ঢাকা , সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫ , ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

নামের সঙ্গে ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ ব্যবহার কি জায়েজ?

আপলোড সময় : ১৫-০৬-২০২৫ ০৮:১০:১৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-০৬-২০২৫ ০৮:১০:১৭ অপরাহ্ন
নামের সঙ্গে ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ ব্যবহার কি জায়েজ?
হজ ইসলামের ফরজ বিধান। যে ঘরকে কেন্দ্র করে হজব্রত পালন করা হয়, তা পৃথিবীর প্রথম ঘর। এ ঘরের নির্মাতা মহান আল্লাহ। অর্থে স্বাবলম্বী ব্যক্তির জন্য কর্তব্য হজ পালন করা। হজ উপেক্ষা করলে ব্যক্তিজীবনের ধ্বংস অনিবার্য। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর নির্মিত হয়েছে, তা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারি। এতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে। যেমন মাকামে ইবরাহিম। যে সেখানে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ। মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশে সে ঘরের হজ করা তার অবশ্য কর্তব্য। আর কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৬-৯৭)

ইসলাম যে পাঁচটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলোর অন্যতম এ হজ। ভিত্তি ছাড়া যেমন সভ্য দুনিয়ার কোনো কিছু নির্মিত হয় না, তেমনি হজ ছাড়া নির্মিত হয় না মুমিন হৃদয়ে ভালোবাসার কাবাঘর। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পাঁচটি বিষয়ের ওপর। যথা—১. এই মর্মে সাক্ষ্যদান যে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই ও মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। ২. যথাযথভাবে নামাজ আদায় করা। ৩. জাকাত প্রদান। ৪. হজ। ৫. রমজান মাসের রোজা পালন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮)

হজ মানুষকে নিষ্পাপ করে। মানুষের গুনাহ মুছে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করল ও হজ অবস্থায় কথা ও কাজে পাপ থেকে বিরত রইল, সে হজ শেষে সেদিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে ঘরে ফিরবে, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫২১)

এই হজ পালনের পর অনেকেই নামের শুরুতে আলহাজ ও হাজি শব্দটি যুক্ত করেন। লোকে তাকে হাজি বা আলহাজ বলে ডাকে। হাজি হলো যিনি হজ করেছেন। আলহাজও তাই। সেক্ষেত্রে আরবি শব্দের শুরুতে প্রথমে ‘আলিফ লাফ’ যুক্ত করা হয়। 

হজ করা হয় শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। এখানে লোক দেখানো কিংবা অন্য উদ্দেশ্য থাকলে হজ কবুল হবে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ লোকদেখানো ইবাদত থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে, সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার প্রভুর ইবাদতে কাউকে অংশীদার না করে।’ (সুরা : কাহাফ, আয়াত : ১১০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) হজ করতেন আল্লাহর জন্য। সুনাম-সুখ্যাতি থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন তিনি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলতেন, ‘হে আল্লাহ তোমার উদ্দেশ্যে হজ করতে যাত্রা শুরু করলাম, কোনো মানুষের সুনাম-সুখ্যাতি যেন আমাদের উদ্দেশ্য না হয়।’ (ইবনু মাজাহ)

হজ যেহেতু আল্লাহর জন্য করতে হয়, তাই মানুষ হজ আদায়কারীকে হাজি বা আলহাজ বলল কি না, তা নিয়ে সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট থাকার কিছু নেই। হজ আদায়কারীর নামের সঙ্গে হাজি বা আলহাজ যুক্ত না করলে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা যাবে না। 

হাজি বা আলহাজ উপাধি পাওয়ার জন্য হজ করলে হজ কবুল হবে না। ইবাদতের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে। তবে কেউ যদি ব্যক্তিকে সম্মান জানিয়ে ও শ্রদ্ধা করে হাজি বা আলহাজ বলে ডাকেন, তাতে অসুবিধে নেই। 

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ