আপনার কি কখনও বসে থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ানোর পর মাথা ঘুরেছে? অথবা হঠাৎ করেই হাত-পায়ের আঙুল ঠান্ডা হয়ে যায়? যদি আপনার উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে সম্ভবত আপনি নিম্ন রক্তচাপে (লো ব্লাড প্রেশার) ভুগছেন।

রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেশার শরীরের জন্য এক ধরনের অদৃশ্য গার্ডের মতো কাজ করে। এটি যখন বেড়ে যায়, তখন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক সমস্যা হতে পারে, আবার যখন কমে যায়, তখনও শরীরে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হয়। তাই রক্তচাপ সবসময় স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা জরুরি।

স্বাভাবিক রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয় ১২০/৮০ এমএম এইচজি। তবে যদি রক্তচাপ ৯০/৬০ এমএম এইচজি-এর নিচে নেমে যায়, তখন তাকে নিম্ন রক্তচাপ (হাইপোটেনশন) বলা হয়, এবং এই অবস্থায় শরীরে নানা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।

নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণসমূহ

১. চোখে ঝাপসা দেখা
২. সারাক্ষণ ক্লান্তি ও দুর্বল লাগা
৩. মাথা ঘোরা বা অস্থির বোধ করা
৪. মনোযোগ দিতে সমস্যা হওয়া
৫. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া

এই লক্ষণগুলো দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, নাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। যারা এরই মধ্যে জানেন যে তাদের মাঝে মাঝে রক্তচাপ কমে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তারা এসময় কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন।

হঠাৎ রক্তচাপ নেমে গেলে যা করবেন

নিম্ন রক্তচাপ স্বাভাবিক করার ঘরোয়া উপায়
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডা. দীক্ষা ভাবসার তার ইনস্টাগ্রামে লো ব্লাড প্রেশার দ্রুত কমানোর একটি সহজ ও কার্যকরী উপায় শেয়ার করেছেন।

হিমালয়ান পিংক সল্ট ওয়াটার: রক্তচাপ কমে যাওয়ার পর, ১ গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ হিমালয়ান পিংক সল্ট (২.৪ গ্রাম) মিশিয়ে পান করুন। এটি রক্তচাপ দ্রুত স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।

কেন এই লবণ কাজ করে

১. হিমালয়ান সল্টে পটাশিয়াম ও অন্যান্য প্রাকৃতিক খনিজ থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রান্নার লবণের তুলনায় এতে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে, তাই এটি সোডিয়ামের মাত্রাও স্বাভাবিক রাখে।
২. এটি শরীরকে হাইড্রেট করে এবং হারানো ইলেকট্রোলাইটস পূরণ করে।
৩. হজমশক্তি বাড়ায় এবং টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
৪. শ্বাসকষ্ট বা বুকে কফ জমলে এটি উপকারি।

হিমালয়ান সল্টের স্বাদ সামান্য মিষ্টি-নোনতা, তাই এটি পানিতে মিশিয়ে খেতে কোনো সমস্যা হয় না। তবে, বাসায় এই বিশেষ লবণটি না থাকলে জরুরি পরিস্থিতিতে রান্নার লবণও ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও হিমালয়ান সল্ট ওয়াটার নিম্ন রক্তচাপে দ্রুত কার্যকরী, তবুও বারবার এই সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ লো ব্লাড প্রেশারের পেছনে অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে।

সূত্র: প্রেসওয়্যার ১৮