রুবেল আহমেদ, আখাউড়া (ব্রাক্ষণবাড়ীয়া): রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি পৌরসভায় “অন্নপূর্ণ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট” নামক প্রতিষ্ঠানে গরিব ও অসহায় শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার উপহার দেয়ার উদ্দেশ্যে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেন’ শ্রী শ্যামল সরকারের ছেলে বিপ্লব সরকার। অন্নপূর্ণ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টটি নিম্নবিত্ত শ্রী শ্যামল সরকার ৩৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত করেন। যা বর্তমানে টিনের তৈরী, বাবা শ্যামল সরকারের সাথে ছেলে বিপ্লব সরকার হোটেলের দায়িত্বে রয়েছেন। বিপ্লব সরকার গরিব ছাত্রদের টিফিনে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ানোর জন্য নামমাত্র মূল্য পাঁচ টাকায় ডাল-ভাতের সুব্যবস্থা করেন। শুধু ডালভাত নয়, সপ্তাহে একদিন সবজি, মাছ এবং দুই টুকরো মাংস দিয়েও খাওয়ান গরীব-অসহায় ছাত্রদের। ছাত্রদের পাশাপাশি অসহায় পথচারীদের বিনামূল্যে তিনি খাবার প্রদান করেন এবং শ্রমিক সহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে স্বল্প মূলে ১০/১৫/২০ টাকায় খাবার পরিবেশন করেন দরিদ্র হোটেল ব্যবসায়ী বিপ্লব সরকার। নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে বিপ্লব সরকারের কাছে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কথা জানতে চাইলে তিনি জানায়! বিপ্লব সরকার ছোটবেলায় স্কুলে কখনো কখনো টাকার অভাবে টিফিনে না খেয়ে খিদে নিয়ে স্কুলে অনেক কষ্টে সময় কাটিয়েছেন। কখনো বাবার কাছ থেকে নেয়া অল্প টাকায় অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে অসুস্থও হয়েছেন প্রায়ই। নিজের স্কুল জীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে এবং মানবিক সমাজ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অন্নপূর্ণ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে আরো কতদিন এভাবে চলবে গরীব ও অসহায় ছাত্রদের খাবারের ব্যবস্থা’ এমন প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব সরকার বলেন! আমার সাধ্যানুযায়ী সারাজীবন চেষ্টা করে যাবো, ছাত্রের সংখ্যা বেড়ে গেলে যেমন- দুই তিনশো ছাত্র যখন খাবারের জন্য আসে তখন আমার খুবই কষ্ট হয় খাবার প্রদান করতে। তবে আমাকে যদি কেউ সাহায্য করে তাহলে আমি আরো বেশি ছাত্রদের খাবার পরিবেশন করতে পারবো। তিনি আরো বলেন! দীর্ঘদিন যাবত আমাদের অন্নপূর্ণায় এভাবেই গরীব ছাত্রদের পাশাপাশি অসহায় মানুষদের খাবার প্রদান করে আসলেও নেই একটি পরিবেশ উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার। যা তৈরী করতে আনুমানিক পঞ্চাশ হাজার টাকা খচর হবে, তবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে করতে পারছিনা শৌচাগারটি। শৌচাগারটি তৈরী করতে পারলে আমাদের অন্নপূর্ণায় এই মুহুর্তে আর কিছুর প্রয়োজন নেই।
বিপ্লব সরকারের এমন উদার ও মানবিক মহৎকর্মে কেউ সাধুবাদ জানিয়ে সম্মাননা স্মারক প্রদান করলেও কোনো প্রকার সহায়তা প্রদান করেনি অন্নপূর্ণায়। স্থানীয় অর্থ সম্পদশালী কিংবা জনপ্রতিনিধি কেউ সহায়তার হাত বাড়ায়নি কখনো অন্নপূর্ণার দিকে, এমনটি জানিয়ে সমাজের সকল বিত্তশালীদের প্রতি উদার্ত আহবান জানিয়ে বিপ্লব সরকার বলেন। যাদের অবস্থা ভালো অর্থ বিত্তবান, তারা যদি গরীব অসহায়দের দিকে মানবিক হয় তাহলে সমাজে কেউ অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষার অভাববোধ করবেনা।
সম্প্রতি ইন্টারনেটে ইউটিউবের মাধ্যমে’ গ্রীন প্রোডাকশনের একটি ভিডিও চিত্রের প্রতিবেদনে নিম্নবিত্ত হোটেল ব্যবসায়ী বিপ্লব সরকারের সাক্ষাৎকার শোনেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরসভার মেয়র জনাব মোঃ তাকজিল খলিফা। পৌর মেয়র বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে স্থানীয় সাংসদ গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ আসনের দুই বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য জননেতা অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এম,পিকে অবিহিত করেন।
দরিদ্র হোটেল ব্যবসায়ী বিপ্লব সরকারের এমন মহৎ উদ্দেশ্যের প্রশংসা করেন আইনমন্ত্রী এবং পরিবেশ উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার তৈরীর জন্য “অন্নপূর্ণ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট” এর মালিক বিপ্লব সরকারকে উনার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকার নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন আইনমন্ত্রী জননেতা জনাব অ্যাডভোকট আনিসুল হক এম,পি।