মোদিকে নেতানিয়াহুর ফোন, কী কথা হলো?
আপলোড সময় :
১৪-০৬-২০২৫ ১১:৩৭:০৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
১৪-০৬-২০২৫ ১১:৩৭:০৯ পূর্বাহ্ন
ইসরায়েলি হামলা পর পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইরান। একের পর এক হামলা আর পাল্টা হামলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ইরান-ইসরায়েলে। একই সঙ্গে বাড়ছে প্রাণহাণির সংখ্যা। এ অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত রাত থেকে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট বিশ্ব নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোন পেয়েছেন।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার খবরে আমি ‘উদ্বিগ্ন’। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আমাকে ফোনে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। আমি এই ইস্যুতে ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি এবং জোর দিয়েছি যে এই অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা জরুরি।
এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানিয়েছেন, আল্লাহর কসম, এই হামলার ফলাফল হবে গুরুতর এবং জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যাবে।
শুক্রবার (১৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বেশ কয়েকটি বার্তা এবং একটি ভিডিও পোস্ট করে এ কথা জানান তিনি।
আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ইরানের সামরিক বাহিনী সম্মুখ যুদ্ধে ইসরায়েলকে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। ইসরায়েলের প্রতি কোনো দয়া প্রদর্শন করা হবে না।
ভিডিওতে তিনি আরও বলেন, ইরানে হামলা করে জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী একটি বড় ভুল, গুরুতর অপরাধ এবং চরম বেপরোয়া আচরণ করেছে। জায়নবাদীদের হামলায় ইরানে যারা নিহত হয়েছেন তাদের রক্ত ইরানের জনগণ বৃথা যেতে দেবে না।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় বলেন, নিজেদের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশও সহ্য করবে না। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত। দেশের সর্বস্তরের মানুষ তাদের পাশে আছেন।
এদিকে গতকাল রাতে মোট তিন ধাপে হামলা চালায় ইরান। দেশটির মিসাইল হামলায় এক ইসরায়েলি নারী নিহত হয়েছেন।
ইরানের ছোড়া কয়েকটি মিসাইল সরাসরি ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেলআবিবে আঘাত হানে। প্রথম দুই দফার হামলায় অন্তত ৪১ জন আহত হন। তৃতীয় দফার হামলায় আহত হন আরও সাতজন।
ইসরাইলের পুলিশের বরাত দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের রামাত গান শহরে এক নারী নিহত হন। ইসরায়েলে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা শুরুর পর এটাই প্রথম কোনো ইসরায়েলি নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনা।
হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইরানের মিসাইলের আঘাতে প্রথমে গুরুতর আহন হন ওই নারী। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ইরানের হামলার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারি উড়োজাহাজ এথেন্সের বিমানবন্দরে দেখা গেছে। যা দেখে গুঞ্জন উঠেছৈ নেতানিয়াহু পালিয়ে গেছে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ফ্লাইট রাডার টুয়েন্টি ফোরের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের ব্যবহারকারীরা নেতানিয়াহুর উড়োজাহাজের ফ্লাইটের রুট, সময় এবং গ্রিসে শেষ অবতরণ ট্র্যাক করার দাবি করেছেন।
তাদের মতে, নেতানিয়াহুকে বহনকারী উড়োজাহাজ ‘উইং অফ জিওন’ আজ শুক্রবার বিকেলে এথেন্স বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
উড়োজাহাজটিতে নেতানিয়াহু কিংবা তার পরিবারের কেউ ছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নেতানিয়াহুর বর্তমান অবস্থান সম্পর্কেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি।
এ দিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা দাবি করেছে, তেহরানে হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অজ্ঞাত কোনো স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত ৮টি শহরে বড় ধরনের বিমান হামলা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী (আইএএফ)। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স