাজারটিতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে কমেছে তার ৬ গুণের বেশি। ফল এ বাজারটিতেও কমেছে মূল্যসূচক। অবশ্য ডিএসইর মতো সিএসইতেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৬০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে ঢালাও দরপতন হয় শেয়ারবাজারে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে মাত্র ২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৯৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইসলামী ব্যাংকের ৫৬ কোটি ৬০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৫১ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, সোনালী আঁশ, ইবনে সিনা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, এমজেএল বাংলাদেশ এবং রবি।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯০টির এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৩ লাখ টাকা।