ঢাকা , বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫ , ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

মৃত্যুর আগমুহূর্তে পাইলট তৌকিরের শেষ বার্তা

আপলোড সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০২:৩৫:৩২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০২:৩৫:৩২ অপরাহ্ন
মৃত্যুর আগমুহূর্তে পাইলট তৌকিরের শেষ বার্তা
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হওয়া যুদ্ধবিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিমানের পরিস্থিতি জানান দিচ্ছিলেন। মৃত্যুর আগমুহূর্তেও তিনি বলেছিলেন, বিমান ভাসছে না... মনে হচ্ছে নিচে পড়ছে।

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর সোয়া ১টার দিকে কুর্মিটোলা পুরাতন বিমানঘাঁটি থেকে একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে প্রথমবারের মতো একক উড্ডয়ন (সলো ফ্লাইট) করেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম। প্রশিক্ষণের এ ধাপটি বৈমানিকের দক্ষতার সবচেয়ে চূড়ান্ত ও জটিল ধাপ হিসেবে বিবেচিত।

উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি উত্তরা, দিয়াবাড়ি, বাড্ডা, হাতিরঝিল ও রামপুরা এলাকা অতিক্রম করে। এ সময় হঠাৎ করে বিমানটির নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দেয়। কন্ট্রোল রুমে বার্তা পাঠিয়ে তৌকির বলেন, বিমান ভাসছে না... মনে হচ্ছে নিচে পড়ছে।

তাৎক্ষণিকভাবে কন্ট্রোল রুম থেকে ইজেক্ট (বিমান থেকে বের হয়ে যাওয়া) করার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিমানটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যান। সর্বোচ্চ গতিতে তিনি বিমানটি বেসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মাত্র এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুল ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে।
 
জানা গেছে, ট্রেনিংয়ের এই সর্বশেষ ধাপে একজন বৈমানিককে সলো বা এককভাবে বিমান চালাতে হয়, যা তার স্কিল ও প্রস্তুতির সর্বোচ্চ পরীক্ষা।
 
যুদ্ধবিমান চালানোর জন্য একজন পাইলটের যে উচ্চ দক্ষতা দরকার, সেটিই প্রমাণিত হয় সলো ফ্লাইটের মাধ্যমে। ট্রেনিংয়ের এ পর্যায়ে পাইলটকে নেভিগেটর বা কো-পাইলট বা কোনো ধরনের ইনস্ট্রাক্টর ব্যতীত একাই ফ্লাইট অপারেট করতে হয়।   

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একাধিক সাবেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সলো ফ্লাইটের জন্য পাইলটকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ও দক্ষতার পরীক্ষা দিতে হয়। সাধারণত এ ধরনের ফ্লাইট শহরের আকাশেই পরিচালিত হয়ে থাকে, যদিও প্রশিক্ষণ ফ্লাইটগুলো সচরাচর জনবসতিপূর্ণ এলাকার বাইরে হয়।

তাদের মতে, পাইলট তৌকির ইসলাম ছিলেন একজন প্রতিশ্রুতিশীল এবং সাহসী বৈমানিক, যিনি শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে অটল ছিলেন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমানবাহিনী। 

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ