ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ , ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

যুদ্ধবিরতির পর প্রথম ভাষণে যা বললেন খামেনি

আপলোড সময় : ২৬-০৬-২০২৫ ০৭:১১:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৬-০৬-২০২৫ ০৭:৫১:২৭ অপরাহ্ন
যুদ্ধবিরতির পর প্রথম ভাষণে যা বললেন খামেনি
ইরান-ইসরায়েলের দুই সপ্তাহের টানা লড়াইয়ে উভয় পক্ষেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১২তম দিনে এসে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে এই সংঘাতের ইতি আসে। দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির পরেও গত দুইদিন নীরবে ছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। যুদ্ধবিরতির পর এবার প্রকাশ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। 

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে খামেনি ভাষণ দেন।  

তিনি বলেন, ইহুদিবাদী সরকারের (ইসরায়েলের) বিরুদ্ধে জয়ের জন্য আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। ইহুদিবাদীরা পরাজিত হয়েছে এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্রের ধাক্কায় চূর্ণবিচূর্ণ ও ধ্বংস হয়েছে। ইহুদিবাদীরা অনেক উচ্চবাচ্য করলেও ইরানের ধাক্কায় পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছিল।

যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে সম্পৃক্ততা নিয়ে তিনি বলেন, মার্কিন সরকার যুদ্ধে সরাসরি জড়িত হয়েছিল। কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল যদি হস্তক্ষেপ না করে তাহলে ইহুদিবাদীদের পতন ঘটবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন কোনো কিছু অর্জন করেনি।’

খামেনি বলেন, ‘এই যদ্ধে ইরান বিজয়ী হয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে চূড়ান্ত আঘাত করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ায় আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ইরানি জনগণের অসাধারণ ঐক্যকে আমি স্বাগত জানাই। ৯ কোটি জনগণের দেশ ইরান আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইরানিরা তাদের নিজেদের স্বতন্ত্র চরিত্র প্রদর্শন করেছে এবং প্রমাণ করেছে, যখন প্রয়োজন হবে তারা সবাই এক হবে।’

ইরানের বিরুদ্ধে যদি কেউ আবারও আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা করে তাহলে সেজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও হঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির এই সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, ‘ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের মূল্য চড়া হবে। ইহুদিবাদীরা (ইসরায়েল) কখনও ভাবেনি তারা ইরানের কাছ থেকে এমন ধাক্কা খাবে।’

খামেনি বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী শত্রুদের বহু স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে তাদের প্রাণকেন্দ্রগুলোতে আঘাত হেনেছে।’

ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ‘ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংস করে দেওয়ার যে দাবি করেছেন, সেটি সত্য নয়। আমাদের পারমাণবিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই অর্জন করতে পারেনি।’

হুঁশিয়ারি তিনি বলেন, ইরানিরা ঐক্যবদ্ধ। সবাই একত্রিত ছিল। কাতারের আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে যে হামলা হয়েছে, সেটিকে তারা উড়িয়ে দিয়েছে সত্যকে আড়াল করার জন্য। সময়ই শত্রুদের ক্ষয়ক্ষতি প্রকাশ করবে।

ইরান কখনও আত্মসমর্পণ করবে না জানিয়ে খামেনি বলেন, ট্রাম্প বলেছেন, ইরানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। ট্রাম্প সত্য প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইরান কেবল আত্মসমর্পণ করলেই যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট হবে। কিন্তু আত্মসমর্পণ কখনও হবে না। আমরা শক্তিশালী জাতি। ইরান মার্কিনিদের মুখে চপেটাঘাত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ছিল ইরানকে বশীভূত করা। ইরানিদের আত্মসমর্পণের কথা বলে মার্কিনিরা যেসব অপমান করেছে সেগুলো কখনও সফল হবে না। আমাদের জনগণ অসাধারণ। আমাদের দেশ শক্তিশালী এবং আমাদের সভ্যতা ইতিহাসের অংশ। আমাদের জনগণ বিজয়ী এবং সম্মানিত। তারা এরকমই থাকবে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এই অঞ্চলে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলো ইরানের নাগালে থাকা এবং যখনই প্রয়োজন তখনই এগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারাটা অনেক বড় বিষয়। ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। যদি কোনো আক্রমণ চালানো হয় তাহলে অবশ্যই শত্রুর অনেক বেশি ক্ষতি হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ