সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ পুলিশ, আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন সরকারি ও জনগুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে এসব ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
গত কয়েক বছরে সাইবার হ্যাকিংয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন হ্যাকার গ্রুপের হামলার শিকার হচ্ছে সরকারি ও গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটগুলো, যা নাগরিক সেবা ও রাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল গবেষক জাহিদ হোসাইন খান বলেন, "সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সব সেবা অনলাইনমুখি করার চেষ্টা করছে।"
বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, গত এক বছরে দেশে সাইবার অপরাধের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। মোট অপরাধের ১১.৮৫ শতাংশ সাইবার জগতে সংঘটিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ২০২২ সালে ইমেল/ফিশিং, মিডিয়া, ইমপারসনেশন, ডেটা চুরি, ওয়েবসাইট হ্যাকের মতো ঘটনায় বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী সরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ডেটা চুরির ঘটনা ২০২২ সালে ৭.২৫ শতাংশ হারে বেড়েছে।
বাংলাদেশে সরকারি বিভিন্ন সেবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। কম সময়ে, কম খরচে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে সরকারি সংস্থাসমূহ। পেপারলেস অফিস সংস্কৃতিকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, ফলে অনলাইনে পাসপোর্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন সনদ, লাইসেন্স নবায়নসহ বিভিন্ন আবেদন ও সেবা সহজেই পাওয়া যায়।
সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতর নাগরিকদের সেবা গ্রহণের পদ্ধতি সহজ করতে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ ও নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চালু করছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেবা প্রদানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু আছে। অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ, সার্ভিস ফি, ভ্যাট, অগ্রিম কর প্রদানের সুযোগ থাকায় সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটলে নাগরিক সেবা পেতে দেরি হয়। ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঘটনাও ঘটছে।
সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়নের সঙ্গে তাল মিলাতে না পারা এই সমস্যার মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি ওয়েবসাইটগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার এবং প্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয় সাধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন।