মাতৃভূমির খবর ● ঢাকা ● ১ আগস্ট ২০২৫
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) ডিগ্রি স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অনিয়মের মাধ্যমে এই ডিগ্রি অর্জনের প্রমাণ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ২০ জুলাইয়ের এক বৈঠকে এ বিষয়ে গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীরের ভর্তি ফরমে নানা অসঙ্গতি রয়েছে এবং তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
কমিটি জানায়, ভর্তি ফরমের ক্রমিক নম্বর ৫৪-এ নীল কালি ব্যবহার করা হলেও শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত ঘরে কালো কালি দিয়ে নম্বর লেখা হয়, যা সন্দেহজনক। এছাড়া, ডিবিএ প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর থাকার শর্তও বেনজীর আহমেদ পূরণ করেননি।
সিন্ডিকেট সভায় এসব অনিয়ম বিস্তারিত আলোচনা শেষে বেনজীর আহমেদের ডিগ্রি সাময়িকভাবে স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভর্তির সময় যেসব ব্যক্তি ও দপ্তর এসব অনিয়মে জড়িত ছিলেন, তাদের দায় নিরূপণে পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। সদস্য হিসেবে রয়েছেন আইন অনুষদের ডিন, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রেজিস্ট্রার মুন্সী শামস উদ্দিন আহম্মদ।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বেনজীর আহমেদের ডিবিএ ডিগ্রি স্থগিত থাকবে। কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ডিবিএ ডিগ্রি অর্জনের পর বেনজীর আহমেদ নামের আগে ‘ডক্টর’ উপাধি ব্যবহার শুরু করেন। অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সুপারিশে মৌলিক শর্ত শিথিল করে তাকে এই ডিগ্রিতে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বেনজীরের এই প্রোগ্রামের তত্ত্বাবধায়কও ছিলেন।